আম্পায়ার স্টিভ বাকনরকে একহাত নিলেন ইরফান পাঠান। —ফাইল চিত্র।
২০০৮ সালের সিডনি টেস্টে একের পর এক ভুল করেছিলেন আম্পায়ার স্টিভ বাকনর। যার মাসুল দিতে হয়েছিল ভারতকে। সম্প্রতি সেই ভুলগুলোর কথা স্বীকার করেছেন বাকনার। কিন্তু বাকনার স্বীকার করলেও সেই ভুলগুলোর জন্য তাঁকে ক্ষমা করা যায় না বলে মন্তব্য করলেন ইরফান পাঠান।
সেই টেস্টের পর এক যুগ কেটে গিয়েছে। কিন্তু সেই টেস্টের ক্ষত এখনও টাটকা ইরফানের মনে। তিনি বলেছেন, “যতই ভুলের কথা এখন স্বীকার করা হোক, যা ঘটে গিয়েছে তা তো আর বদলানো যাবে না। আমরা সেই টেস্ট হেরেছিলাম। মনে আছে, অস্ট্রেলিয়ায় জীবনের প্রথম টেস্ট জিতেছিলাম। সেটা ছিল ২০০৩ সালের অ্যাডিলেড টেস্ট। অস্ট্রেলিয়াতে সেটা ছিল ২২ বছর পর টেস্ট জয়। আর ২০০৮ সালে কি না আম্পায়ারের ভুলের জন্য টেস্ট হারতে হয়েছিল! এখন যাই বলুন আম্পায়াররা, সেই ক্ষত থেকেই যাবে।”
আরও পড়ুন: ‘আইসিসি প্রধান হওয়ার আদর্শ ব্যক্তি সৌরভই’, স্মিথের পাশে দাঁড়িয়ে বললেন সঙ্গাকারা
আরও পড়ুন: পুড়িয়ে দেওয়া গরমে আইপিএলের আমিরশাহি স্মৃতি এখনও টাটকা তিন বঙ্গসন্তানের
সেই টেস্টে বাকনারের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসকে ৩০ রানে কট বিহাইন্ড না দেওয়া। সাইমন্ডস শেষ পর্যন্ত করে যান ১৬২ রান। আর ভারত টেস্ট হেরেছিল ১২২ রানে। ইরফান বলেছেন, “আমরা প্রায়শই বাজে সিদ্ধান্তের শিকার হই। কখনও বোলিংয়ে, কখনও ব্যাটিংয়ে। হতাশা এলেও একসময় আমরা তা ভুলে যাই। কিন্তু, এই সিডনি টেস্টে কোনও একটা ভুলের খেসারত দিতে হয়নি আমাদের। গোটা সাতেক ভুল সিদ্ধান্তের শিকার হতে হয়েছিল। আমার যত দূর মনে পড়ছে, বার তিনেক আউট ছিল সাইমন্ডস। কিন্তু আম্পায়ারের আঙুল ওঠেনি।”
ইরফানের কথায়, “সাইমন্ডস ম্যাচের সেরা হয়েছিল সিডনি টেস্টে। কিন্তু সাইমন্ডসের বিরুদ্ধে যদি একটা ঠিক সিদ্ধান্তও নেওয়া হত, তবে আমরা সহজেই জিতে যেতাম। আর তাই ব্যাপারটা শুধু হতাশাতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। এই প্রথম বার ভারতীয় ক্রিকেটারদের ক্রুদ্ধ দেখেছিলাম। সমর্থকরা মনে করেছিলেন, আম্পায়ারদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই এটা করেছে। ক্রিকেটার হিসেবে আমরা যদিও তা মনে করিনি। আমরা ভেবেছিলাম, এমন ঘটনা ঘটে থাকে। আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। কিন্তু, তার পরও সাতটা ভুল হবে? এটা কি ছেলেখেলা? একেবারেই অবিশ্বাস্য লেগেছিল। আমরা যা কোনও ভাবেই হজম করতে পারছিলাম না।”
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেই টেস্ট সিরিজ ১-২ হারতে হয়েছিল ভারতকে। সিডনি টেস্টে আম্পায়ারের ভুলের জন্য হারতে না হলে ভারত টেস্ট সিরিজ জিততেও পারত। সিডনি টেস্ট আবার ‘মাঙ্কিগেট’ কাণ্ডের জন্য বিখ্যাত। যার পরিপ্রেক্ষিতে একসময় সফরের মাঝপথে ভারতের দেশে ফিরে আসার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল ক্রিকেটারদের। দুই দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে সম্পর্ক ঠেকেছিল তলানিতে। অনিল কুম্বলের নেতৃত্বে ভারত অবশ্য পারথে পরের টেস্ট জিতেছিল।