বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে ইতালির জালে বল জড়িয়ে র্যামোসের সঙ্গে উচ্ছ্বাস জোড়া গোলের নায়ক ইস্কোর। ছবি: এএফপি
বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জনের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল স্পেন। শনিবার ভারতীয় সময় অধিক রাতে রিয়াল মাদ্রিদের ফরওয়ার্ড ফ্রান্সিসকো ইসকো আলারকনের দুরন্ত পারফরম্যান্সের উপর ভর করে তারা ৩-০ উড়িয়ে দিল ইতালির মতো হেভিওয়েট দলকে। ইসকো একাই করলেন দু’গোল। অন্য গোলটি করেন পরিবর্ত হিসেবে নামা আলভারো মোরাতা।
বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে এই ম্যাচের আগে ১১ বছর ধরে ৫৬ ম্যাচে অপরাজিত ছিল ইতালি। সেই স্বপ্নের দৌড় থেমে গেল স্পেনের ঝড়ের সামনে। ‘‘দুর্ধর্ষ এক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আমরা দারুণ ফুটবল খেলেছি,’’ বলেছেন স্পেনের কোচ জুলেন লোপেতেগুই। উচ্ছ্বসিত তিনি যোগ করছেন, ‘‘আমরা জানতাম, এই ম্যাচটা খুব কঠিন। ছেলেরা দারুণ ভাবে চাঙ্গা হয়ে উঠেছিল। আমরা এই ফলাফলে খুশি কিন্তু এটাও মনে রাখছি যে, এখনও আমরা যোগ্যতা অর্জন করিনি।’’ গ্রুপে এখনও তিনটি ম্যাচ বাকি রয়েছে স্পেনের। জুলেন তাই বলছেন, ‘‘শেষ তিনটি ম্যাচেও জিতে কাজটা সম্পূর্ণ করতে হবে।’’
ইউরোপ থেকেপ্রত্যেক গ্রুপের চ্যাম্পিয়নরা সরাসরি পরের বছরের রাশিয়া বিশ্বকাপের জন্য যোগ্যতা অর্জন করে যাবে। রানার্স প্লে-অফ খেলার সুযোগ পাবে। প্লে-অপে জিতে রাশিয়ার টিকিট অর্জন করতে হবে তাদের। সে দিক দিয়ে দেখতে গেলে ইতালিকে বড় ব্যবধানে হারানোটা স্পেনকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে দিল। গ্রুপ ‘জি’-র এই ম্যাচে শুরু থেকেই আধিপত্য দেখাল স্পেন। দু’টো দলেরই বিশ্বকাপ কোয়ালিফাইং রাউন্ডে অবিশ্বাস্য রেকর্ড রয়েছে। এই ম্যাচের আগে ইতালি ২০০৬ থেকে কখনও বিশ্বকাপ বা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে কখনও কোনও ম্যাচ হারেনি। আর স্পেন শেষ বার বিশ্বকাপ কোয়ালিফায়ার্সের ম্যাচ হেরেছিল ১৯৯৩ সালে। শনিবার জেতার পরে বিশ্বকাপের কোয়ালিফায়ার্সে তারা অপরাজিত থাকল ৬০ ম্যাচ ধরে।
ম্যাচের শুরুর দিকেই ফ্রি-কিক থেকে ইতালির বহু যুদ্ধের প্রহরী জিয়ানলুইগি বুফনকে পরাস্ত করেন ইসকো। হাফটাইমের ঠিক আগে ইতালির ডিফেন্সকে তিনি ফের বোকা বানান একটি জোরাল, নিচু শটে। দ্বিতীয়ার্ধে ৩-০ করেন সাবস্টিটিউট মোরাতা। গ্রুপের শীর্ষে থাকা স্পেনের এখন ১৯ পয়েন্ট। ইতালির চেয়ে তারা ৩ পয়েন্টে এগিয়ে গেল, তৃতীয় স্থানে থাকা আলবানিয়ার চেয়ে তারা এগিয়ে ৭ পয়েন্টে।
অন্য দিকে, গ্রুপ ‘ডি’ ম্যাচে গ্যারেথ বেলের ওয়েলস ১-০ হারিয়েছে অস্ট্রিয়াকে। নির্বাসিত থাকার পরে মাঠে ফিরে বেল তাঁর জাদু দেখালেন। ইনজুরি টাইমে একটি দর্শনীয় ‘সিজর্স কিক’-ও মারেন তিনি। যদিও বেল গোল পাননি। ওয়েলসের রক্ষাকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হন ১৭ বছরের বেঞ্জামিন উডবার্ন। পরিবর্ত হিসেবে নেমে ২৫ মিটারের জোরাল ডান পায়ের শটে তিনিই দলের একমাত্র গোলটি করেন। এই গ্রুপে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে সার্বিয়া। মিজাত গাসিনোভিচ এবং আলেকজান্ডার কোলারভের গোলে তারা হারাল মলদোভাকে। ২ পয়েন্ট পিছনে রয়েছে আয়ার্ল্যান্ড। ১১ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে রয়েছে বেলের ওয়েলস।
গ্রুপ ‘আই’-তে আন্দ্রেই ইয়ারমোলেঙ্কো তাঁর ৭০তম ম্যাচের উৎসব ভাল মতোই পালন করলেন সার্বিয়াকে জিতিয়ে। ২-০ জয়ে দু’টি গোলই তাঁর। তুরস্ককে হারিয়ে গ্রুপের শীর্ষে চলে এল সার্বিয়া। পিছিয়ে গেল বিশ্ব ফুটবলের নতুন চমক আইসল্যান্ড। তারা ০-১ হেরে যায় ফিনল্যান্ডের কাছে।