তিন ম্যাচ হেরে চাপে ফাওলার। ছবি-এসসি ইস্টবেঙ্গলের ফেসবুক পেজ থেকে।
টানা তিন ম্যাচে হার এসসি ইস্টবেঙ্গলের। প্রাক্তন প্লেয়াররা নখ-দাঁত বের করতে শুরু করে দিয়েছেন। এ দিকে এটিকে-মোহনবাগানের দৌড় থামিয়ে দিয়ে ফুটছেন জামশেদপুর এফসি-র স্ট্রাইকার ভাল্সকিস। ওয়েন কোয়েলের জামশেদপুরের বিরুদ্ধে নামার আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের সামনে এসসি ইস্টবেঙ্গল কোচ রবি ফাওলার।
এটিকে-মোহনবাগানকে হারিয়ে প্রথম জয় পেয়েছে জামশেদপুর। আত্মবিশ্বাসে ফুটছে ওয়েন কোয়েলের দল। বৃহস্পতিবার আরও একটা কঠিন ম্যাচ খেলতে নামছেন আপনারা। কতটা তৈরি?
আইএসএলের প্রতিটি ম্যাচই কঠিন। অন্যান্য ম্যাচের মতো বৃহস্পতিবারের ম্যাচটাও আমাদের জন্য খুবই কঠিন হবে। টুর্নামেন্টের প্রতিটি দলই শক্তিশালী। একে অপরকে হারানোর ক্ষমতা রাখে। আগের ম্যাচের ভুল যেন না হয়, সেদিকেই আমাদের নজর দিতে হবে। একটা কথা বলে রাখা ভাল। আমরা মোটেও খারাপ খেলছি না। তবে রেজাল্ট আমাদের হয়ে কথা বলছে না এটাও ঠিক। এ রকম পরিস্থিতিতে নিজেদের উপরে বিশ্বাস হারালে চলবে না।
খেলোয়াড় জীবনে আপনি নিজে স্ট্রাইকার ছিলেন। প্রচুর গোল করেছেন। অথচ আপনার দলের স্ট্রাইকাররা গোলের রাস্তা খুঁজে পাচ্ছেন না। সমস্যা হচ্ছে কোথায়?
সব সময়ে স্ট্রাইকারদের দোষারোপ করা উচিত নয়। দলের অন্য প্লেয়ারদেরও গোল করতে হবে। প্রতিটি স্ট্রাইকারের জীবনেই এ রকম পরিস্থিতি আসে। কোনও কিছুই ঠিকঠাক হয় না তখন। গোল আসে না। তবে আমি নিশ্চিত আমার দলের স্ট্রাইকাররা উন্নতি করবে। সত্যি কথা বলতে কী, আমার দল যদি সুযোগ তৈরি করতে না পারত, তা হলে বেশি চিন্তিত হতাম। কিন্তু ম্যাচে তো আমরা সুযোগ তৈরি করছি। রেজাল্ট আমরা পাচ্ছি না ঠিকই। তবে রেজাল্ট আসছে না বলে নিজেদের দর্শন বদলে ফেলার পক্ষপাতী আমি নই। আমাদের নিজস্ব কিছু দর্শন রয়েছে। সেটা আমরা বদলাবো না।
টুর্নামেন্ট শুরু হতেই আপনার দলে একাধিক চোট আঘাতের সমস্যা। লোকেন মিতেই, ড্যানি ফক্স, অ্যারন আমাদিরা কতটা সুস্থ?
আমরা ওদের দিকে নজর রাখছি। ওদের চোটের আপডেট নিচ্ছি। দ্রুতই ওরা মাঠে ফিরবে বলেই আশা রাখি। প্রত্যাশার থেকেও ভাল স্ক্যান রিপোর্ট এসেছে। এ রকম সময়ে প্লেয়ারদের মানসিক অবস্থাটা সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সেই দিকেও নজর রাখছি।
প্রথম ম্যাচের পর থেকেই প্রাক্তন ফুটবলাররা আপনার স্ট্র্যাটেজি এবং দলের সমালোচনা শুরু করে দিয়েছেন। এতে কি দলের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে?
ক্লাব সব সময়ে স্পেশাল। এটা মনে রাখতে হবে। সবার কাছে একটাই অনুরোধ, আমাদের পাশে থাকুন। আমাদের সমর্থন করুন। ইতিবাচক এনার্জির সঞ্চার করুন দলের ভিতরে। নেতিবাচক এনার্জির প্রয়োজন নেই। প্রতিটি প্লেয়ারের পাশে থাকুন। ওদের মোটিভেট করুন।
আইএসএলের প্রতিটি দলের কাছে বিভীষিকা হয়ে উঠেছেন জামশেদপুরের স্ট্রাইকার ভাল্সকিস। এটিকে-মোহনবাগানের বিরুদ্ধে গোল করেছেন। ভাল্সকিসের উপরে নিশ্চয় কড়া নজর রাখবেন?
প্রতি ম্যাচে যে প্লেয়ার গোল করছে, ভাল খেলছে, তার জন্য স্ট্র্যাটেজি তৈরি করেও তা ব্যর্থ হতে পারে। তবে আমাদের স্ট্র্যাটেজি তৈরিই আছে। জামশেদপুরের বিরুদ্ধে শুরুতেই যদি গোল পেয়ে যাই, তা হলে এন্য এক এসসি ইস্টবেঙ্গলকে দেখতে পাবেন আপনারা। সত্যি কথা বলতে কী, আমরা এখন যে অবস্থায় রয়েছি, সেটা একেবারেই প্রত্যাশিত নয়। আমরা ম্যাচ জিততেই চাই। কেউই ম্যাচ হারতে চায় না। এটাও মাথায় রাখতে হবে এক রাতের মধ্যেই সাফল্য পাওয়া যায় না। এখনও পর্যন্ত যে ক'টা ম্যাচ খেলেছি, তাতে যে আমরা সবদিক থেকেই পর্যুদস্ত হয়েছি, তা নয়। পজিটিভ রেজাল্ট আসা কেবল সময়ের অপেক্ষা।
রেফারিং ঠিকমতো হচ্ছে না। আগের ম্যাচে রেফারির জন্য আপনাদের ভুগতে হয়েছে।
আগের ম্যাচটার পরে আমাকে ভার প্রযুক্তি প্রয়োগের ব্যাপারে বলা হয়েছিল। প্রযুক্তির ব্যবহার হবে কিনা, সেই ব্যাপারে আমি নিশ্চিত নই। যদি প্রযুক্তি ব্যবহারও করা হয়, তা হলে ম্যচটাই তিন ঘন্টার হয়ে দাঁড়াবে। রেফারিদের কাজটা যে কত কঠিন, তা আমরা জানি। সেই কারণেই ওদের বিরুদ্ধে না বলে নিজেদের ক্ষমতার উপরেই জোর দেওয়া উচিত। এটা ঠিক যে, তিন-চারটে সিদ্ধান্তের জন্য আমাদের ভুগতে হয়েছে। তবে খেলায় এরকম ঘটনা ঘটতেই পারে।