Robbie Fowler

আবেগ নয়, মস্তিষ্ক ব্যবহার করো, মন্ত্র কোচ ফাওলারের

গুডিসন পার্কে সে দিন শুরু থেকেই প্রবল উত্তেজনা। ঘরের মাঠে ২৬ মিনিটে ক্লজ থমসেনের আত্মঘাতী গোলে এভার্টন পিছিয়ে পড়ায় পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে গিয়েছিল।

Advertisement

শুভজিৎ মজুমদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২০ ০৪:৩০
Share:

মহড়া: লাল-হলুদ শিবিরে বলবন্তদের সঙ্গে আলোচনায় ফাওলার।

ইংল্যান্ড ফুটবলের বিখ্যাত মার্সিসাইড ডার্বি। ১৯৯৭ সালের ১৭ এপ্রিল ইপিএলে এভার্টনের মুখোমুখি লিভারপুল। এই ম্যাচটাই বদলে দিয়েছিল রবি ফাওলারের জীবনের দর্শন!

Advertisement

গুডিসন পার্কে সে দিন শুরু থেকেই প্রবল উত্তেজনা। ঘরের মাঠে ২৬ মিনিটে ক্লজ থমসেনের আত্মঘাতী গোলে এভার্টন পিছিয়ে পড়ায় পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে গিয়েছিল। ৮১ মিনিটে মারামারি করে লাল কার্ড দেখেছিলেন ফাওলার ও এভার্টন ডিফেন্ডার ডেভিড আনসওয়ার্থ। হলুদ কার্ড দেখেছিলেন তিন ফুটবলার। লিভারপুলের রব জোনস। এভার্টনের রিচার্ড ডুনে ও গ্রাহাম স্টুয়ার্ট। ১-১ ম্যাচ শেষ হওয়ার পরেই ফাওলার উপলব্ধি করেন, ডার্বিতে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে মস্তিষ্ক ব্যবহার করতে হবে। না হলে বিপর্যয় অনিবার্য।

কোচিং জীবনে আরও কঠোর ভাবে সেই দর্শন মেনে চলছেন ফাওলার। আইএসএলের ডার্বিতে এটিকে-মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে জা মাগোমা, অ্যান্টনি পিলকিংটন থেকে জেজে লালপেখলুয়া— সকলকে এসসি ইস্টবেঙ্গল কোচের পরামর্শ, আবেগ ও উত্তেজনা প্রশমণ করে ঠান্ডা মাথায় খেলো। অর্থাৎ, ‘ক্যাপ্টেন কুল’ মহেন্দ্র সিংহ ধোনির মতো।

Advertisement

আরও পড়ুন: আবেগের ডার্বি ঘিরে শতবর্ষ পালনের উৎসব

ফাওলারের প্রিয় বন্ধু অ্যান্টনি গ্র্যান্ট এখন লাল-হলুদের সহকারী কোচ। ফুটবল মাঠে তাঁরা ছিলেন একে অপরের চরম প্রতিদ্বন্দ্বী। লিভারপুলের চিরশত্রু এভার্টনে খেলতেন অ্যান্টনি। অসংখ্য ডার্বিতে মুখোমুখি হয়েছেন। নানা অপ্রীতিকর ঘটনার সাক্ষী ছিলেন। অ্যান্টনি বলছিলেন, ‘‘ডার্বি ঘিরে উত্তেজনা ও আবেগ থাকবেই। ম্যাচের কয়েক দিন আগে থেকেই পরিবেশ সম্পূর্ণ বদলে যায়। কিন্তু সেই আবেগে ফুটবলারেরা গা-ভাসালেই বিপদ।’’ তিনি আরও বললেন, ‘‘এভার্টনের সঙ্গে লিভারপুলের ভয়ঙ্কর শত্রুতা। মার্সিসাইড ডার্বির আগে রীতিমতো যুদ্ধের আবহ তৈরি হয়। সাধারণ সমর্থক থেকে ক্লাবের কর্তা— সকলেই উত্তেজিত থাকেন। ফুটবলারদের মধ্যেও তা সঞ্চারিত হত। যার প্রভাব পড়ে মাঠে। হিলসব্রো বিপর্যয় তার অন্যতম উদাহরণ।’’ অ্যান্টনি যোগ করলেন ’৯৭ সালে মার্সিসাইড ডার্বির ঘটনা আমার ও রবির মনে খুব প্রভাব ফেলেছিল। ও এখনও মনে করে, সে দিন ৮১ মিনিটে লাল কার্ড দেখে মাঠ না ছাড়লে লিভারপুল জিতত। ইপিএল খেতাবও হাতছাড়া হত না। এত দিন পরেও রবি নিজেকে দায়ী করে চ্যাম্পিয়ন হতে না পারার জন্য। এর পরেই সিদ্ধান্ত নিই, সমর্থকদের আবেগ থাকবেই। কিন্তু ফুটবলার হিসেবে আমাদের শান্ত থাকতেই হবে। ’’

আরও পড়ুন: অ্যাওয়ে ম্যাচেও চেষ্টা সবুজ-মেরুন জার্সির

আইএসএলের ডার্বির দিন যত এগিয়ে আসছে, ততই তৎপরতা বাড়ছে দুই কোচের। অনুশীলনে, মধ্যাহ্নভোজ ও নৈশভোজের টেবলে ফুটবলারদের বোঝাচ্ছেন, ডার্বির মতো উত্তেজক ম্যাচে আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে জানা জিনিসও ভুল করবেন তাঁরা। বলছিলেন, ‘‘২৭ নভেম্বরের ডার্বি নিয়ে উন্মাদনা যে তুঙ্গে, তা বুঝতে পারছি। ফুটবলারদের বার বার বলা হচ্ছে, ডার্বিতে গোলের সুযোগ বেশি পাওয়া যাওয়া যাবে না। তাই আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে মস্তিষ্কের ব্যবহার বেশি জরুরি।’’ সোমবারই ৩৩ জনের দল ঘোষণা করেছেন ফাওলার। চোট থাকায় নেই লালরাম চুলোভা। নিভৃতবাস শেষ করে অনুশীলনে নামলেন সি কে বিনীত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement