জুটি: দুই স্পিনার কুলদীপ ও পীযূষের ফর্মে খুশি কালিস। নিজস্ব চিত্র
দুটো দুরন্ত জয় ফের আমাদের ছন্দে ফিরিয়ে এনেছে। তবে টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে কখনই বল থেকে চোখ সরানোর ভুল করা যায় না। সেটা আক্ষরিক অর্থেই বলি বা আলঙ্কারিক অর্থে। শনিবার আমাদের আরও এক বার জয়ের জন্য সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাতে হবে ছন্দে থাকা কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের বিরুদ্ধে। এই ম্যাচটার পরে আমাদের আইপিএলে এক সপ্তাহ ছুটি (কেকেআরের পরের ম্যাচ ২৭ এপ্রিল দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের বিরুদ্ধে)।
মরসুমের এই সময়টা আমার খুব প্রিয়। আমার লেখার নিয়মিত পাঠকরা জানেন, এই সময়েই আয়োজিত হয় কেকেআরের বার্ষিক গল্ফ দিবস। সবাই জানেন, আমি গল্ফ কী রকম উপভোগ করি। তবে শুধু ছোট একটা বল কত কম শটে লক্ষ্যে পাঠানো যায়, সেই প্রতিযোগিতার চেয়েও এই দিনটা আরও বেশি কিছু। এই দিনটায় আমাদের যারা সমর্থন করে আসছেন তাদের ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি আমরা চেষ্টা করি যত জন সম্ভব সাহায্যপ্রার্থী মানুষের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার।
ক্রিকেটের কথায় ফিরে আসি। আন্দ্রে রাসেল এখন দুরন্ত ছন্দে রয়েছে। ক্রিকেট বলকে এখন হয়তো ও ফুটবলের মতো দেখছে। দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের বিরুদ্ধে কী অসাধারণ ইনিংসটাই না খেলল রাসেল। আমরা যখন ওই ম্যাচটায় বিপক্ষের জন্য ১৭৫ থেকে ১৮০ রান লক্ষ্য রাখার দিকে এগোচ্ছি, তখন রাসেল নামল। ১১টা বল খেলে তার মধ্যে ছ’টাই ছক্কা হাঁকাল। ১২ নম্বর বলে আউট। দুরন্ত। সত্যিই দুরন্ত ইনিংস।
চলতি মরসুমে আমাদের এখনও পর্যন্ত যা পারফরম্যান্স তাতে একটা জিনিস আমায় দারুণ তৃপ্তি দিচ্ছে। সেটা হল দলের জয়ের নেপথ্যে কত জন ক্রিকেটার অবদান রাখতে পারছে। আমরা কিন্তু জয়ের জন্য দলের নির্দিষ্ট কয়েক জন ক্রিকেটারের ভরসায় থাকা দল নই। অবশ্য এই কথাটা বলার পাশাপাশি এটাও লক্ষ্য করার মতো ব্যাপার যে, আমাদের দলের কয়েক জন ক্রিকেটার ধারাবাহিক ভাবে পারফর্ম করেই চলেছে। যেমন সুনীল নারাইন। ব্যাট আর বলে অনবদ্য ফর্মে রয়েছে ও। যাঁরা নিয়মিত নারাইনকে দেখেছে, তাঁরাই জানে নিজের বোলিং অ্যাকশন পাল্টানো এবং একই সঙ্গে কার্যকরী রাখার জন্য কী পরিশ্রমটাই না ও করেছে। আমার মনে হয় সুনীল এখন সেরা ফর্মের মধ্যে রয়েছে।
পাশাপাশি আমরা ভাগ্যবান টুর্নামেন্টের সেরা তিন স্পিনার আমাদের দলে রয়েছে। টুর্নামেন্ট কেন, বিশ্বের সেরা স্পিনার বলা উচিত। কুলদীপ যাদব আর পীযূষ চাওলা একাই ম্যাচ জিতিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। সেটা ওরা আগে অনেক বারই প্রমাণ করে দিয়েছে। পাশাপাশি নীতীশ রানা যখন দলের প্রয়োজন সেই সময়ে গুরুত্বপূর্ণ রান তুলে নিয়ে দলের জয়ে অবদান রাখছে। এই ব্যাপারটা দেখেও আমি খুব খুশি।
সবশেষে ধন্যবাদ দেব দীনেশ কার্তিককে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব নেওয়ার পরে ওর কঠোর পরিশ্রম আর দায়িত্ববোধের জন্য। ডিকে রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে অধিনায়ক এবং ব্যাটসম্যান দুটো ভূমিকাই দারুণ ভাবে পালন করেছে। ও জানে দলের সব ক্রিকেটার এবং সাপোর্ট স্টাফের একশো শতাংশ সমর্থন ওর সঙ্গে আছে।
অনেকেই আমাকে বলেছেন, ছন্দে থাকার দিক থেকে কিংস ইলেভেন এই মুহূর্তে সবচেয়ে ভাল দল। গেল দুরন্ত খেলছে। অশ্বিনও নিখুঁত অধিনায়কত্ব করছে। তবে কলকাতা নাইট রাইডার্সের ছন্দও এই মুহূর্তে খুব একটা খারাপ বলে আমার মনে হয় না। তাই শনিবারের ম্যাচটা জমে যাবে বলেই মনে হচ্ছে।