আগমন: নতুন লড়াইয়ের জন্য ধর্মশালায় কোহালি, রোহিতরা। টুইটার
ঋষভ পন্থের প্রতিভায় মুগ্ধ প্রাক্তন দক্ষিণ আফ্রিকা অলরাউন্ডার লান্স ক্লুজনার। কিন্তু ভারতীয় উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান যে একেবারেই ধারাবাহিক নন, তা নিয়েও ওয়াকিবহাল তিনি। দিল্লির সীমিত ওভার দলের ব্যাটিং উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করার সময় ঋষভকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিজ্ঞতাও রয়েছে ক্লুজনারের। তিনি বুঝেছেন, পন্থের শট বাছাইয়ে সমস্যা রয়েছে। বলের মান অনুযায়ী খেলতে পারছেন না।
ঋষভের এই সমস্যার প্রভাব পড়ছে তাঁর ব্যাটিং গড়েও। ওয়ান ডে-তে তাঁর ব্যাটিং গড় ২২.৯০। টি-টোয়েন্টিতে ২১.৫৭ গড় তাঁর। ক্লুজনারের মত, শট বাছাইয়ের ক্ষেত্রে উন্নত হতে না পারলে প্রতিভার বিচার করতে পারবেন না ঋষভ। শুক্রবার ধর্মশালায় দক্ষিণ আফ্রিকার সীমিত ওভার দলের ব্যাটিং কোচ ক্লুজনার বলেন, ‘‘ঋষভের ভুল চিহ্নিত করা আমার পক্ষে সত্যি কঠিন। তবুও বলব, ওর মূল সমস্যা শট বাছাইয়ে। নিজেকে আরও সময় দেওয়া উচিত ঋষভের। এখন নিজের ভুল কিন্তু নিজেকেই বুঝতে হবে।’’
বহু বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা থেকেই ক্লুজনার জানিয়েছেন, অন্যের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে পন্থকে। ক্লুজনারের ব্যাখ্যা, ‘‘অন্যের ভুল বুঝতে পারলেই তো নিজে সেই ভুল আর করবে না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটাই কিন্তু একজনকে অনেকটা এগিয়ে দেয়। কারণ, নিজের ভুল বুঝে তা সংশোধন করতে অনেক বেশি সময় লাগে। অন্যের ভুল বার করতে পারলে সঠিক শিক্ষা নেওয়ার পদ্ধতিও সোজা। অনেক দ্রুত শেখা যায়।’’
১৯৯৯ বিশ্বকাপের ‘ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট’ মনে করেন, সিনিয়রদের থেকেও অনেক মূল্যবান পরামর্শ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে পন্থের কাছে। ক্লুজনারের কথায়, ‘‘মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ক্রিকেট জীবনের শেষের দিকে পন্থ ভারতীয় দলে সুযোগ পেয়েছে। ধোনির সংস্পর্ষে থাকলে এমনিতেই অনেক পরামর্শ পাবে। এ ছাড়াও অনেক অভিজ্ঞ কোচ এবং ক্রিকেটারকে ও পাশে পাচ্ছে। তাঁদের থেকে অনেক কিছু শিখতে পারবে। কিন্তু কখনওই নিজের স্বাভাবিক খেলা ভুললে চলবে না। মনে রাখতে হবে, ওর স্বাভাবিক খেলার ধরনেই কিন্তু মুগ্ধ ক্রিকেটবিশ্ব।’’
এক সময় বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার হিসেবে রাজ করেছেন ক্লুজনার। তার পরে দক্ষিণ আফ্রিকা পেয়েছে জাক কালিসের মতো কিংবদন্তিকে। ইংল্যান্ডের অ্যান্ড্রু ফিন্টফও ছিলেন কালিসের সমসাময়িক। বল হাতেও তাঁরা যে রকম ভয়ঙ্কর ছিলেন, ব্যাটিংয়েও তেমনই নির্ভর করে থাকত দল। কিন্তু বর্তমান অলরাউন্ডারদের মধ্যে সেই ভয়ঙ্কর রূপ চোখে না পড়ার কারণ কী? ক্লুজনারের বিশ্লেষণ, ‘‘এখন আর টেস্ট ক্রিকেটকে সে ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। আমরা অনেক বেশি টেস্ট খেলতাম। যেখানে দিনে ১৫ ওভারের বেশি বল করতে হত। ব্যাটিংয়েও দলকে ভাল জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের কাঁধেই এসে পড়ত। বেশি সময় ধরে বল ও ব্যাট করার ফল পেয়েছি।’’ কিন্তু এখন তা হচ্ছে না কেন? ‘‘এখনকার অলরাউন্ডারেরা টেস্ট বেশি খেলে না। যত বেশি টেস্ট খেলবে, তত বেশি উন্নতি করার সুযোগ পাবে।’’
দিল্লির ব্যাটিং উপদেষ্টা হিসেবে আসন্ন সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে তাঁকে কি আদৌ দেখা যাবে? ক্লুজনার বলে গেলেন, ‘‘দেখা যাক! আসলে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে একটি দলের ব্যাটিং কোচ হিসেবে কাজ করছি। যা দেখা যাচ্ছে, মুস্তাক আলি চলাকালীন বিপিএল শুরু হবে। তাই এ বার আসতে পারব কি না ভেবে দেখতে হবে।’’