কামো-ক্রোমা জুটিতে দুরন্ত মোহনবাগান

ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কার হাতে নিয়েই গ্যালারির দিকে দৌড়লেন ক্রোমা। তার পরেই সবুজ-মেরুন সমর্থকদের বিস্মিত করে শুরু করে দিলেন জনপ্রিয় ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ চলচ্চিত্রের গান ‘তুম পাস আয়ে...’।

Advertisement

শুভজিৎ মজুমদার

শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৭ ০৪:০৪
Share:

যুগলবন্দি: গোলের পরে কামোর সঙ্গে উৎসব ক্রোমার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

মোহনবাগান ২ : কাস্টমস ০

Advertisement

জর্জ উইয়ার দেশের ফুটবলার তিনি। অথচ আনসুমানা ক্রোমার প্রিয় তারকার নাম শাহরুখ খান!

রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় মোহনবাগান মাঠ একাই মাতিয়ে দিলেন ক্রোমা। গোল করে এবং গান গেয়ে!

Advertisement

ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কার হাতে নিয়েই গ্যালারির দিকে দৌড়লেন ক্রোমা। তার পরেই সবুজ-মেরুন সমর্থকদের বিস্মিত করে শুরু করে দিলেন জনপ্রিয় ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ চলচ্চিত্রের গান ‘তুম পাস আয়ে...’।

টানা সাত বছর পর কলকাতা প্রিমিয়ার লিগে ব্যর্থতার যন্ত্রণা ভুলতে এই মুহূর্তে ক্রোমা-কামো স্তেফানি বায়ি ভরসা মোহনবাগানের। রবিবার কাস্টমসকে হারিয়ে টানা চার ম্যাচে জয়ের নেপথ্যে সেই কামো-ক্রোমা যুগলবন্দি।

ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে কাস্টমসের লড়াই দেখে ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন মোহনবাগান কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী। কিন্তু এ দিন প্রথমার্ধেই তাঁর দুশ্চিন্তা দূর করে দিলেন কামো। ম্যাচের ৩২ মিনিটে প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে গোল করে মোহনবাগানকে এগিয়ে দেন দিদিয়ে দ্রোগবার ভক্ত। উচ্ছ্বসিত কামো বললেন, ‘‘এটাই আমার করা সেরা গোল। তাই নিজেকেই গোল উৎসর্গ করছি।’’ আর শঙ্করলাল বললেন, ‘‘দলটা এখন থার্ড গিয়ারে চলতে শুরু করেছে।’’

আরও পড়ুন: কামো-ক্রোমার যুগলবন্দিতে কাস্টমস বধ বাগানের

মোহনবাগানকে আটকাতে শুরু থেকেই কাস্টমস কোচ রাজীব দে-র স্ট্র্যাটেজি ছিল, কামো-দের গোল করতে না দেওয়া। তাই দল সাজিয়েছিলেন ৪-৫-১ ফর্মেশনে। কিন্তু ক্রোমা একটু নীচে নেমে আসতেই কাস্টমসের প্রতিরোধ ভেঙে গেল। শুধু তাই নয়। কামো ও ক্রোমা বারবার নিজেদের মধ্যে জায়গা পরিবর্তন করে সমস্যায় ফেলে দিচ্ছিলেন প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের। ৫১ মিনিটে কামো-র পাস থেকেই গোল করলেন ক্রোমা। ক্রসবার ও গোলপোস্ট তাঁর সামনে প্রাচীর হয়ে না উঠলে এ দিন হ্যাটট্রিকও করে ফেলতে পারতেন তিনি।

ক্রোমা অবশ্য একেবারেই হতাশ নন হ্যাটট্রিক করতে না পারার জন্য। তিনি খুশি কামোর সঙ্গে তাঁর দুর্দান্ত বোঝাপড়া গড়ে ওঠায়। ক্রোমা বললেন, ‘‘বোঝাপড়া গড়ে তোলার জন্য আমি আর কামো দু’জনেই প্রচুর পরিশ্রম করেছি। আলাদা ভাবে প্র্যাকটিসও করি। আমাদের কাছে দর্শনটা খুব পরিষ্কার— যে গোল করার জায়গায় থাকবে, বল তাকেই দিতে হবে। স্বার্থপর হলে সাফল্য পাওয়া যাবে না।’’

আশির দশকে সবুজ-মেরুন জার্সিতে মানস ভট্টাচার্যের সঙ্গে জুটি বেঁধে ভারতীয় ফুটবলে ঝড় তুলেছিলেন বিদেশ বসু। রবিবার মোহনবাগান মাঠে বসে উচ্ছ্বসিত বিদেশ বললেন, ‘‘যত দিন যাবে ওরা কিন্তু আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে।’’

কামো-ক্রোমার দুরন্ত যুগলবন্দির দিনেই অবশ্য কাঁটা হয়ে থাকল প্রয়াত আমেদ খানকে উপেক্ষা। কিংবদন্তি ফুটবলারকে শ্রদ্ধা না জানিয়েই শুরু হয়ে গিয়েছিল মোহনবাগান বনাম কাস্টমস ম্যাচ! চেনা ময়দানের অচেনা ছবি।

মোহনবাগান: শিবিনরাজ কুনিয়িল (সোরম পইরে), অরিজিৎ বাগুই (দেবব্রত রায়), বিক্রমজিৎ সিংহ, এজে কিংগসলে, রিকি লালনমাওমা, চেস্টারপল লিংডো, রেনিয়ার ফার্নান্দেজ, আজহারউদ্দিন মল্লিক (পিন্টু মাহাত), আনসুমানা ক্রোমা ও কামো স্তেফানি বায়ি।

আজ প্রিমিয়ার লিগে:

ইস্টবেঙ্গল বনাম রেলওয়ে এফসি (ইস্টবেঙ্গল, ২.৪৫)।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement