কুলদীপ যাদব।
আইপিএল খেলেই তাঁর ভারতীয় ক্রিকেটে প্রতিষ্ঠা পাওয়া। কলকাতা নাইট রাইডার্সের জার্সিতে অনেক সুখস্মৃতি আছে কুলদীপ যাদবের। পাশাপাশি যন্ত্রণাতেও বিদ্ধ হয়েছেন কখনও, কখনও। সে রকমই একটা দুঃসহ যন্ত্রণার স্মৃতি দু’বছর আগে ইডেনে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের কাছে হার। যেখানে রশিদ খানের তাণ্ডবের সামনে থেমে গিয়েছিল নাইটদের অভিযান।
যে হারের স্মৃতি এখনও ভুলতে পারেননি কুলদীপ। কেকেআরের ওয়েবসাইটে এই চায়নাম্যান বোলার বলেছেন, ‘‘২০১৮ সালের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ইডেনে। আমার স্পেল শেষ হয়ে যাওয়ায় মাঠ থেকে উঠে যাই। ওদের রান তখন ১২৫ মতো ছিল। আমি ভেবেছিলাম, ১৪৫ রানের বেশি করতে পারবে না।’’
ভুল ভেবেছিলেন কুলদীপ। এর পরেই শুরু হয় আফগানিস্তানের লেগস্পিনার রশিদ খানের তাণ্ডব। ব্যাট হাতে তিনি তছনছ করে দেন নাইটদের বোলিং। সে দিন মাত্র ১০ বলে রশিদ করেছিলেন ৩৪ রান। হায়দরাবাদ তুলেছিল ১৭৪ রান। নাইটরা থেমে যায় ১৬০ রানে। কুলদীপের স্মৃতিচারণ, ‘‘ব্যাট হাতে নেমে রশিদ খেলাটাকে পুরো ঘুরিয়ে দেয়। ওই ম্যাচটা জিতে গেলেই আমরা ফাইনালে উঠে যাই। ইডেনে ওই ভাবে হেরে আমরা খুব যন্ত্রণা পেয়েছিলাম।’’
কুলদীপ মনে করেন, এই বছর যদি ঠিকমতো দল নামানো যায়, তা হলে তাঁদের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ভাল সম্ভাবনা আছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমি ভেবেছিলাম, গত বছরও আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে পারব। এ বারও আমাদের ভাল আশা আছে। ক্রিকেটে একটা সময় তো আমরা জিতবই।’’
আবু ধাবিতে নেট প্র্যাক্টিস শুরু হওয়ার পরে নিজেদের মধ্যে একটা ছোট ‘গেট টুগেদার’ও করেন কেকেআরের ক্রিকেটাররা। যেখানে ছিলেন কুলদীপ, নীতীশ রানারা। কেকেআরের পোস্ট করা ভিডিয়োয় কুলদীপ বলেছেন, ‘‘অনেক দিন পরে একসঙ্গে বসে আড্ডা মারতে পেরে ভাল লাগছে। স্বাভাবিক জীবনের মতো মনে হচ্ছে। নেটে আমরা নিজেদের মধ্যে কথা বলি ঠিকই। কিন্তু এ রকম আড্ডায় ক্রিকেটের বাইরেও অনেক কথা হয়।’’
নীতীশ বলেছেন, ‘‘প্রায় পাঁচ-ছয় মাস পরে এ রকম ভাবে সবার সঙ্গে বসলাম। সাত-আট দিন ধরে এই দিনটার অপেক্ষায় ছিলাম। মনে হচ্ছিল, কবে সেই গত বছরের মতো আমরা একটা পরিবার হয়ে আড্ডা দেব। খুবই ভাল লাগল।’’ দলের সহকারী কোচ অভিষেক নায়ারের মন্তব্য, ‘‘কোভিড অতিমারি আমাদের মানসিক ভাবেও খুব ধাক্কা দিয়ে গিয়েছে। আজ আমরা একসঙ্গে বসে আড্ডা দিচ্ছি, হাসছি, গল্প করছি। সবার মধ্যে একটা স্বস্তির ভাব দেখা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে আবার যেন সেই স্বাভাবিক জীবনের আঁচ পেলাম।’’
কেকেআরের ব্যাটিংয়ে এখন অন্যতম ভরসা নীতীশ। অনেকেই তাঁকে দলের ম্যাচউইনার বলে মনে করেন। সেই নীতীশের মুখে শোনা যাচ্ছে কেকেআরের এক প্রাক্তন অধিনায়কের কথা। তিনি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। নীতীশের মন্তব্য, ‘‘ছোটবেলায় লোকে বলত, আমি নাকি বড়, বড় ক্রিকেটারদের অ্যাকশন নকল করতে পারি। প্রায়ই শুনতে হত, ‘দাদাকে (সৌরভ) নকল করো, দাদাকে নকল করো।’ আমিও তাই করতাম। ছোটবেলা থেকেই সৌরভের ব্যাটিং স্টাইল নকল করতাম। যে ছাপটা আমার ব্যাটিংয়ে রয়ে গিয়েছে।’’
তবে পরবর্তীকালে তিনি যে গৌতম গম্ভীরকে আদর্শ করে এগিয়েছেন, সেটা বলেছেন দিল্লির এই বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান। নীতীশের কথায়, ‘‘ক্লাবে খুব কাছ থেকে আমি গম্ভীরের ব্যাটিং দেখেছি। তাই ওর ব্যাটিং থেকে অনেক কিছু শিখতে পেরেছি।’’