গেইলকে বসানোটা মাস্টারস্ট্রোক হতে পারে

চেন্নাই সুপার কিঙ্গস ম্যাচে ক্রিস গেইলকে না খেলিয়ে বেঞ্চে বসিয়ে রাখা হল! সাধারণত এমন একটা কাণ্ড ঘটার সম্ভাবনা বড়জোর ধরা যেতে পারে ৫০০-১। কারণ ক্রিস গেইল সেই ক্রিকেটার যে, তার অফ স্পিনগুলো যদি আর না-ও করে, ফিল্ডিংয়ের সময় দেড়-দুই মিলিমিটারের বেশি না-ও নড়ে এবং ব্যাট-প্যাড-হেলমেটে ক্রিজে দাঁড়িয়ে বাকিংহ্যাম প্রাসাদের রক্ষীদের মতোই নিথর থাকে, তবু ক্রিকেটীয় বিধান হল— ক্রিস গেইলকে বসানো যাবে না! এই বিধান অমান্য করার দুঃসাহস যে ক্যাপ্টেন দেখাতে পারে, তার নিজের সম্পর্কে আধুনিক যুগের ডগলাস জার্ডিন জাতীয় একটা ভ্রান্ত ধারণা থাকা চাই।

Advertisement

রবি শাস্ত্রী

শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:২৯
Share:

আমদাবাদ পৌঁছে সরফরাজ খানের সঙ্গে ছবি টুইট করলেন গেইল।

চেন্নাই সুপার কিঙ্গস ম্যাচে ক্রিস গেইলকে না খেলিয়ে বেঞ্চে বসিয়ে রাখা হল!

Advertisement

সাধারণত এমন একটা কাণ্ড ঘটার সম্ভাবনা বড়জোর ধরা যেতে পারে ৫০০-১। কারণ ক্রিস গেইল সেই ক্রিকেটার যে, তার অফ স্পিনগুলো যদি আর না-ও করে, ফিল্ডিংয়ের সময় দেড়-দুই মিলিমিটারের বেশি না-ও নড়ে এবং ব্যাট-প্যাড-হেলমেটে ক্রিজে দাঁড়িয়ে বাকিংহ্যাম প্রাসাদের রক্ষীদের মতোই নিথর থাকে, তবু ক্রিকেটীয় বিধান হল— ক্রিস গেইলকে বসানো যাবে না! এই বিধান অমান্য করার দুঃসাহস যে ক্যাপ্টেন দেখাতে পারে, তার নিজের সম্পর্কে আধুনিক যুগের ডগলাস জার্ডিন জাতীয় একটা ভ্রান্ত ধারণা থাকা চাই।
তবে চেন্নাই ম্যাচে যেহেতু এই অবিশ্বাস্য কাণ্ডটাই ঘটল, আমাদের কারণ অনুসন্ধানে নামতে হবে। গেইল কি সত্যিই অফ ফর্মের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে? আপাতদৃষ্টিতে উত্তর হবে, ‘না’। কারণ টুর্নামেন্টে এ পর্যন্ত আরসিবি-র হয়ে সর্বোচ্চ রান গেইলেরই। তা হলে কি ও আর পেল্লাই ছক্কাগুলো হাঁকাতে পারছে না? এখানেও উত্তর, ‘পারছে’। তিন ম্যাচে আটটা ছয় মারা হয়ে গিয়েছে। তা হলে বাদ পড়ার কারণ হয়তো চার বিদেশি খেলানোর নিয়মটা? এই যুক্তিতে এবি ডে’ভিলিয়ার্স আর মিচেল স্টার্ক তবুও গেইলের বিকল্প হিসাবে টিমে ঢুকতে পারে। কিন্তু গেইলকে বসিয়ে রাইলি রসউ আর ডেভিড ওয়েইসকে নামালে বিক্ষোভে পার্লামেন্ট পর্যন্ত মুলতুবি হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক।
তবু চলতি মরসুমে এ পর্যন্ত টিমের একমাত্র ম্যান অব দ্য ম্যাচ, টিমের একমাত্র জয়ের অন্যতম নায়ক এবং মাত্র ক’সপ্তাহ আগেই বিশ্বকাপের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিকারীকে বসিয়ে দিল বেঙ্গালুরু!
আসলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ম্যাচে ২০০ তাড়া করতে নেমে আঠারো বলে গেইলের এক ডজন রানটাই কাল হল। বাউন্ডারি, ওভার বাউন্ডারি তো ছিলই না, গেইলের ক্যাচও পড়ে। তবু ক্যারিবিয়ান দৈত্য জাগেনি। ডেল স্টেইনের গোলার সামনে এগারো নম্বরদের যেমন অসহায় দেখায়, স্লোয়ার বল খেলতে গিয়ে সে দিন গেইলকে ঠিক তেমন দেখাচ্ছিল। ব্যাট বল পর্যন্ত যাচ্ছিলই না। গেইল ডান হাতে ব্যাট করলেও সম্ভবত অত খারাপ দেখাবে না। ওই পারফরম্যান্সের সমালোচনা দরকার ছিল। সে জন্যই হয়তো কোপটা পড়ে। গেইল টিমকে ডুবিয়েছে, টিমমেটরা হয়তো সেই বার্তা পৌঁছে দিতে এই রাস্তা নেয়। আর সেটাই মাস্টারস্ট্রোক হয়ে উঠতে পারে।
আমার ধারণা, আজ রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে গেইল টিমে ফিরবে। একমাত্র ওর অপ্রত্যাশিত জ্বলে ওঠাই রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সদের ভাগ্য ফেরাতে পারে। বিরাট কোহলি আর এবি ডে’ভিলিয়ার্সের ঔজ্জ্বল্য যতই থাকুক, আরসিবি নামক শ্যাওলিনের প্রধান যোদ্ধা কিন্তু গেইলই! তাই মাস্টারকে আবার দায়িত্বে ফেরাতে হবে। সরফরাজ খানের মতো টিনএজাররা বাইরে বসে দেখতে দেখতে আরও শিখুক।
আজ কিন্তু গেইল-ঝড়ের জন্য তৈরি থাকুন!

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement