বেনাচিতির স্কুলে চলছে ক্যারাটের ক্লাস। ছবি: বিশ্বনাথ মশান।
কয়েক বছর আগে শুরুটা হয়েছিল বর্ধমানেই। ‘সেলফ ডিফেন্স প্রোগ্রাম’ সে বার সাড়া ফেলে ছাত্রীদের মধ্যে। সেই সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে ছাত্রীদের আত্মরক্ষার পাঠ দিতে এ বার জেলার ৩৪৯টি স্কুলে গত সোমবার থেকে শুরু হয়েছে ক্যারাটে ও জুডোর প্রশিক্ষণ।
বছর খানেক আগে ‘রাষ্ট্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা মিশন’ জেলার ২০টি স্কুলের ছাত্রীদের তিন মাসের ক্যারাটে ও জুডো প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করে। প্রশিক্ষণ শেষে বর্ধমানের সংস্কৃতি ভবনে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। কর্মসূচির রিপোর্ট রাজ্যের শিক্ষা দফতর মারফত মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকে পাঠায় জেলা প্রশাসন। ২০১৬ সালে জেলার ছ’টি মহকুমার ৬০টি স্কুলে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তা নিয়েও ব্যাপক উৎসাহ দেখা যায় ছাত্রীদের মধ্যে।
সেই উৎসাহ দেখে এ বছর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, দুর্গাপুরের ৬০টি, কালনার ৩৪টি, কাটোয়ার ৬৬টি-সহ জেলার ৩৪৯টি স্কুলে তিন মাসে ৪৫টি ক্যারাটে, জুডো ক্লাস হবে। প্রতিটি স্কুলের ৫০ জন করে নবম শ্রেণির ছাত্রী প্রশিক্ষণে যোগ দেবে। জেলার ‘ফিজিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড ইয়ুথ ওয়েলফেয়ার’ আধিকারিক গৌরাঙ্গ বিশ্বাস বলেন, ‘‘গত বছরের সাফল্যে আমরা খুশি। তাই স্কুলের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। প্রশিক্ষণ শেষে ছাত্রীরা বাড়িতেই ক্যারাটে, জুডোর অনুশীলন করতে পারবে।’’
অন্ডালের খাস কাজোড়া হাইস্কুল ও বেনাচিতির রামকৃষ্ণপল্লি বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠের ক্যারাটে প্রশিক্ষক গোপাল সরকার বলেন, ‘‘কিওকুশিন, শোতোকান, শিতোরিউ, গোজুরিউ ক্যারাটে শেখানো হবে। এর ফলে মেয়েরা স্বাবলম্বী হতে পারবেন।’’ সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক শারদ্বতী চৌধুরী জানান, কর্মসূচির জন্য ইতিমধ্যেই টাকা মিলেছে। প্রশিক্ষক নিয়োগের কাজও শেষ। তিনি বলেন, ‘‘চটজলদি সিদ্ধান্ত নেওয়া, আত্মরক্ষা-সহ বিভিন্ন বিষয়ের তালিম ছাত্রীরা যাতে ক্লাসেই পায়, সে জন্য প্রতিটি স্কুলে এক জন করে শিক্ষিকাকেও বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।’’
স্কুলেই ক্যারাটে শিক্ষা পেয়ে খুশি বুদবুদ গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী শ্রাবস্তী দাস, চন্দ্রিমা দাসেরা। তাদের কথায়, ‘‘আগে রাত হলে টিউশন থেকে নিয়ে আসতেন বাবা, দাদারা। ক্যারাটে শিখে এখন আর ভয় পাই না।’’