ফের লিগ শীর্ষে ওঠার লড়াই আন্তোনিয়ো হাবাসের দলের। —ফাইল চিত্র।
মহম্মদ হাবিব, সাবির আলিদের শহরে ফের লিগ শীর্ষে ওঠার লড়াই আন্তোনিয়ো হাবাসের দলের।
পল ব্রাউনের হায়দরাবাদ এফ সি-র বিরুদ্ধে আজ, শনিবার রাতে খেলতে নামার আগে অবশ্য এটিকের স্পেনীয় কোচ প্রচণ্ড সতর্ক। শুক্রবার সকালে অনুশীলন করে রওনা হওয়ার আগে হাবাস বলে দিয়েছেন, ‘‘যুবভারতীতে যে দলকে পাঁচ গোল দিয়েছিলাম, সেই দলে এখন অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। গোয়ায় হারের কথা ভুলে এখন আমরা হায়দরাবাদ ম্যাচ নিয়েই ভাবছি।’’ চোটের জন্য দলের সঙ্গে যাননি প্রণয় হালদার, আনাস এথানোডিকার মতো নির্ভরযোগ্য ফুটবলার। নতুন আসা স্পেনীয় মিডিয়ো মান্ডি সোসাকে খেলাবেন কি না ঠিক করেননি এটিকে কোচ। অস্ট্রেলীয় লিগে রয় কৃষ্ণ, ডেভিড উইলিয়ামসের সঙ্গে খেলছেন সোসা। তাঁকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত রয় কৃষ্ণ। এটিকের সর্বোচ্চ গোলদাতাকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘সোসার সঙ্গে বহু দিন একই দলে খেলছি। ড্রেসিংরুমের মেজাজটাই ও বদলে দিতে পারে শক্তিশালী মনোভাব নিয়ে। মাঝমাঠে ও নেতৃত্ব দেওয়ারও ক্ষমতা রাখে।’’
এটিকেতে সোসার যোগদান যদি নতুন মাত্রা যোগ করে, তবে হায়দরাবাদে নেস্তর গোর্দিলোর ফিরে আসা চিন্তায় রেখেছে হাবাসকে। গত বছর চেন্নাই সিটির আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পিছনে যাঁর অবদান ছিল, সেই নেস্তর চুক্তিভঙ্গের জন্য এত দিন সাসপেন্ড ছিলেন। হায়দরাবাদ কোচ সে জন্যই বলে দিয়েছেন, ‘‘এটিকের কাছে পাঁচ গোল খাওয়াটা আমার কোচিং জীবনের একটা খারাপ দিন ছিল। কিন্তু এ বারের আইএসএলে প্রথম নেস্তরকে পাচ্ছি। ওকে সামনে রেখে খেলতে নামা যে কোনও কোচের কাছেই বিরাট ব্যাপার। এই প্রথম পুরো শক্তি নিয়ে খেলতে নামছি আমরা। আশা করছি প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় পর্বে ভাল খেলবে ছেলেরা।’’ এ বারের আইএসএলের প্রথম পর্বে একেবারেই ভাল খেলতে পারেননি আদিল খান, মার্সেলিনহোরা। আট ম্যাচের ছ’টিতেই হেরেছেন তাঁরা। ১৭ গোল খেয়েছে হায়দরাবাদ রক্ষণ। শুধু তাই নয়, ঘরের মাঠে একটি ম্যাচেও গোল করে এগিয়ে যেতে পারেননি রবিন সিংহরা। এই অবস্থায় এটিকের রয়-উইলিয়ামস জুটির সামনে কতটা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারবেন আদিল খানদের রক্ষণ, সেটাই দেখার।
হাবাস অবশ্য কোনও ঝুঁকিই নিতে রাজি নন। গোয়ার কাছে শেষ ম্যাচ হেরে যাওয়ার পরে রেফারির পাশাপাশি দলকেও দুষেছেন স্পেনীয় কোচ। বলে দিলেন, ‘‘হায়দরাবাদ ম্যাচে তিন পয়েন্ট আমাদের দরকার। আমরা জয়ে ফিরতে চাই। হেরে ফিরতে চাই না। একটা সামান্য ভুল সিদ্ধান্ত বা ভুল, খেলার ফলই বদলে দিতে পারে। আমরা সতর্ক হয়ে নামব।’’ হাবাসের সুবিধে তাঁর দলে আক্রমণাত্মক ফুটবলারের সংখ্যা অনেক। রয় কৃষ্ণ, ডেভিড উইলিয়ামস, জাভি হার্নান্ডেজ, প্রবীর দাশ, সোসাইরাজরা তো রয়েছেনই। জবি জাস্টিন, বলবন্ত সিংহেরাও রিজার্ভ বেঞ্চে অপেক্ষায় থাকবেন গোলের জন্য। আনাস-প্রণয়রা না থাকায় হাবাস কী ভাবে রক্ষণ সাজাবেন, তা নিয়ে প্রবল কৌতূহল রয়েছে দলের অন্দরেই।
নেস্তরদের পেয়ে হায়দরাবাদ কোচ পল ব্রাউন যে পয়েন্ট পাওয়ার জন্য নানা রকম অঙ্ক কষতে শুরু করেছেন, তা কোচের কথাতেও স্পষ্ট। পল ব্রাউন বলে দিয়েছেন, ‘‘এটিকে-র ফুটবলারেরা হৃদয় দিয়ে খেলে। কিন্তু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, বল পজেশনে কখনও হাবাসের দল প্রতিপক্ষকে টপকে যায়নি। ৪২-৪৩ ভাগ বল দখলে রেখেছে প্রতিপক্ষই। আমরা যদি সেই সুযোগটা কাজে লাগাতে পারি তা হলে এটিকে সমস্যায় পড়বে।’’ দেখার, হাবিব-আকবরের শহরে গিয়ে জয়ের সরণিতে প্রীতম কোটাল-প্রবীর দাশেরা ফিরতে পারেন কি না?
শনিবার আইএসএলে: হায়দরাবাদ এফসি বনাম এটিকে (সন্ধে ৭.৩০, স্টার স্পোর্টস টু)।