সমতলে বাগানের কাঁটা তোলার বড় পরীক্ষা কিবুর

প্রশ্ন শুনে গম্ভীর হয়ে যান ময়দানে এক সময় দাপিয়ে খেলা ব্রাজিলিয়ান মিডিয়ো। তারপরে মুখে চতুর একটা হাসি ছড়িয়ে ট্রাউ কোচ বলে দেন, ‘‘ফুটবলার আর কোচের কাজটা সম্পূর্ণ আলাদা। তবে জিততে না পারি, হেরে ফিরতে চাই না।’’

Advertisement

রতন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:১৪
Share:

মহড়া: যুবভারতী সংলগ্ন মাঠে প্রস্তুতি মোরান্তেদের। নিজস্ব চিত্র

ফুটবলার জীবনে লাল-হলুদ জার্সিতে ডগলাস দ্য সিলভা যতদিন খেলেছেন, কোনওদিন ডার্বিতে হারেননি। সেই রেকর্ড আজ, বুধবার কল্যাণীতে অক্ষত রাখতে পারবেন মোহনবাগানের বিরুদ্ধে?

Advertisement

প্রশ্ন শুনে গম্ভীর হয়ে যান ময়দানে এক সময় দাপিয়ে খেলা ব্রাজিলিয়ান মিডিয়ো। তারপরে মুখে চতুর একটা হাসি ছড়িয়ে ট্রাউ কোচ বলে দেন, ‘‘ফুটবলার আর কোচের কাজটা সম্পূর্ণ আলাদা। তবে জিততে না পারি, হেরে ফিরতে চাই না।’’

ইম্ফল বিমানবন্দর থেকে শহরের দিকে যে রাস্তাটা চলে গিয়েছে, তার নাম টিডিয়াম রোড। সেই রাস্তার নামেই ডগলাসের কোচিংয়ে থাকা ক্লাবের নাম টিডিয়াম রোড আ্যাথলেটিক্স ইউনিয়ন ফুটবল ক্লাব। সংক্ষেপে ট্রাউ। সেই রাস্তা পেরিয়েই আজ জয়ের সরণিতে উঠতে মরিয়া কিবু ভিকুনার মোহনবাগান। প্রথম দু’ম্যাচে জয় নেই। পড়শি ইস্টবেঙ্গল পাহাড়ে উঠে পেয়ে গিয়েছে জয়ের স্বাদ। এই অবস্থায় তীব্র চাপে পড়ে গিয়েছেন সবুজ-মেরুনের স্পেনীয় কোচ। ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে সকালের অনুশীলনের বেশির ভাগ সময়টা কিবু মাঠেই ছোট ছোট সভা করেন। কখনও জোসেবা বেইতিয়া, খুয়ান কলিনাসদের সঙ্গে আলোচনা করলেন, কখনও তাঁকে দেখা গেল ফ্রান মোরান্তে, গুরজিন্দার সিংহদের পরামর্শ দিতে। সালভা চামোরোকে ছেড়ে দিচ্ছে মোহনবাগান। তাঁকে নিয়ে অবশ্য তেমন উৎসাহ দেখাননি কেউই। তবে গোলকিপারদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলতে দেখা গিয়েছে ক্লাব কর্তা ও প্রাক্তন ফুটবলার সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে। এ ছাড়া অনুশীলন শুরুর আগে ট্রাউয়ের খেলার ভিডিয়ো দেখিয়ে আলাদা ক্লাস নিয়েছেন কিবু। সূত্রের খবর, দু’টো জায়গায় পরিবর্তন হতে পারে। গোলে খেলতে পারেন শঙ্কর রায় আর মাঝমাঠে জেসুরাজ।

Advertisement

কিন্তু তাতেও কী ঘুরে দাঁড়াতে পারবে মোহনবাগান? আই লিগের দ্বিতীয় ডিভিশনে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার প্রধান কারিগর দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা প্রিন্স ওয়েল এমেকাকে কি থামাতে পারবেন ড্যানিয়েল সাইরাস? ডগলাসের স্বদেশীয় স্ট্রাইকার মার্সেল সেক্রামেতোর শক্তির সঙ্গে কি পাল্লা দিতে পারবে সবুজ-মেরুন রক্ষণ? প্রশ্ন শুনলে কিবুর মুখ থেকে বেরোয়, ‘‘রক্ষণ এবং আক্রমণ, দুই জায়গাতেই উন্নতি করতে হবে। বল পজেশন, গোলের সুযোগ সব বেশি পেয়েও জিততে পারছি না। আসলে গোলটাই হচ্ছে না।’’ হাসিখুশি কোচের কপালে চিন্তার বলিরেখা। তাঁর ভবিষ্যৎ নিয়েই যে সঙ্কট! পরপর ম্যাচ থাকায় ডার্বি পর্যন্ত কিবুকে সরানোর কথা ভাবছেন না কর্তারা। তবে ট্রাউকে হারাতে পারলে বাঁচার জিয়নকাঠি পেতে পারেন বেইতিয়াদের কোচ। সে জন্যই পজিশন ধরে ধরে ফুটবলারদের বোঝাচ্ছেন তিনি।

মণিপুরের দলটিতে চার বঙ্গ সন্তান আছেন। তন্ময় ঘোষ, অবিনাশ রুইদাশ, সায়ন রায় এবং অভিষেক দাশ। বাংলার মাঠে তাঁদের অবেগকে কতটা কাজে লাগাবেন, সেটা ডগলাসই জানেন। তবে আই লিগে প্রথম বার কোচিং করতে নামা ট্রাউ কোচ যে রক্ষণ জমাট করে দল নামাবেন, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। ‘‘তিন পয়েন্ট না পেলেও এক পয়েন্ট পেলেই আমি খুশি,’’ বলেছেন ডগলাস। আর সেটা জানেন বলেই এ দিনের অনুশীলনে সেটপিস অনুশীলন করিয়েছেন মোহনবাগান কোচ। বিপক্ষের রক্ষণ ভাঙতে উইং প্লে-র উপর জোর দিচ্ছেন কিবু। বলেছেন, ‘‘চ্যাম্পিয়ন হয়তো একটা দলই হয়। কিন্তু গোল করলে ম্যাচ জেতা যায়। সেটাই বোঝাচ্ছি সবাইকে।’’

ডগলাসের ফুটবলার জীবনের রেকর্ড ভাঙতে না পারলে যে মোহনগানে কিবুর কোচিং জীবনে সংক্ষিপ্ত হবে তা কর্তারা তাঁকে বুঝিয়ে দিয়েছেন দু’তিন বার বৈঠক করে!

আই লিগে আজ: মোহনবাগান বনাম ট্রাউ (বিকেল ৫.০০, কল্যাণী। সম্প্রচার ‘ডি’ স্পোর্টস চ্যানেলে)।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement