মাঠে নামার আগে শেষ প্রস্তুতিতে কোচ কিবু। ছবি-কেরল ব্লাস্টার্সের ফেসবুক পেজ থেকে।
কলকাতাকে তিনি ভোলেননি। প্রথম যে দিন মোহনবাগান মাঠে পা রেখেছিলেন, সে দিনটা এখনও স্পষ্ট মনে রয়েছে তাঁর। কল্যাণীতে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে ভক্তদের আদরে ভাসার মুহূর্ত তাঁর কোচিং জীবনের অন্যতম স্মরণীয় ঘটনা বলেই মনে করেন।
মোহনবাগানকে ‘ভারতসেরা’ করে ঠিকানা বদলেছেন তিনি। চলে গিয়েছেন কেরল ব্লাস্টার্সে। এখনও তাঁর মনে জেগে রয়েছে মোহনবাগান। আইএসএল-এর উদ্বোধনী ম্যাচে পুরনো ক্লাবের বিরুদ্ধে নামার আগে ব্লাস্টার্সের কোচ বলছেন, “মোহনবাগানের প্রতি আমার এখনও আবেগ রয়েছে। আমার সঙ্গে ক্লাবকর্তারা খুব ভাল ব্যবহার করেছেন। ওখানে আমার অনেক বন্ধু রয়েছেন। ব্লাস্টার্সে এখন এসে আমি খুশি। আমি নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব। এখানকার মানুষ আমাকে ভাল ভাবেই গ্রহণ করেছেন।”
সরকারি ভাবে ১৮ অক্টোবর মোহনবাগানের হাতে তুলে দেওয়া হয় আই লিগ ট্রফি। সে দিন সশরীরে কলকাতায় ছিলেন না কিবু। তত দিনে তিনি কেরলের কোচ হয়ে গিয়েছেন। কিন্তু সে দিন তাঁর মন পড়েছিল যুবভারতী সংলগ্ন হোটেলে। ট্রফি হাতে নিয়ে রাজপথে মোহনবাগান সমর্থকরা তখন বাঁধনহারা। সেই ছবি দেখে দূর থেকেই কিবু বলেছিলেন, “চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় সবাই যে খুশি, তা দেখে খুব ভাল লাগছে। আমিও কোচিং স্টাফ, কর্মকর্তা, ফুটবলার ও সমর্থকদের সঙ্গে উদ্যাপন করতে চাই। কিন্তু অতিমারি পরিস্থিতির জন্য তা আর সম্ভব নয়।”
আরও পড়ুন: ডার্বি পরে, মাথায় এখন শুধুই কিবুর কেরল, আইএসএল-এ অভিযান শুরুর আগে বললেন হাবাস
কিবুর মনে মোহনবাগান। তেমনই মোহনবাগানের হৃদয়েও কিবু। মোহনবাগান সচিব সৃঞ্জয় বসু বললেন, “কিবুকে মোহনবাগান প্রতিষ্ঠা দিয়েছে। সেটা ও মনেও রেখেছে। আমরাও কিবুর সাফল্যে আনন্দ পেয়েছি। ৯০ মিনিটের একটা লড়াই। তার পরেও থেকে যায় আবেগ, ভালবাসা। অনেকেই মোহনবাগান ছেড়ে চলে গিয়েছেন। কিন্তু মোহনবাগান থেকে গিয়েছে তাঁদের হৃদয়ে। কিবুর হৃদয়ে যেমন মোহনবাগান, তেমনই আমরাও মনে রেখেছি কিবুকে।” প্রতিপক্ষ সম্পর্কে শ্রদ্ধা ঝরে সঞ্জয়ের গলায়।
নতুন ক্লাব, নতুন লিগ। পরিস্থিতিও ভিন্ন। মেগা টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচের আগে কতটা তৈরি তাঁর দল কেরল ব্লাস্টার্স? কিবু বলছেন, “প্রি সিজন খুব কম সময়ের জন্য হয়েছে। নতুন দল হলে অনেকটা সময় জুড়ে ট্রেনিং করতে হয়। ৩ দিন আগে কোয়রান্টিন পর্ব শেষ হয়েছে কয়েক জন প্লেয়ারের। প্রতিটি দলেরই কিছু না কিছু সমস্যা থাকে। তা নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই। অজুহাতও দিতে চাই না। আনন্দের সঙ্গেই লিগ শুরু করতে চলেছি।”
তাঁর দর্শন, মনের আনন্দে খেলো। বাগানে থাকার সময়ে ছেলেরাও আনন্দ নিয়েই মাঠে নেমেছে। এই কারণে গতবার মোহনবাগানের ফুটবল ছিল বহতি নদীর মতো। ক্লাব বদলালেও স্পেনীয় কোচের কাছ থেকে সেই একই ফ্রি ফ্লোয়িং ফুটবল দেখার অপেক্ষায় ফুটবলভক্তরা।