মরিয়া জবির কাঁটা সুব্রত, শীর্ষে ওঠার হাতছানি এটিকের সামনে

গত মরসুমে আই লিগে আইজল এফসি ম্যাচে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ায় ছ’ম্যাচ নির্বাসিত হয়েছিলেন জবি। দিতে হয়েছিল এক লক্ষ টাকা জরিমানাও।

Advertisement

শুভজিৎ মজুমদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:৩৯
Share:

প্রস্তুতি: অনুশীলনে জবি ও সুব্রত। শুক্রবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

তিকিতাকা বনাম তিকিতাকা দ্বৈরথে তুরুপের তাস দুই ভারতীয় তারকা!

Advertisement

এক জন এটিকের জার্সিতে অভিষেক স্মরণীয় করে রাখতে মরিয়া। তিনি, জবি জাস্টিন। অন্য জন আজ, শনিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে এটিকের বিরুদ্ধেও দুর্ভেদ্য হয়ে উঠতে চান। তিনি, ভারতীয় ফুটবলের সর্বকালের অন্যতম সেরা গোলরক্ষক সুব্রত পাল।

গত মরসুমে আই লিগে আইজল এফসি ম্যাচে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ায় ছ’ম্যাচ নির্বাসিত হয়েছিলেন জবি। দিতে হয়েছিল এক লক্ষ টাকা জরিমানাও। এটিকের জার্সিতে প্রথম তিনটি ম্যাচ মাঠের বাইরে বসে কাটাতে হয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার যন্ত্রণাও। শনিবার জামশেদপুরের বিরুদ্ধে ম্যাচটা তাঁর কাছে যেন মরণ-বাঁচন লড়াই। যে কোনও মূল্যে প্রথম দলে থাকতে চান তিনি। সে ক্ষেত্রে অন্য পজিশনেও খেলতে আপত্তি নেই জবির। কোচ আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাসের পাশে বসে সাংবাদিক বৈঠকে এটিকে স্ট্রাইকার খোলাখুলি বললেন, ‘‘আমার একমাত্র লক্ষ্য প্রথম একাদশে থাকা। দীর্ঘ দিন কোনও ম্যাচ খেলিনি। মাঠে ফেরার জন্য প্রচুর পরিশ্রম করেছি। এই মুহূর্তে জামশেদপুরের বিরুদ্ধে শুরু থেকে খেলা ছাড়া কিছুই ভাবতে চাই না।’’

Advertisement

জবিকে ছাড়াই শেষ দু’টো ম্যাচ জিতেছে এটিকে। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে হায়দরাবাদ এফসি-কে ৫-০ চূর্ণ করেছে। চেন্নাইয়ে গিয়ে চেন্নাইয়িন এফসি-কে ১-০ হারিয়েছে আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাসের দল। দুরন্ত ছন্দে রয়েছেন তিন ফরোয়ার্ড রয় কৃষ্ণ, ডেভিড উইলিয়ামস ও মাইকেল সুসাইরাজ। এই মুহূর্তে ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলের চতুর্থ স্থানে এটিকে। সমসংখ্যক ম্যাচ খেলে ৭ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে জামশেদপুর। এই পরিস্থিতিতে হাবাস কি প্রথম একাদশে পরিবর্তনের ঝুঁকি নেবেন? মরিয়া জবির উত্তর, ‘‘আমাদের কোচ অসাধারণ। আমাকে নিয়ে তাঁর নিশ্চয়ই কোনও রণনীতি আছে। তবে কোচ যেখানে খেলতে বলবেন, সেখানেই খেলব।’’ জবির সঙ্গে একমত হাবাসও। বললেন, ‘‘প্ল্যান ‘এ’ ও ‘বি’ সব সময় তৈরি থাকে আমার। জবিও তৈরি। তবে ম্যাচের দিন সকালেই প্রথম একাদশ বেছে নিই।’’

তবে এখনও পর্যন্ত কোনও ম্যাচ না খেললেও জবি যে হাবাসের পছন্দের ফুটবলার হয়ে উঠেছেন, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। নির্বাসনের কারণে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত এটিকে স্ট্রাইকারকে তিনি উদ্বুদ্ধ করেছেন নিজের ফুটবল জীবনের কাহিনি শুনিয়ে।

১৯৮৫ সালে আতলেতিকো দে মাদ্রিদে সই করেছিলেন হাবাস। সেই সময় কোচ ছিলেন কিংবদন্তি লুইস আরাগোনেস। ২০০৮ সালে যাঁর কোচিংয়ে ইউরোপ সেরা হয়েছিল জাভি হার্নান্দেস, আন্দ্রে ইনিয়েস্তাদের স্পেন। সেই আরাগোনেসই বদলে দিয়েছিলেন হাবাসের জীবন দর্শন। এটিকে কোচ বলছিলেন, ‘‘আরাগোনাস আমাকে বলেছিলেন, বড় ক্লাবের হয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলাটাই পেশাদার ফুটবলারের কাছে সব চেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। জবিকেও আমি একই কথা বলে উদ্বুদ্ধ করেছি।’’

জামশেদপুর এফসি-র রক্ষণের শেষ প্রহরী সুব্রতের পাখির চোখ জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তন ঘটানো। তাঁর জন্য সব ম্যাচেই নিজেকে ছাপিয়ে যেতে চান। আগের ম্যাচে সুব্রতের হাতেই শেষ হয়ে গিয়েছিল সুনীল ছেত্রীদের জয়ের স্বপ্ন। এ বার তাঁর লড়াই রয় কৃষ্ণ, ডেভিড উইলিয়ামস, মাইকেল সুসাইরাজ, জবি জাস্টিনদের বিরুদ্ধে। জামশেদপুর গোলরক্ষক বলছেন, ‘‘সব ম্যাচই আমার কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। তাই সব ম্যাচেই একশো দশ শতাংশ উজাড় করে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামি।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘এটিকে দারুণ দল। তার উপরে হাবাসের মতো কোচ রয়েছেন। তবে আমাদের কোচও প্রস্তুত।’’

জামশেদপুরের কোচ আন্তোনিয়ো ইরিয়ন্দো ওর্তেগা স্পেনীয় হলেও জন্মেছেন রাশিয়ায়। চার বছর বয়সে ফিরে আসেন স্পেনে। এই মরসুমেই দায়িত্ব নিয়েছেন সুব্রত, বিকাশ জাইরুদের। সাংবাদিক বৈঠকে আন্তোনিয়ো বললেন, ‘‘অতীত নিয়ে ভাবছি না। ছেলেরাও জানে, ভাল না খেললে এটিকে-কে হারানো সম্ভব নয়। ওরা সেরাটাই দেবে শনিবার।’’

শনিবার আইএসএলে: এটিকে বনাম জামশেদপুর এফসি (যুবভারতী, সন্ধে ৭.৩০ স্টার স্পোর্টস টু চ্যানেলে)।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement