ফিরে-দেখা: বিরাটদের কোচ হিসেবে অবদান রেখে খুশি কুম্বলে।
অধিনায়ক বিরাট কোহালির সঙ্গে বনিবনা না হওয়ার জেরে ভারতীয় দলের কোচের পদ থেকে সরে যেতে হয়েছিল তাঁকে। কিংবদন্তি অনিল কুম্বলে মুখ খুললেন সেই বিতর্কিত পর্ব নিয়ে। জানিয়ে দিলেন, কোচিংয়ের ভূমিকা দারুণ উপভোগ করলেও শেষটা অন্য রকম হতেই পারত।
জ়িম্বাবোয়ের প্রাক্তন ক্রিকেটার পমি বাঙ্গোয়ার সঙ্গে ইনস্টাগ্রাম লাইভে কুম্বলে বলেছেন, ‘‘আমি খুব খুশি হয়েছিলাম কোচের দায়িত্ব নিয়ে। দারুণ গিয়েছিল একটা বছর। খুবই উপভোগ করেছিলাম। দুর্দান্ত সব ক্রিকেটার রয়েছে দলে। তাদের সঙ্গে থাকতে পেরে এবং আবার ভারতীয় ড্রেসিংরুমের অংশ হতে পারাটা সত্যিই দুর্লভ ছিল।’’
পমির সঙ্গে কথোপকথনে কুম্বলে যোগ করেন, ‘‘আমরা সেই এক বছরে খুব ভাল খেলেছিলাম। অবদান রাখতে পেরে আমি খুব খুশি হয়েছিলাম। কোনও আফসোস নেই।’’ এর পরেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমি জানি শেষটা আরও ভাল হতে পারত, কিন্তু ঠিক আছে। আমার কোনও আক্ষেপ নেই আর জীবনও এগিয়ে গিয়েছে।’’
কোহালিদের কোচ হিসেবে কুম্বলের যাত্রা শেষ হয় ২০১৭ সালে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ফাইনালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হারের পরেই কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। অধিনায়ক কোহালির সঙ্গে মতপার্থক্যে জড়িয়ে পড়াই তাঁর সরে যাওয়ার কারণ হিসেবে দেখা হয়।
সেই সময়ে ইস্তফা দিয়ে কুম্বলে নিজেও টুইটারে লিখেছিলেন, তাঁর কাজের ধরনে অধিনায়কের সায় নেই বলেই সরে যেতে হচ্ছে। দু’জনের সম্পর্ক খুবই তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল এবং গোটা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি কোচ বনাম অধিনায়ক বিতর্ক চালু ছিল।
কুম্বলে অবশ্য পুরনো ঘটনা নিয়ে খুব নাড়াচাড়া করতে চান না। বলে দিচ্ছেন, ‘‘কোচ হিসেবে বুঝতেই পারা যায়, কখন বেরিয়ে আসতে হবে। কোচকেই বেরিয়ে আসতে হয়। কিন্তু আমি খুব খুশি যে, সেই এক বছরে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পেরেছিলাম।’’ কুম্বলে টুইটারে অধিনায়কের সঙ্গে মতপার্থক্যের কথা বললেও কোহালি এখনও পর্যন্ত কুম্বলেকে নিয়ে কোনও বিবৃতি দেননি যে, কেন তাঁকে নিয়ে চলতে অসুবিধা হচ্ছিল। তবে ওয়াকিবহাল মহলের মত, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়-গ্রেগ চ্যাপেলের মতো এ ক্ষেত্রেও ব্যক্তিত্ব সঙ্ঘাত চরমে উঠেছিল।
আরও পড়ুন: পিএসজি ছাড়ছেন না এমবাপে
এখন অবশ্য কোচের ভূমিকায় প্রত্যাবর্তন ঘটছে কুম্বলের। আইপিএলে কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের দায়িত্বে তিনি। তবে ক্রিকেটজীবনের কথা স্মরণ করে জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে যখন মুথাইয়া মুরলীধরন অথবা শেন ওয়ার্নের তুলনা করা হত, তখন খুবই অপ্রস্তুত হয়ে পড়তেন। তাঁর কথায়, ‘‘ওদের দু’জনের থেকেই অনেক কিছু শিখেছি। বিশ্বের যে কোনও পিচে বল ঘোরানোর ক্ষমতা ছিল ওদের। তাই ওয়ার্ন আর মুরলীর সঙ্গে নিজের তুলনা শুনলে বেশ ঘাবড়েই যেতাম।’’ যোগ করেন, ‘‘মুরলীর সঙ্গে বেশি কথা হত, কারণ ভারত-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ অনেক বেশি হত। বেশির ভাগ সময়ই একে অপরকে অভিনন্দন জানাতাম। কোনও ম্যাচে আমি হয়তো মাইলফলক ছুঁয়েছি। মুরলী হয়তো ওর পরের মাইলফলক ছোঁয়ার চেয়ে ৩০ উইকেট পিছিয়ে। আমি ঠাট্টা করে বলতাম, আর তো মাত্র তিনটি ম্যাচ লাগবে তোমার তিরিশ উইকেট তুলতে। এ ভাবেই চলত আমাদের বাক্যালাপ।’’
ওয়ার্ন, মুরলী ও কুম্বলের মধ্যে মধুর সম্পর্ক ছিল। ভারতের কিংবদন্তি লেগস্পিনার বলছেন, ‘‘আমরা তিন জনেই একে অন্যের সাফল্যকে সম্মান করতাম। খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল আমাদের মধ্যে।’’