নজরে: ইশান্ত (বাঁ দিকে) বাইরে। ইলেকট্রিক স্কুটারে জাডেজা। টেস্টে খেলতে পারেন। ফাইল চিত্র, এপি
ক্রাইস্টচার্চের সবুজ পিচের চেয়েও বেশি আতঙ্ক সৃষ্টি করতে পারে, এমন জিনিসের সন্ধান পেয়েছেন বিরাট কোহালিরা। সদ্য বাবা হয়ে নিউজ়িল্যান্ড দলে ফেরা বাউন্সার বিশেষজ্ঞ নিল ওয়্যাগনার নন, কোহালিদের রাতের ঘুম কেড়ে নিচ্ছে তাঁদের নিজের দেশের এক ‘বোলার’— বেঙ্গালুরুর জাতীয় অ্যাকাডেমি। একের পর এক ‘বাউন্সারে’ ভারতীয় বোর্ডের ক্রিকেট অ্যাকাডেমিই ক্রমশ কঠিন করে দিচ্ছে কোহালির দলের জীবন।
যে ক্রিকেটার এক বার সেখানে ঢুকছেন, তিনি আর আগের চেহারায় ফিরছেন না। প্রায় বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের মতো রহস্যজনক ভাবে হারিয়ে যাচ্ছেন। ঋদ্ধিমান সাহা থেকে পাণ্ড্য ভাইয়েরা, কেদার যাদব, ভুবনেশ্বর কুমার— গত এক বছরে জাতীয় অ্যাকাডেমির ‘শিকার’ অনেকেই। কেউ চোট নিয়ে এখনও ভুগছেন, কারও কেরিয়ার শেষ হওয়ার উপক্রম হয়েছে, কারও আবার কানের পাশ দিয়ে তির বেরিয়ে গিয়েছে।
তালিকায় নতুন সংযোজন ইশান্ত শর্মা। ডান পায়ের পাতার চোটের জন্য জাতীয় দলের বাইরে ছিলেন ইশান্ত। সদ্য ফিট ঘোষণা করে তড়িঘড়ি তাঁকে প্রথম টেস্টের আগে পাঠানো হল। দিল্লির পেসার ওয়েলিংটনে খেললেনও। কিন্তু ফের একই চোটে তিনি দ্বিতীয় টেস্ট থেকে ছিটকে যাওয়ার মুখে। প্রশ্ন উঠছে, ইশান্তকে তা হলে ফিট সার্টিফিকেট দেওয়া হল কী ভাবে? সব চেয়ে আশ্চর্যের হচ্ছে, ইশান্ত বল করেছিলেন প্রথম ইনিংসে ২২.৩ ওভার এবং দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র এক ওভার। নিউজ়িল্যান্ড দশ উইকেটে জিতে যায়।
ইশান্তের যে ধরনের চোট, তা সারতে মোটামুটি সপ্তাহ ছয়েক লাগে। কিন্তু চার সপ্তাহ পেরিয়েই টেস্টের মঞ্চে নেমে পড়েন তিনি। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বেঙ্গালুরুর জাতীয় অ্যাকাডেমিতে পরীক্ষা নিয়েই ইশান্তকে ‘ফিট’ আখ্যা দেওয়া হয়। তার পরেই তিনি নিউজ়িল্যান্ড উড়ে যান এবং প্রথম টেস্টের আগে নেটে এক ঘণ্টা পনেরো মিনিট বল করেন। এখন পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে, পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার আগেই তাড়াহুড়ো করে তাঁকে টেস্টে ফেরানো হয়েছিল।
ক্রাইস্টচার্চের সবুজ পিচে ইশান্তের অনুপস্থিতি যে বড় ধাক্কা হতে যাচ্ছে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই। প্রথম টেস্টে তিনিই ছিলেন ভারতের সেরা বোলার। প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়ে তিনিই দলকে লড়াইয়ে রেখেছিলেন। তাঁর জায়গায় উমেশ যাদবকে খেলাতে হবে, যাঁর বিদেশে বোলিং রেকর্ড মোটেও ভাল নয়। দেশের মাঠে যতটা সফল উমেশ, ঠিক ততটাই তিনি সংগ্রাম করেন বিদেশে গেলে। প্রথম টেস্টে যশপ্রীত বুমরা এবং মহম্মদ শামি মোটেও তাঁদের সেরা ফর্মে ছিলেন না। এই অবস্থায় ইশান্তের ছিটকে যাওয়া ০-১ পিছিয়ে থাকা দলের জন্য বড় দুঃসংবাদ।
ওয়েলিংটন থেকে কোহালিদের প্রথম একাদশে আরও একটি বদল মোটামুটি নিশ্চিত। অশ্বিনের বদলে রবীন্দ্র জাডেজাকে খেলানোর দিকেই ঝুঁকে টিম ম্যানেজমেন্ট। জাডেজা ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং, তিনটি বিভাগেই অবদান রাখায় দক্ষ। যদিও নিউজ়িল্যান্ড চার পেসারে খেলতে পারে বলে ইঙ্গিত। বাউন্সার বিশেষজ্ঞ নিল ওয়্যাগনার ফিরছেন, ওয়েলিংটনে ভাল বল করা নবাগত কাইল জেমিসনকেও সম্ভবত খেলাবেন কেন উইলিয়ামসনেরা। অর্থাৎ, সবুজ পিচে ভারতীয় ব্যাটিংকে বডিলাইন আক্রমণের মুখেই ফেলার ব্যবস্থা পাকা। পৃথ্বী শ অবশ্য সুস্থ হয়ে গিয়েছেন এবং যা ইঙ্গিত, তিনিই ওপেন করবেন মায়াঙ্ক আগরওয়ালের সঙ্গে। শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলনে এসে হেড কোচ রবি শাস্ত্রীও বলে যান, পৃথ্বী সুস্থ। নেটেও হাজির ছিলেন তিনি। এবং, খুব নাটকীয় পট পরিবর্তন না ঘটলে এই টেস্টেও খেলছেন না ঋদ্ধিমান সাহা, খেলবেন ব্যাটিংয়ে এগিয়ে থাকা ঋষভ পন্থ-ই!