সমাজমাধ্যমেও রীতিমতো ঝড় তুলে দিয়েছেন কোহলি। ফাইল ছবি।
সোমবার কলকাতায় পা দেওয়ার পর থেকে কেড়ে নিয়েছেন যাবতীয় আকর্ষণ। মঙ্গলবার ই়ডেনে বিরাট কোহলির অনুশীলন দেখার অপেক্ষায় ছিলেন ভক্তেরা। কিন্তু তাঁদের হতাশই হতে হল। ঐচ্ছিক অনুশীলন বলে মাঠেই এলেন না রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর তারকা। তবে মঙ্গলবার সন্ধায় আরসিবির তিন সতীর্থ ফ্যাফ ডুপ্লেসি, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও মহম্মদ সিরাজকে নিয়ে হো চি মিন সরণিতে নিজের রেস্তরাঁয় সময় কাটালেন কোহলি।
পুলিশ সূত্র অনুযায়ী সন্ধ্যা ৭টায় আরসিবির তিনটি গাড়িতে কোহলিরা রেস্তরাঁয় আসেন। রাত পৌনে ১১টা পর্যন্ত সেখানেই চলে তাঁদের উৎসব। এক পুলিশকর্তা বলছিলেন, ‘‘বিরাটদের দেখা মাত্রই রেস্তরাঁয় উপস্থিত লোকজন উল্লাসে ফেটে পড়েন। তাঁদের আবদার মেটানোর জন্য নিজস্বীও তুলতে হয় চার তারকাকে। তাঁদের অটোগ্রাফও দিয়ে যান তাঁরা।’’
এ দিন সমাজমাধ্যমেও রীতিমতো ঝড় তুলে দিয়েছেন কোহলি। ক্রিকেটবিশ্ব এতদিন দেখেছে তাঁর ব্যাটের শাসন। ‘কবি’ বিরাটের কোহলির আত্মপ্রকাশ ঘটল এ বার। মঙ্গলবার রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে সমাজমাধ্যমে। যেখানে দেখা যায় সঞ্চালক ‘মিস্টার নাগস’ ওরফে জনপ্রিয় কৌতুকশিল্পী দানিশ সইটকে কবিতার মাধ্যমে নিজের জীবনদর্শন ব্যাখ্যা করছেন তিনি।
কোহলির সামনে চারটি শব্দ রেখে দিয়েছিলেন দানিশ। সেই চারটি শব্দ হল ‘ট্রিপ (হোঁচট খাওয়া)’, ‘টাইড (প্রবাহ)’, ‘ম্যান (মানব)’ এবং ৪৯। তাঁকে বলা হয়, এই চারটি বিষয়কে একত্রিত করে নিজস্ব দর্শন প্রকাশ করতে। হাসিমুখে নিজের মনোভাব কবিতার মাধ্যমে স্পষ্ট করে দেন তিনি।
কী লিখলেন কোহলি? তিনি লেখেন ‘‘নিজের ইচ্ছাগুলো পূরণ করুন, মনের মধ্যে জ্বালিয়ে রাখুন আগুন। কঠিন সময়ে ব্যাটিং করে যান। কখনও সেটা হতে পারে ২৬৩, আবার কখনও বা ৪৯। জীবন আপনাকে ফেলতে পারে কঠিন এক পরিস্থিতির মধ্যে। তাকে হেসে উড়িয়ে দিন। শতরান করুন বা শূন্য, জীবন থেমে থাকে না। তা চলতেই থাকে। এই প্রবাহের সঙ্গে এগিয়ে চলার জন্য নেই মানচিত্র। নিজেকেই নিজের পথপ্রদর্শক হতে হয়।’’
চারমূর্তি: ফ্যাফ, ম্যাক্সওয়েল ও সিরাজের সঙ্গে বিরাট। নিজস্ব চিত্র।
সাক্ষাৎকারে বিরাট বলেছেন, ‘‘আমি আপনাদের একটা উপদেশ দিতে চাই। কখনও নিজের প্রত্যাশার কথা কাউকে বলবেন না। সেটা নিজের মধ্যেই রাখুন। একবার সেটা সবাইকে বলে দিলে দেখবেন তা দাবি বা চাহিদায় পরিণত হয়েছে।’’ তিনি জানিয়েছেন, গত কয়েক বছর তীব্র মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে চলতে হয়েছিল। তাঁর কথায়, ‘‘এমন একটা অবস্থা তৈরি হয়েছিল, যে হোটেলে থাকতাম তার সৌন্দর্যও উপভোগ করার মতো অবস্থা ছিল না। মানসিক ভাবে এখন খুব ভাল জায়গায় রয়েছি। আমার চারপাশে যা কিছু রয়েছে, তাদের সৌন্দর্য অনুভব করছি। এ ভাবেই এগিয়ে যেতে চাই।’’
কথাপ্রসঙ্গে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে নিজের ইনিংস নিয়ে বিরাট বলেছেন, ‘‘আমার নিজেই বিস্মিত হয়ে গিয়েছিলাম। তবে এমন একটা ইনিংস খেলে আমিও রোমাঞ্চিত। এ ভাবেই আমাদের প্রত্যেকটি ম্যাচ ধরে খেলতে হবে। মু্ম্বইয়ের মতো দলকে হারানোর পরে সকলেই মানসিক ভাবে চাঙ্গা হয়ে রয়েছে।’’
কোহলি জানিয়েছেন, ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি ক্রিকেটে খেলার বিশেষ একটা চাপ রয়েছে। সেটাকে সামলে চলা মাঝেমধ্যে কঠিন হয়ে পড়ে। তাঁর মন্তব্য, ‘‘ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি ক্রিকেটে খেলার চাপ রয়েছে। আমরা এখনও পর্যন্ত ট্রফি জিততে পারিনি বলে অনেকেই এই দলকে বিদ্রুপ করে। কিন্তু আমরাও বড় দল। অনেকেই আমাদের হাল্কাচ্ছলে দেখলেও সেটা কিন্তু নই।’’ পরে মজা করে বলেন, ‘‘সমাজমাধ্যমে আমাদের দলকে নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের যে আগ্রহ রয়েছে, তা ঈর্ষাদায়ক। সেখানে ট্রফি জেতার সুযোগ থাকলে চার-পাঁচ ম্যাচ আগে আমরাই ট্রফি তুলতাম।’’
এ দিকে, আবারও বড় ধাক্কা খেল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। গোড়ালির চোটের জন্য আইপিএল থেকে ছিটকে গেলেন রজত পাটীদার। দলের পক্ষ থেকে তা জানানো হয়।