এটা কি শতাব্দী প্রাচীন ক্লাবের জন্য ভাল বিজ্ঞাপন? —নিজস্ব চিত্র
একাধিক বিষয়কে কেন্দ্র করে সবুজ মেরুন সমর্থকরা ক্ষুব্ধ ছিলেন। ফলে শনিবার ক্লাবের বার্ষিক সাধারণ সভা ভণ্ডুল হতে পারে এমনই ছিল আশঙ্কা। তাই দুপুর থেকেই মোহনবাগান ক্লাবের বাইরে মোতায়েন করা হয়েছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। সমর্থকরাও ফেস্টুন, ব্যানার নিয়ে দাবি দাওয়া জানানোর জন্য উপস্থিত হয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত বড় গোলমাল বাধেনি। ক্লাব সচিব সৃঞ্জয় বসু একাধিক সমর্থকের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে পেরেছেন। এদিকে গত ২৯ জুলাই 'মোহনবাগান রত্ন' পদকে সম্মানিত হয়েছিলেন প্রাক্তন অলিম্পিয়ান গুরবক্স সিংহ। তবে করোনা পরিস্থিতির জন্য সেই অনুষ্ঠান আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। তাই এদিন তাঁর হাতে এই বিশেষ পদক তুলে দেওয়া হল।
মূলত তিনটি দাবিকে কেন্দ্র করে সবুজ মেরুন সমর্থকরা গত কয়েক মাস থেকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। এক) মোহনবাগানের আগে এটিকে শব্দটি বাদ দিতে হবে। যার বয়ান ছিল হ্যাসট্যাগ রিমুভ এটিকে। দুই) আরপিএসজির সঙ্গে চুক্তি ভঙ্গ করতে না চাইলেও যেন আইএসএলে মোহনবাগানের সত্তাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। ৩) আইএসএলের ম্যাচের আগে ও শেষে ধারাভাষ্যকার থেকে বিদেশের সাংবাদিকরা ‘এটিকে’ ব্যবহার করেন। এটি বরদাস্ত করা হবে না। কারণ, মোহনবাগান ক্লাব সমর্থকদের কাছে মায়ের সমান।
তবে শুধু বাইরে নয়। এদিন সভার মধ্যে থাকা কয়েক জন সদস্যও 'এটিকে'র নাম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের উদ্দেশে সচিব সৃঞ্জয় বসু বলেন, “কারও প্ররোচনায় পা দেবেন না। ইনভেস্টর চলে গেলে আমরা কিন্তু আবার আগের জায়গায় ফিরে যাব। তখন কি হবে বুঝতে পারছেন?” পরে অবশ্য সাংবাদিক সম্মেলনও করেন ক্লাব সচিব। সেখানে তিনি বললেন, “যারা বিক্ষোভ দেখালেন, তাঁদের বক্তব্যকেও গুরুত্ব দিচ্ছি। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করুন। বেঙ্গালুরুর মত দল আর্থিক মন্দায় ভুগছে। বাংলার ফুটবলেও এই সময় ভাল বিনিয়োগ নেই। এটিকে চলে গেলে কি হবে? একটু বোঝার চেষ্টা করুন। আমরাও চাই না ক্লাবের কোনও অসম্মান হোক। তবে যারা টাকা ঢালছে তাদেরও তো সম্মান প্রাপ্য। এটাও বুঝতে হবে।”
'মোহনবাগান রত্ন' পদক পাচ্ছেন প্রাক্তন অলিম্পিয়ান গুরবক্স সিংহ। —নিজস্ব চিত্র
যদিও পুলিশ মোতায়েন রেখে বার্ষিক সাধারণ সভা আয়োজন গঙ্গাপাড়ের ক্লাবে নতুন ঘটনা নয়। ২০১৮ সালেও একই ঘটনা ঘটে। সেবার বর্তমান সভাপতি টুটু বসুর উপস্থিতি নিয়ে প্রয়াত সচিব অঞ্জন মিত্রের লোকজনদের সঙ্গে ব্যাপক ঝামেলা হয়। এবারও সাধারণ সভা বিঘ্ন হওয়ার জোর আশঙ্কা ছিল। তাই কি পুলিশ পাহারার ব্যবস্থা করা হল? এটা কি শতাব্দী প্রাচীন ক্লাবের জন্য ভাল বিজ্ঞাপন? সচিবের জবাব, “আমি মনে করি মোহনবাগানের কোনও সদস্য, সমর্থকরা বিশৃঙ্খলা করেন না। কিন্তু তবুও আমরা পুলিশ রেখেছিলাম, যাতে আমাদের কেউ গন্ডগোল করে বদনাম না করতে পারেন।”