ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের ইতিহাসে কি বৈপ্লবিক দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে আজকের দিনটি? উত্তর জানতে অপেক্ষা করতে হবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের দিকে। তবে, ইদানীং কালে বিসিসিআই-এর ইতিহাসে এ রকম আমূল পরিবর্তনকারী সুপারিশ সামনে আসেনি। ক্রিকেট দুর্নীতি রোধ করে বোর্ডের কাজকর্মে স্বচ্ছতা আনতে রিপোর্ট সোমবার পেশ করল লোঢা কমিটি। ১৫৯ পাতার রিপোর্টে সুপারিশে বেটিংকে আইনসম্মত করা ছাড়াও বোর্ডের পদাধিকারী হিসেবে রাজনীতিকদের দরজা বন্ধ হয়েছে। বোর্ড কর্তাদের পদে থাকার জন্য বয়সসীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র শীর্ষ স্তরেই নয়, বদলের সুপারিশ রয়েছে আঞ্চলিক স্তরের প্রশাসনেও। এ বার থেকে নির্বাচনে একটি রাজ্য থেকে কেবলমাত্র একটি ভোটের অধিকারই থাকবে। এ ছাড়া, তথ্য জানার অধিকার আইনে (আরটিআই)-র আওতায় আনা হয়েছে বোর্ডকে। এ দিনের রিপোর্টে স্পট ফিক্সিং কাণ্ডে ক্লিন চিট পেয়েছেন আইপিএল সিওও সুন্দর রমন।
আরও পড়ুন: বোর্ডের চেহারা বদলে দিতে পারে বৈপ্লবিক সুপারিশ
সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আর এম লোঢা, বিচারপতি অশোক ভান এবং অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আর ভি রবীন্দ্রনের দেওয়া এই রিপোর্টের সুপারিশে মান্যতা মিললে কর্পোরেট জগতের পেশাদারিত্ব আসবে ভারতীয় বোর্ডের অন্দরে— এমনটাই মত ওয়াকিবহাল মহলের।
দিল্লির তিনমূর্তি ভবনের অডিটোরিয়ামে সোমবার দুপুরে কমিটির রিপোর্ট পেশের পর এ দিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি লোঢা। তিনি জানিয়েছেন, বোর্ডের শীর্ষ কর্তা-সহ ক্রিকেটার এবং শেয়ারহোল্ডারদের সঙ্গে ৩৮টি মিটিং করেছেন তিনি।
ক্রিকেটে দূর্নীতি এড়াতে বেটিংয়ে বৈধতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, আইপিএলকে একটি ভিন্ন সংস্থা হিসেবে তৈরি করার কথা বলা হয়েছে। বোর্ড নয়, আইপিএল চালাতে গভর্নিং কাউন্সিল নামে একটি পরিচালন সমিতির হাতে সমস্ত অধিকার দেওয়া হবে বলেও সুপারিশ করা হয়েছে। নয় সদস্যের ওই কাউন্সিলের হাতে থাকবে আইপিএল সংক্রান্ত যাবতীয় ক্ষমতা। ২০১৩-র যে স্পট ফিক্সিং কাণ্ডে তোলপাড় হয়েছিল ক্রিকেট বিশ্ব, প্রমাণের অভাবে তা থেকে রেহাই মিলেছে আইপিএল সিওও সুন্দর রমনের।
পাশাপাশি, ক্রিকেট কর্তাদের কার্যকালের মেয়াদ বেঁধে দেওয়া হয়েছে ৭০ বছরে। এর আওতায় আসবেন বোর্ড সভাপতি, সহ-সভাপতি, কোষাধ্যক্ষ, সচিব, সহ-সচিব। ভারতের নাগরিকত্ব ছাড়া কোনও মন্ত্রী বা রাজনীতিক বোর্ডের কোনও পদে থাকতে পারবেন না বলেও সুপারিশ করা হয়েছে।