গম্ভীরের উপর রাগ না কমলেও সৌরভের প্রতি কি রাগ কমেছে কোহলির? —ফাইল ছবি।
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিরাট কোহলির বেশ কিছু দিন ধরেই অম্ল-মধুর সম্পর্ক চলছে। দিল্লি ক্যাপিটালস এবং রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের প্রথম সাক্ষাতে কোহলিকে এড়িয়ে গিয়েছিলেন সৌরভ। পরে পরস্পরকে সমাজমাধ্যমে ‘আনফলো’ করে দেন। সেই ঘটনার পর গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে কোহলির ঝগড়া ভারতীয় ক্রিকেটের চর্চার কেন্দ্রে উঠে আসে। তাই শনিবারের ম্যাচে বাড়তি নজর ছিল ক্রিকেটপ্রেমীদের।
এ দিন অবশ্য তেমন কিছু আর ঘটেনি। খেলা শেষ হওয়ার পর কোহলির সঙ্গে হাত মেলাতে দেখা গিয়েছে সৌরভকে। সে সময় দেখে মনে হয়নি দু’জনের মধ্যে কোনও সমস্যা রয়েছে। সৌরভের সামনে কোহলিকেও শান্ত দেখিয়েছে। যদিও দিনের শুরুটা এমন ছিল না। ঘরের মাঠে দিল্লির বিরুদ্ধে কোহলি খেলতে নামার আগে গম্ভীরের নামে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে চিঠি লিখে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। দুই প্রাক্তন ক্রিকেটারের সঙ্গে কোহলির শীতল সম্পর্ক নিয়ে ভারতীয় ক্রিকেট যখন সরগরম তখন, দিল্লি-বেঙ্গালুরু ম্যাচের পর নতুন করে আর উত্তেজনা সৃষ্টি না হওয়ায় স্বস্তি পেয়েছেন ক্রিকেটপ্রেমীরাও। শনিবার দিল্লির মাঠে কোহলির আগ্রাসী মেজাজও খুব বেশি দেখা যায়নি।
বিসিসিআইকে লেখা চিঠিতে বিরাট জানিয়েছেন যে, বোর্ড তাঁর ১০০ শতাংশ ম্যাচ ফি কেটে নেওয়াতে তিনি খুশি নন। সেই সঙ্গে বিরাট জানিয়েছেন, তিনি এমন কিছু বলেননি গম্ভীরকে যার জন্য এত বড় শাস্তি দেওয়া হল। আইপিএলে লখনউ সুপার জায়ান্টস বনাম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর ম্যাচে ভারতের প্রাক্তন অধিনায়কের সঙ্গে বচসা হয় গৌতম গম্ভীরের।
১ মে লখনউয়ে খেলা ছিল আরসিবি এবং এলএসজি-র। এই দুই দল বেঙ্গালুরুতেও খেলেছিল। সে বার গম্ভীর ঠোঁটে আঙুল দিয়ে দর্শকদের চুপ করতে বলেছিলেন। জয়ের পর আগ্রাসী ভাবে উল্লাস করতে থাকেন গম্ভীর। যা ছিল বেশ চোখে লাগার মতো। লখনউয়ে খেলতে এসে বিরাটও পাল্টা দিতে থাকেন। ম্যাচ শেষে উত্তেজনা আরও বাড়ে। লখনউয়ের কাইল মেয়ার্স কথা বলছিলেন বিরাটের সঙ্গে। সেই সময় লখনউ দলের মেন্টর গম্ভীর এসে মেয়ার্সকে সরিয়ে নিয়ে যান। সেখান থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে শুরু করে। গম্ভীর চলে যেতে গিয়েও ফিরে আসেন। তাঁকে আটকে দেন লোকেশ রাহুল। কিন্তু তাঁকে সরিয়ে দিয়ে মারমুখী ভঙ্গিতে এগিয়ে যান গম্ভীর। উল্টো দিক থেকে আসেন বিরাটও। তিনিও উত্তপ্ত ভাবে কথা বলতে থাকেন। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে বুঝতে পেরে দুই দলের বাকি ক্রিকেটাররা তাঁদের সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন।
কী কথা হয়েছিল বিরাট এবং গম্ভীরের? তা-ও ফাঁস হয়ে যায়। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, সে দিন কী ঝামেলার সময় কী কথা হয়েছিল কোহলি এবং গম্ভীরের। গম্ভীরই আগে কোহলির উদ্দেশে বলেন, ‘‘কী বলছিস বল।’’ জবাবে কোহলি বলেন, ‘‘আমি আপনাকে কিছু বলিইনি। আপনি কেন শুধু শুধু এর মধ্যে ঢুকছেন।’’ এর পর গম্ভীর বলেন, ‘‘তুই আমার কোনও খেলোয়াড়কে বলেছিস মানে তুই আমার পরিবারকে গালাগালি দিয়েছিস।’’ এর জবাবে কোহলি বলেন, ‘‘তা হলে আপনি আপনার পরিবারকে সামলে রাখুন।’’ কোহলির উত্তর শুনে গম্ভীর আবার বলেন, ‘‘তা হলে এখন তুই আমাকে শেখাবি?’’ এই ঘটনায় ম্যাচ ফি-র পুরোটাই জরিমানা হয় বিরাটের। একই শাস্তি পেতে হয় গম্ভীরকেও।