আকর্ষণ: সোমবার অনুশীলনে মোহনবাগানের পাপা। নিজস্ব চিত্র
কাশ্মীরের ঠান্ডা নিয়ে আতঙ্কের আবহে সবুজ-মেরুন শিবিরে স্বস্তি দিলেন পাপা বাবাকর জিওয়াহা। প্রথম দিন মাঠে নেমেই কোচ কিবু ভিকুনার নজর কেড়ে নিলেন মোহনবাগানের নতুন বিদেশি স্ট্রাইকার।
সালভা চামোরোর পরিবর্তে ৩১ বছর বয়সি সেনেগালের পাপাকে সই করিয়েছে মোহনবাগান। বৃহস্পতিবারই কলকাতায় চলে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু বড়দিনের ছুটি থাকায় মাঠে নামেননি। সোমবার দুপুরে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন সংলগ্ন মাঠে পাপাকে দেখতেই ভিড় করেছিলেন সবুজ-মেরুন সমর্থকেরা। চব্বিশ ঘণ্টা আগে খেলতে খেলতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মাঠেই প্রয়াত ফুটবলার রাধাকৃষ্ণন ধনরাজনকে শ্রদ্ধা জানিয়ে অনুশীলনে নামেন মোহনবাগানের ফুটবলারেরা।
শুরু থেকেই আকর্ষণের কেন্দ্রে পাপা। লা লিগায় খেতাফে, লেভন্তে, সেভিয়ার মতো ক্লাবে খেলে আসা এই স্ট্রাইকার প্রথম দিনই মন জয় করলেন সমর্থকদের। কখনও বল ধরেই বিদ্যুৎ গতিতে ঘুরে গোল করলেন। কখনও আবার গোলার মতো শটে বল জালে জড়িয়ে দিলেন পাপা। পাশাপাশি সতীর্থদের দিয়ে গোলও করিয়েছেন।
আগামী ৫ জানুয়ারি শ্রীনগরে রিয়াল কাশ্মীরের বিরুদ্ধে পাপা-ই যে তাঁর অন্যতম সেরা অস্ত্র হতে চলেছেন, বুঝিয়ে দিয়েছেন কিবু। কারণ, বড়দিনের ছুটি শুরু হওয়ার আগে একেবারেই স্বস্তিতে ছিলেন না স্পেনীয় কোচ। মহমেডানের বিরুদ্ধে প্রস্তুতিতে ম্যাচে ০-২ পিছিয়ে পড়া ম্যাচে কোনও মতে হার বাঁচিয়েছিল মোহনবাগান। পাপাকে দেখে অনেকটাই দুশ্চিন্তামুক্ত কিবু। অনুশীলনের পরে বললেন, ‘‘দুর্দান্ত গোল করল পাপা। ওর দক্ষতা আপনারাই তো দেখলেন। বলের উপরে নিয়ন্ত্রণ ও খেলার ধরন প্রথম দিনেই নজর কেড়েছে।’’ এর পরেই মোহনবাগান কোচ যোগ করেন, ‘‘তবে এখনও ম্যাচ ফিট নয় পাপা।’’
পাপা অবশ্য ভিকুনার অপরিচিত নন। ২০১২-১৩ মরসুমে পোলান্ডের লিগা ওয়ারসতে সহকারী কোচ ছিলেন ভিকুনা। সেই সময় পাপা খেলতেন পর্তুগালের মারিতিমোতে। কিবু বলছিলেন, ‘‘পাপা অসাধারণ ফুটবলার। অনেক চেষ্টা করেছিলাম ওয়ারসতে ওকে নেওয়ার। কিন্তু পারিনি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সালভা চামোরোর বিকল্প হিসেবে প্রথম পছন্দ ছিল পাপা। কাশ্মীরেও নিয়ে যাব ওকে। আশা করছি, এ বার স্ট্রাইকার সমস্যা মিটবে।’’
প্রস্তুতি: মাঠে নেমে পড়লেন কোলাদো। নিজস্ব চিত্র
চার ম্যাচে আট পয়েন্ট নিয়ে আই লিগ টেবলের শীর্ষে এখন ইস্টবেঙ্গল। এক ম্যাচ বেশি খেলে আট পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে পঞ্জাব এফসি। তৃতীয় স্থানে থাকা মোহনবাগানের চার ম্যাচে সাত পয়েন্ট। মোহনবাগান কোচ অবশ্য এই মুহূর্তে পয়েন্ট টেবলের অবস্থান নিয়ে ভাবছেন না। তিনি উদ্বিগ্ন শ্রীনগরের আবহাওয়া ও মাঠ নিয়ে। বললেন, ‘‘শুনেছি খুব ঠান্ডা। তবে আমাকে সব চেয়ে বেশি ভাবাচ্ছে ওখানকার কৃত্রিম ঘাসের মাঠ। শুনেছি, আয়তনেও মাঠটা কিছুটা ছোট।’’
চার্চিল ব্রাদার্সের বিরুদ্ধে খেলতে গোয়া রওনা হওয়ার পাঁচ দিন আগে ইস্টবেঙ্গল কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস গার্সিয়াও ফুরফুরে মেজাজে। কারণ, বোরখা গোমেস পেরেস ম্যাচ খেলার জন্য তৈরি। সোমবার সকালে যুবভারতী সংলগ্ন মাঠে অনুশীলন ম্যাচে দুর্দান্ত খেললেন স্পেনীয় ডিফেন্ডার। দুই, আগের ম্যাচে ইন্ডিয়ান অ্যারোজের কাছে চার্চিল ব্রাদার্সের হার। তিন, নির্বাসনমুক্ত খাইমে কোলাদো সান্তোসকে পাচ্ছেন আলেসান্দ্রো। অনুশীলনের পরে লাল-হলুদ মাঝমাঠের প্রধান ভরসা খুয়ান মেরা গঞ্জালেস বললেন, ‘‘চার্চিল দারুণ শক্তিশালী দল। ম্যাচটা একেবারেই সহজ হবে না। তা সত্ত্বেও আমরা জয় ছাড়া কিছুই ভাবছি না।’’ কোলাদো দলে ফেরায় চাপ কমেছে, গোপন করলেন না খুয়ান। বললেন, ‘‘খাইমে আমাদের দলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার। আক্রমণভাগের অন্যতম সেরা অস্ত্র। ও ফেরায় আমরা খুশি।’’ সোমবার সকালে ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলারেরাও অনুশীলন শুরুর আগে শ্রদ্ধা জানান ধনরাজনকে।