ISL 2020

শুধু সেট পিসের জন্য আলাদা কোচ, তাও সেট পিসেই কেন ব্যর্থ ইস্টবেঙ্গল?

মঙ্গলবার মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে ৩ গোল হজম করেছে ইস্টবেঙ্গল। একাধিক ফ্রি কিক, কর্নার আদায় করে নিলেও সেগুলো থেকে গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেননি রবি ফাওলারের ছেলেরা।

Advertisement

কৃশানু মজুমদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২০ ১৬:৪৭
Share:

ফ্রি কিক থেকে গোল করতে ব্যর্থ পিলকিংটন। ছবি-ইস্টবেঙ্গলের ফেসবুক পেজ থেকে।

শুধুমাত্র সেট পিসে উন্নতি ঘটাতে ইস্টবেঙ্গলের সেট পিস কোচের দায়িত্ব নিয়ে এসেছেন টেরি ম্যাকফিলিপস। বিদেশের ফুটবলে সেট পিস কোচ থাকলেও এ দেশের ফুটবলে তা এত দিন প্রয়োগ করা হয়নি। সে দিক থেকে অভিনবত্ব এনেছে ইস্টবেঙ্গল শিবির। কিন্তু ম্যাচ চলাকালীন সেট পিসে নেই কোনও অভিনবত্ব। নেই বৈচিত্র।

Advertisement

মঙ্গলবার মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে ৩ গোল হজম করেছে ইস্টবেঙ্গল। একাধিক ফ্রি কিক, কর্নার আদায় করে নিলেও সেগুলো থেকে গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেননি রবি ফাওলারের ছেলেরা। বারের উপর দিয়ে ফ্রি কিক উড়িয়েছেন পিলকিংটন। মানবপ্রাচীরে প্রতিহত হয়েও ফিরেছে ফ্রি কিক। যা দেখেশুনে ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন ফুটবলার মেহতাব হোসেন বলছেন, “এখনও পর্যন্ত দুটো ম্যাচ খেলেছে ইস্টবেঙ্গল। সেই দুটো ম্যাচে সেট পিসের ক্ষেত্রে কোনও পরিকল্পনা, বৈচিত্র আমার চোখে পড়েনি। পরে যে দেখা যাবে না, সে কথা বলছি না। ট্রেভর মর্গ্যান কোচ থাকার সময়ে আমাদের সেট পিসে এর থেকে বেশি বৈচিত্র ছিল।”

সাহেব কোচের সময়ে সেট পিসে বৈচিত্র এনেছিল ইস্টবেঙ্গল। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ফ্রি কিক, কর্নার নিতেন মেহতাব। তাঁর ভাসিয়ে দেওয়া কর্নার ফ্লিক করে দিতেন হরমনজ্যোৎ সিংহ খাবরা। তা থেকে গোল করেছেন তোলগে ওজবে, রবিন সিংহরা। গোল না হলেও ওই ধরনের সেট পিস প্রতিপক্ষের রক্ষণ ভাগকে চাপে ফেলে দিত। শর্ট কর্নার নিতে দেখা যেত মর্গ্যানের দলকে। ৯ ডিসেম্বর, ২০১২-র ডার্বি ম্যাচে মেহতাবের ফি কিক থেকে শরীর ছুড়ে হেড করে খাবরা মোহনবাগানের জালে বল জড়িয়েছিলেন। মেহতাব বলছেন, “কর্নার-ফ্রি কিক থেকে গোল করতে হলে বোঝাপড়া তৈরি করতে হবে। আমার আর খাবরার মধ্যে বেশ ভাল বোঝাপড়া ছিল। আমরা চোখে চোখেই ইশারা করতাম। সেই অনুযায়ী আমি বল ভাসাতাম। খাবরাও সেটা ফলো করত।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: ধর্মান্ধদের ট্রোলের শিকার বার বার, সিদ্ধান্তে অবিচল থেকে ভিন ধর্মের প্রেমিকাকে বিয়ে করেন কইফ

গত কাল ৫টা কর্নার পেলেও সেগুলো মুম্বইয়ের রক্ষণে বিপদ তৈরি করতে পারেনি। অথচ অনুশীলনে ম্যাকফিলিপস সেট পিসের উপরে জোর দিচ্ছেন বলেই খবর। কিন্তু মাঠে নেমে ঠিকঠাক হচ্ছে না। তা হলে সমস্যাটা ঠিক কোন জায়গায়? মেহতাবদের কোচ মর্গ্যান বলছেন, “সপ্তাহ জুড়ে অনুশীলন করেও ম্যাচের সময়ে ঠিক জায়গায় বল রাখা না হলে গোল করা সম্ভবই নয়।’’

আর সেটাই ঠিকঠাক হচ্ছে না। তার জন্য মর্গ্যান অবশ্য ফাওলারের দলকে আরও সময় দিতে চান। সাহেব কোচ বলছেন, “আরও সময় দিতে হবে। সময় পেলে বোঝাপড়া তৈরি হবে। মাঠে নেমে তা কাজে লাগাতে হবে।’’

মেহতাব আবার মনে করছেন ফিটনেসের দিক থেকে সেরা জায়গায় নেই ইস্টবেঙ্গল ফুটবলাররা। অভিযোগের সুরে লাল-হলুদের প্রাক্তন ১৪ নম্বর জার্সিধারী বলছেন, ‘‘ফিটনেসের অভাবে অনেক সময়ে শরীর ঠিক জায়গায় পৌঁছয় না। পায়ে আর বলে ঠিকঠাক হয় না। তার ফলে পর্যাপ্ত সুইং বা সে ভাবে জোর পাওয়া যায় না। তবে এরা তো সবাই পেশাদার ফুটবলার। বাড়িতেই নিজেদের ফিট রাখতে পারত।’’

মেগা টুর্নামেন্টে দাপিয়ে খেলার মতো ফিটনেস কবে পান স্কট নেভিল, বলবন্তরা সেটাই এখন প্রশ্ন। প্রথম দুটো ম্যাচ হেরে চাপে এখন ইস্টবেঙ্গল। একটা ম্যাচ জিতলেই কেটে যাবে চাপ। আর ম্যাচ জিততে হলে গোলের সুযোগ তৈরি করতে হবে। ফিল্ড গোলের পাশাপাশি সেট পিসের দিকেও নজর দিতে হবে। লাল-হলুদের প্রাক্তন তারকা মেহতাব বলছেন, “এখনকার ফুটবলে সেট পিস থেকে অনেক গোল হয়। সুযোগ খুব বেশি পাওয়া যাবে না। দু’একটা সুযোগ থেকেই গোল করতে হবে।’’

ফাওলারের দলের দিকে এখন তাকিয়ে ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তনরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement