লিয়েন্ডার পেজ— ১২ বছর।
মহেশ ভূপতি— ১২ বছর।
সানিয়া মির্জা— ৯ বছর।
তিন ভারতীয় টেনিস আইকনের কলকাতার কোর্টে ফের নামতে চলার সময়ের ব্যবধান।
লি-হেশ শহরে শেষ খেলেছেন ২০০৩ ডেভিস কাপে। সাউথ ক্লাবে নিউজিল্যান্ড ম্যাচ। সানিয়া ২০০৬ সানফিস্ট ওপেনে। নেতাজি ইন্ডোরে।
সেই নেতাজি ইন্ডোরেই আগামী ২৫ নভেম্বর তিন জনই ফের র্যাকেট হাতে আবির্ভূত হবেন। সঙ্গে ড্যানিয়েলা হান্টুকোভা অথবা মার্টিনা হিঙ্গিসের মধ্যে যে কেউ। তবে প্রথম জনের সম্ভাবনাই বেশি। দ্বিতীয় জনের জন্য উদ্যোক্তারা প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। পাওয়া গেলে ‘নিশ্চিত’ কথা দেওয়া প্রথম জনকে বাতিল করে দেবেন বলেও ঠিক করে রেখেছেন। তবু এখনও যা খবর, রাজ্য ক্রীড়ামন্ত্রক এবং জয়দীপ মুখোপাধ্যায় টেনিস অ্যাকা়ডেমির (জামটা) যুগ্ম আয়োজনে শহরে এক ম্যাচের ‘ফান টেনিস’ হতে চলেছে সানিয়া-মহেশ বনাম হান্টুকোভা-লিয়েন্ডার মিক্সড ডাবলস। পূর্ণাঙ্গ তিন সেটের ম্যাচ। ৬-৬ হলে ‘বেস্ট অব সেভেন’ পয়েন্ট টাইব্রেকার।
যদিও ২০১৬ রিও অলিম্পিকের কথা ভেবে তার মাত্র নয় মাস আগে কেন সুযোগ পেয়েও সানিয়া-লিয়েন্ডার জুটি করার কথা ভাবলেন না আয়োজকরা, সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। কারণ, কার্যত অবসরপ্রাপ্ত মহেশের যেমন পরের বছর অলিম্পিকে খেলার কোনও সম্ভাবনা নেই, তেমনই মিক্সড ডাবলসে সানিয়া-লিয়েন্ডার জুটিরই ভারতের প্রতিনিধিত্ব করার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এক জন বিশ্বের এক নম্বর ডাবলস প্লেয়ার এবং অন্য জন ডাবলস-মিক্সড ডাবলস মিলিয়ে দেশের সর্বাধিক গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী। হতে পারে সানিয়া-মহেশ জুটি প্রাক্তন গ্র্যান্ড স্ল্যাম চ্যাম্পিয়ন (২০০৯ অস্ট্রেলীয় এবং ’১২ ফরাসি ওপেন) বলে শহরে তাঁদের জুটি নামানোর কথা ভাবা হচ্ছে। কিন্তু সে তো হান্টুকোভা-মহেশ জুটিও গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী (২০০৫ ইউএস ওপেন)। তবে এটা অভিনব যে, টেনিস-ব্রহ্মাণ্ডে কলকাতাই প্রথম দেখবে একই ম্যাচে লি-হেশ-সানিয়াকে লড়তে!
তবে একটা মাত্র মিক্সড ডাবলস ম্যাচ দেখতে বারো হাজারের নেতাজি ইন্ডোর ভরাতে শহরের টেনিসপ্রেমীরা কতটা আগ্রহী হবেন সেটা হয়তো মাথায় রেখে পাশাপাশি একগুচ্ছ অন্য টেনিস কার্যাবলীও রাখছেন আয়োজকরা। দুপুর আড়াইটেয় অনুষ্ঠানের শুরু লি-হেশ-সানিয়ার যৌথ এক ঘণ্টার টেনিস ক্লিনিক দিয়ে। বিটিএ এবং জামটার সেরা বারো টেনিস শিক্ষার্থী যার সুযোগ পাবে। তার পরে গোটাকয়েক গেমের এক প্রো সেলিব্রিটি টেনিস ম্যাচ। যাতে হয়তো নাসিরুদ্দিন শাহের মতো বলিউড তারকার সঙ্গে কলকাতা পুলিশ কমিশনার, শহরের এক জন নামজাদা চিকিৎসক, কোনও টলিউ়ড নায়ক ডাবলস খেলবেন। এর পরে লি-হেশ-সানিয়াকে রাজ্য সরকারের তরফে সংবর্ধিত করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সব শেষে লি-হেশ-সানিয়াদের খেলা।
সূত্রের খবর, ডিসেম্বরে টনি রোচের এক সপ্তাহের টেনিস ক্নিনিক যেমন জয়দীপ বাৎসরিক ইভেন্টে পরিণত করতে চলেছেন, তেমনই এই ফান টেনিসও প্রতি বছরের শেষে শহরে করার ইচ্ছে তাঁর। যদিও রোচের স্ত্রী বর্তমানে গুরুতর রোগে আক্রান্ত হওয়ায় হয়তো এ বছর এই কিংবদন্তি কোচ আসতে পারবেন না জামটায়। আবার নাদাল-ফে়ডেরারের মতো কিংবদন্তি প্লেয়ারের মধ্যে প্রদর্শনী ম্যাচ করার বিশাল খরচ বহন নিয়েও আশঙ্কিত জয়দীপ। যা শোনা যাচ্ছে, নভেম্বরে শহরে লি-হেশ-সানিয়ার অ্যাপিয়ারেন্স ফি-ই নাকি পৌনে এক কোটির কাছাকাছি!