ফাইল চিত্র।
লিয়োনেল মেসির কথায়, প্যারিসে তিনি শুরু করতে চলেছেন একটা নতুন যুগের। এবং নতুন ক্লাব প্যারিস সাঁ জারমাঁয় তিনি বোনাস-সহ উপার্জন করবেন বছরে ৩০৫ কোটি টাকারও বেশি!
আর্জেন্টিনীয় কিংবদন্তিকে নিয়ে ফ্রান্সের রাজধানীতে এখন রীতিমতো উন্মাদনা চলছে। পিএসজিতে মেসি পরবেন ৩০ নম্বর জার্সি। যা ইতিমধ্যেই বাজারে বিক্রি করতে শুরু করেছে প্যারিসের ক্লাব। একটা জার্সির দাম ভারতীয় মুদ্রায় ১৪ হাজার ৪০০ টাকা। যা কিনতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকছে ফ্রান্সের ফুটবলপ্রেমী মানুষ। একইসঙ্গে গণমাধ্যমে পিএসজির অনুগামীর সংখ্যাও বাড়ছে হু হু করে। বুধবার একদিনে যা বেড়েছে ৩০ লক্ষ!
মেসির জন্য তাঁর ক্লাব প্যারিসে এখন বাড়ি খুঁজছে। যতদিন সেটা না পাওয়া যাচ্ছে, ততদিন প্রাক্তন বার্সা অধিনায়ক থাকবেন হোটেলে। যার প্রতি রাতের ভাড়াই ভারতীয় মুদ্রায় ১৭ লক্ষ ৫১ হাজার টাকা। বিভিন্ন সময়ে সংশ্লিষ্ট হোটেলে থেকেছেন বহু কিংবদন্তি। উইনস্টন চার্চিল, ওয়াল্ট ডিজনি থেকে রবার্ট নিরো— বাদ যাননি কার্যত কোনও মহাতারকাই। এমনকি নেমার দা সিলভা স্যান্টোস জুনিয়রও বার্সা থেকে এসে প্রথমে এই হোটেলেই ছিলেন। পরে অবশ্য ক্লাবের পছন্দ করে দেওয়া বাড়িতে উঠে যান।
প্যারিসের এই হোটেলেই রয়েছে ‘মাৎসুহিসা রেস্তরাঁ’। সেখানে জাপান বা পেরুর খাবারও পাওয়া যায়। আর একটা বড় ব্যাপার, হোটেল থেকে কার্যত গোটা প্যারিসই ছবির মতো দেখা যায়। কিংবদন্তি ফুটবলার সপরিবার এখানে বিনোদনের সবকিছুই পেয়ে যাচ্ছেন। শিল্প প্রদর্শনী থেকে গানবাজনার অনুষ্ঠান— কী হয় না এখানে! এমনকি মেসিকে পিএসজি দিচ্ছে ‘ক্রিপ্টোকারেন্সির’ সুবিধাও। যা এক ধরনের ‘ভার্চুয়াল’ মুদ্রা। ইন্টারনেটের মাধ্যমে যার লেনদেন শুধুই অনলাইনে করা যায়। এবং গোটা ব্যাপারটা খুবই সুরক্ষিত।
মেসির জন্য এমন রাজকীয় ব্যবস্থা করা হলেও একটা খবর কিন্তু চমকে দেওয়ার মতো। রিয়াল মাদ্রিদ থেকে এ বারই পিএসজিতে আসা তারকা-ডিফেন্ডার সের্খিয়ো র্যামোস চেয়েছিলেন, যতদিন না আর্জেন্টিনীয় তারকার জন্য স্থায়ী বাসস্থান খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে, ততদিন তিনি তাঁর বাড়িতেই থাকুন। সরাসরি মেসিকে সে প্রস্তাবও তিনি পাঠিয়েছিলেন। পিএসজির নতুন অতিথি নাকি সে প্রস্তাব গ্রহণ করেননি। মধ্য প্যারিসের অন্যতম অভিজাত হোটেলেই থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কে বলবে, স্পেনে খেলার সময় মেসি ও র্যামোস মাঠে বহুবার ঝামেলায় জড়িয়ে পড়তেন!
এ দিকে, মেসি তাঁর এক স্পেনীয় সাংবাদিক বন্ধুকে বলেছেন, ‘‘বার্সা যে আমাকে রাখবে না সেই খবরটা বাবা (হর্হে) আমাকে প্রথম দেন। আমি তখন আমার স্ত্রীকে (আন্তোনেলা রোকুস্সো) সেটা বলি এবং আমরা দু’জনই কাঁদতে শুরু করি।’’ যোগ করেন, ‘‘অথচ গত ডিসেম্বরেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম অন্য কোথাও যাব না। জানতাম সেটা করলে সব চেয়ে বেশি কষ্ট পাবে থিয়াগো।’’ যদিও এখন মেসির মনে হচ্ছে, তাঁর ছেলেরা দ্রুত সবকিছুর সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবে। ‘‘অপ্রত্যাশিত এই পরিস্থিতিতে আমরা ঠিক কী করব, তা ভেবেই পাচ্ছিলাম না। আর থিয়াগো অনেকটা আমার মতো। মুখ ফুটে কিছু বলে না। কিন্তু ভিতরে ভিতরে কষ্ট পায়। এমনিতে পরে আমাদের মনে হল, এটা বিরাট গুরুতর কিছু নয়। সবার মতো একটা সময় ও ঠিক সব কিছু মানিয়ে নেবে। তা ছাড়া এটা ওর কাছে একটা নতুন অভিজ্ঞতাও হতে যাচ্ছে, যা থিয়াগোকে পরিণত হতেই সাহায্য করবে,’’ বলেছেন মেসি।
মেসি স্বীকার করেছেন, বার্সার সিদ্ধান্ত জানার পরে তাঁরা কী করবেন ঠিক করতে পারছিলেন না। সে সময়টা মারাত্মক স্নায়ুর চাপেও ভুগেছেন।