কৃষ্ণদের নিয়ে গর্ব হচ্ছে হাবাসের। ফাইল ছবি
দল জিতলে কোনওরকম উচ্ছ্বাস করেন না তিনি। সংযত থেকে পরের ম্যাচে উন্নতির কথাই শোনা যায় তাঁর মুখে। তবে সুনীল ছেত্রীর বেঙ্গালুরু এফসি-কে চলতি আইএসএলে দ্বিতীয় বার হারিয়ে অন্য মেজাজে পাওয়া গেল এটিকে মোহনবাগানের স্প্যানিশ কোচ আন্তোনিয়ো লোপেজ হাবাসকে। ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বললেন, “দলের ছেলেদের জন্য আমার গর্ব হচ্ছে। আজ দল অসাধারণ ফুটবল খেলেছে। পুরো ম্যাচটা আমরাই নিয়ন্ত্রণ করেছি।”
সুনীল ছেত্রীকে এ দিন এতটাই কড়া পাহারায় রেখেছিলেন এটিকে মোহনবাগান ডিফেন্ডাররা, যে তাঁকে বেশ হতাশ লাগছিল। একাধিকবার তাঁকে বিপক্ষের ফুটবলারদের অবৈধ ভাবে আক্রমণ করতে দেখা যায়। ৭০ মিনিটের মাথায় যে ভাবে প্রথমে লেনি রদরিগেজের গোড়ালিতে আঘাত করেন ও পরে তাঁর জার্সি টেনে ধরে মাটিতে ফেলে দেন, তা ছেত্রী-সুলভ মনে হয়নি। এ দিন হলুদ কার্ডও দেখতে হয় তাঁকে।
সুনীলকে কড়া পাহারায় রাখার পরিকল্পনা নিয়েই যে নেমেছিলেন তাঁর দলের ডিফেন্ডাররা, তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়ে হাবাস বলেন, “ওকে পাহারা দেওয়ার কাজটা আমাদের ছেলেরা বেশ ভাল করেছে। ও ভারতীয় ফুটবলের কিংবদন্তি। ফুটবলে বিপক্ষের ফুটবলারদের শ্রদ্ধা করতে হয়। আর সুনীল তো ভারতীয় দলের অধিনায়ক। ওকে আমি ২০১৪ থেকে দেখছি এবং এখনও ওর সম্পর্কে একই ধারণা আমার। আমার কাছে ও এ দেশের অন্যতম সেরা ফুটবলার।”
জয়ের ফলে ১৬ ম্যাচে ৩৩ পয়েন্ট নিয়ে এখন তারা লিগ টেবলের শীর্ষে থাকা মুম্বই সিটি এফসি-র চেয়ে মাত্র এক পয়েন্ট পিছনে। মঙ্গলবার ৩৭ মিনিটে পেনাল্টি থেকে চলতি আইএসএলে তাঁর ১২ নম্বর গোলটি করে দলকে এগিয়ে দেন ফিজির স্ট্রাইকার রয় কৃষ্ণ। সাত মিনিট পরেই বিপক্ষের বক্সের বাঁ দিকের মাথা থেকে নেওয়া ফ্রিকিকে সোজা জালে বল জড়িয়ে দেন সদ্য ওড়িশা এফসি থেকে সবুজ-মেরুন শিবিরে আসা ব্রাজিলের ফরোয়ার্ড মার্সেলিনহো। তিনিই ম্যাচ-সেরার খেতাব পান। মার্সেলিনহোর ফর্মে ফেরা নিয়ে হাবাস বলেন, “মার্সেলিনহো শুধু ভাল খেলোয়াড়ই নয়, খুব বুদ্ধিমানও। দলের উন্নতির জন্য ওর প্রতিভাকে কাজে লাগাতে হবে আমাদের। ওর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। দলের প্রতি ও নিজেকে উজাড় করে দিতে প্রস্তুত।”
শীর্ষে থাকা মুম্বই সিটি এফসি-র সঙ্গে মাত্র এক পয়েন্টের ব্যবধান থাকায়, বাকি তিনটি ম্যাচের সবক’টিতে এটিকে মোহনবাগান জিতলে ও মুম্বই একটি ম্যাচে ড্র করলেই এক নম্বরে থেকে লিগ শেষ করবে ও আগামী বছর এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে হাবাসের দল। যদি উল্টোটা হয়, তা হলে অবশ্য সাগরপাড়ের দলই এক নম্বরে থাকবে।
ম্যাচের পরে সবুজ-মেরুন শিবিরের ডিফেন্ডার সন্দেশ ঝিঙ্গান বলেছেন, “তিন পয়েন্ট, ক্লিন শিট, ভাল পারফরম্যান্স, টানা তিন ম্যাচে জয়। সব মিলিয়ে আমরা খুবই খুশি। তবে এখনও আমাদের আরও উন্নতি করতে হবে। এখনও অনেক জায়গা রয়েছে, যেগুলো শোধরানো দরকার। এই দলটার সম্ভাবনা প্রচুর। আজই প্রমাণ হল আমরা কতটা উন্নতি করতে পারি। পরের ম্যাচগুলোতে এই একই মানসিকতা ও চারিত্রিক দৃঢ়তা বজায় রেখে মাঠে নামতে হবে আমাদের।”