এই হ্যাটট্রিক তোমাকে দিলাম, কোহালিকে বললেন বুমরা

ভারতীয় পেসাররা বিশ্ব শাসন করবেন, ভাবেননি রিচার্ডস

শনিবার রাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্টে বুমরার বিষাক্ত সুইং সামলাতে না পেরে পরপর ফিরে যান ড্যারেন ব্র্যাভো, শ্যামর ব্রুকস এবং রস্টন চেজ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:৫৭
Share:

নায়ক: সাবাইনা পার্কে দুরন্ত হ্যাটট্রিক করে বুমরা। এএফপি

যে সাবাইনা পার্কে এক সময় রাজত্ব করতেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি ফাস্ট বোলাররা, সেখানেই শাসক হয়ে উঠলেন এক ভারতীয় পেসার। তিনি— যশপ্রীত বুমরা।

Advertisement

শনিবার রাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্টে বুমরার বিষাক্ত সুইং সামলাতে না পেরে পরপর ফিরে যান ড্যারেন ব্র্যাভো, শ্যামর ব্রুকস এবং রস্টন চেজ। সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে তিন নম্বর বোলার হিসেবে হ্যাটট্রিকের মালিক হয়ে যান বুমরা। এর আগে এই কৃতিত্ব ছিল হরভজন সিংহ এবং ইরফান পাঠানের। তাঁর এই হ্যাটট্রিকের জন্য বুমরা কৃতিত্ব দিচ্ছেন অধিনায়ক বিরাট কোহালিকেই।

দিনের শেষে ‘বিসিসিআই টিভি’-র হয়ে বুমরার সাক্ষাৎকার নেন স্বয়ং কোহালি। যেখানে আবেগাপ্লুত পেসার ধন্যবাদ দেন তাঁর অধিনায়ককে। কেন বুমরার এই শ্রদ্ধার্ঘ্য? এর পিছনে রয়েছে কোহালির তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত। পরপর দু’উইকেট নেওয়ার পরে হ্যাটট্রিক বল খেলতে নামেন চেজ। বুমরার ইনসুইং চেজের প্যাডে লাগলেও আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। বুমরাও বিশেষ কিছু না বলে ফিরে যাচ্ছিলেন রান আপে। তখনই স্লিপ থেকে ছুটে আসেন কোহালি এবং কোনও দ্বিধা না করে ‘ডিআরএস’-এর সাহায্য নেন। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় বল উইকেটে লাগছে।

Advertisement

যে ঘটনা নিয়ে বুমরা বলছেন, ‘‘আমি একেবারেই নিশ্চিত ছিলাম না, আউট কি না। আমি ভেবেছিলাম বলটা প্রথমে ব্যাটে লেগেছে। কিন্তু বিরাট রিভিউটা দারুণ নেয়। যে কারণে বলছি, এই হ্যাটট্রিকের জন্য আমি ক্যাপ্টেনের কাছেই কৃতজ্ঞ থাকব। ক্যাপ্টেন, এই হ্যাটট্রিকটা তোমাকেই দিলাম।’’ কোহালি এই নিয়ে কী বলছেন? ভারত অধিনায়কের মন্তব্য, ‘‘আমার আর রাহানের মনে হয়েছিল, বলটা দেরিতে পায়ে লেগেছে। তাই আমরা সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নিই।’’ বুমরার হ্যাটট্রিকের পরে বোলারের চেয়ে বেশি উত্তেজিত লেগেছে কোহালিকে। ভারত অধিনায়ককে বলতেও শোনা যায়, ‘‘কী দারুণ বোলার, কী দারুণ বোলার।’’

নিজের প্রথম স্পেলে ১৬ রানে ছয় উইকেট নিয়ে ক্যারিবিয়ান ব্যাটিংকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেন বুমরা। তাঁর এক নম্বর বোলারকে কোহালির প্রশ্ন ছিল, ‘‘নতুন বল হাতে নেওয়ার পরে কী রকম মনোভাব থাকে তোমার?’’ বুমরা বলেন, ‘‘মাঝে মাঝে যখন পিচ থেকে যথেষ্ট সাহায্য পাওয়া যায়, তখন কেউ কেউ প্রতি বলেই উইকেট তোলার চেষ্টা করে। সাবাইনা পার্কের পিচ থেকেও যথেষ্ট বাউন্স পাওয়া যাচ্ছিল, বলও দেরিতে সুইং করছিল। কিন্তু আমি একটা ব্যাপারের উপরে নজর দিয়েছিলাম। ধারাবাহিক ভাবে ভাল বল করে যাওয়া এবং ক্রমাগত চাপ তৈরি করা।’’

বুমরার অসাধারণ বোলিংয়ে মুগ্ধ ক্রিকেট কিংবদন্তিরাও। যেমন ভিভ রিচার্ডস। বুমরার হ্যাটট্রিক দেখার পরে টিভি-তে ভিভ বলেন, ‘‘আমি কোনও দিন কল্পনাও করিনি যে, জীবিত থাকতে দেখতে পাব ভারতীয় ফাস্ট বোলাররা বিশ্ব শাসন করছে।’’

বুমরার বোলিংয়ের সময় হঠাৎ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রাক্তন পেসার ইয়ান বিশপ বলেন, ‘‘আমি বিশ্বাস করতে পারছি না যে এমন লোকও আছে যারা বুমরার বোলিং অ্যাকশনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।’’ পাশে থাকা সুনীল গাওস্কর সঙ্গে সঙ্গে বলে ওঠেন, ‘‘কারা তারা?’’ বিশপ অবশ্য কারও নাম করেননি। এর পরে দুই প্রাক্তন ক্রিকেটার পরিষ্কার বলে দেন, বুমরার বোলিং অ্যাকশন একটু ব্যতিক্রমী হলেও কোনও ভাবেই অবৈধ নয়। বুমরার বোলিংয়ের রিপ্লে চলার সময় গাওস্কর বলেন, ‘‘কোন জায়গায় বুমরার কনুই ভাঙছে, কেউ বলতে পারবে? ওর অ্যাকশন একেবারে নিখুঁত।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement