চর্চায়: দুই মেরুতে দুই অধিনায়ক বিরাট কোহালি ও জো রুট। ফাইল চিত্র।
বিরাট কোহালির অতি-আগ্রাসী ভঙ্গি নিয়ে চর্চা অব্যাহত ক্রিকেটবিশ্বে। তাঁর নেতৃত্বে ভারতীয় দলের প্রত্যেক সদস্যের মানসিকতায় আমূল পরিবর্তন হয়েছে। হারার আগে হারছে না। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলেও ম্যাচে ফিরে আসার আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছে।
অথচ ইংল্যান্ড অধিনায়ক জো রুটের মানসিকতা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে সে দেশের সংবাদমাধ্যমে। অনেকে মনে করছেন, ভারতীয় অধিনায়কের সামনে ম্লান দেখাচ্ছে রুটকে। অতি-আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে হারতে থাকা ম্যাচও যে জেতা সম্ভব, তা বিরাট দেখিয়েছেন লর্ডসে। স্বাভাবিক ভাবেই শুরু হয়েছে দুই অধিনায়কের তুলনা।
প্রাক্তন ইংল্যান্ড অধিনায়ক নাসের হুসেন নিজের কলামে লিখেছেন, রুটের থেকে আরও আগ্রাসী মনোভাব দেখতে চান তিনি। আর একটি ম্যাচ জিতলেই টেস্টে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে সফল অধিনায়কের মুকুট উঠবে রুটের মাথায়। নাসের চান, তা যেন ঘটে হেডিংলেতেই।
লর্ডস টেস্ট চলাকালীন প্রাক্তন ইংল্যান্ড ক্রিকেটার ডেভিড লয়েড বলেছিলেন, ‘‘বিরাট জানে, কখন আগ্রাসন দেখাতে হয়। রুটও শিখুক, কখন আগ্রাসী হলে লাভবান হবে দল।’’ নাসের হুসেনের বক্তব্যেও সেই সুরের প্রতিধ্বনি শোনা গিয়েছে। লিখেছেন, ‘‘রুটকে বুঝতে হবে, ইংল্যান্ডের অধিনায়ক হওয়ার অর্থ জনপ্রিয়তা বাড়ানো নয়। ভদ্রতার খোলস ছেড়ে ওকে বেরিয়ে আসতে হবে। বিপক্ষ যাতে আমাদের উপরে চেপে বসতে না পারে, সেটাও খেয়াল রাখতে হবে।’’
অন্য দিকে, মঙ্গলবার ম্যাচের আগের দিন ‘ভার্চুয়াল’ সাংবাদিক বৈঠকে বিরাট বলছিলেন, ‘‘ওরা প্ররোচিত করার চেষ্টা করলে আমরাও পিছপা হব না। অনেক সময় এ ধরনের প্ররোচনা দলকে আরও চাঙ্গা হতে সাহায্য করে।’’ বিরাট যদিও বলতে চাননি, কী বলে তাঁদের উত্তেজিত করা হয়েছিল লর্ডস টেস্টে। জানিয়েছেন, মাঠে যা ঘটেছে তা নিয়ে বাইরে মুখ খুলবেন না।
প্রথম দু’টেস্টের পরে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে, মাঠে কোন অধিনায়কের আগুনে মেজাজ আর কে চুপচাপ, শান্ত থাকেন। ইংল্যান্ডের প্রাক্তনরা রুটের এই শীতল আচরণ মেনে নিতে পারছেন না। প্রয়োজন হলে কোচ ক্রিস সিলভারউডকেও দায়িত্ব নিয়ে দলের মানসিকতা পাল্টানোর পরামর্শ দিয়েছেন নাসের।
ভারতীয় ক্রিকেটে অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের যুগ শুরু হওয়ার পর থেকে বিদেশের মাঠে পাল্টে যেতে শুরু করে ক্রিকেটারদের মনোভাব। বিপক্ষের চোখে চোখ রেখে লড়তে শেখান তিনি। সেই সরণি ধরে এগিয়ে আসা বিরাট যেন
আদর্শ উত্তরসূরি।
দু’দলের ওপেনারদের মধ্যেও যেন প্রতিফলিত হয়েছে দলের মানসিকতা। রোহিত শর্মা-কে এল রাহুল যেখানে লড়াই করেছেন, ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার সহজেই করেছেন আত্মসমর্পণ। যে কারণে বাধ্য হয়ে ইংল্যান্ডকে বদলাতে হচ্ছে ওপেনিং জুটিও। বিরাট মনে করেন, ভারতের সাফল্যের অন্যতম কান্ডারি তাঁদের দুই ওপেনার। বলছিলেন, ‘‘রোহিত ও রাহুল যে ভাবে ইনিংস শুরু করেছিল, তা এক কথায় অসাধারণ। আমাদের সাফল্যের অন্যতম কান্ডারি ওপেনারেরা। ওদের দায়িত্বশীল ইনিংসই দলের মনোবল বাড়াতে সাহায্য করেছে।’’
তৃতীয় টেস্ট শুরুর আগের দিন পিচ দেখেও অবাক বিরাট। ঘাস প্রায় নেই বললেই চলে। সাহায্য পেতে পারেন স্পিনাররাও। ইংল্যান্ড কি তা হলে ভারতীয় পেস আক্রমণ সামলাতে এখন ভয় পাচ্ছে? উঠছে এই প্রশ্নও।