সফল: ওপেনার সুনীল নারাইন এখন বিপক্ষের ত্রাস। ফাইল চিত্র
ভাবতে অদ্ভুত লাগছে, দিন কয়েক আগেই আমি বলেছিলাম অল্প রানের ম্যাচগুলোর আলাদা আকর্ষণ আছে। তার ঠিক পরেই রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের সঙ্গে আমাদের ম্যাচটা হল। আগেই বলে দিচ্ছি, আমি কিন্তু কোনও ভবিষ্যদ্বাণী করিনি সে দিন।
আসলে আমি সে সব পিচের কথা বলতে চাইছিলাম, যেখানে বোলাররা সাহায্য পাবে। আর ব্যাটসম্যানরা শুধু চালিয়ে খেলেই রান করতে পারবে না। এ সব পিচে রান তোলা কঠিন হবে আর রান করতে গেলে টেকনিকের প্রয়োজন হবে। ইডেনের পিচে কিন্তু আদৌ কোনও সমস্যা ছিল না। গড়পরতা ভারতীয় পিচের থেকে একটু গতি আর বাউন্সটা বেশি ছিল, এই যা। তবে হ্যাঁ, ইডেনের পিচে সাধারণত এর আগে যা দেখা গিয়েছে, তার থেকে বেশিই। তবে এমন কিছু নয়, যে মোটামুটি টেকনিক জানা থাকলে সামলানো যাবে না।
সত্যি কথাটা হল, দু’টো টিমই খারাপ ব্যাটিং করেছে। ইনিংসের মাঝপথে আমি কিন্তু রীতিমতো চিন্তিত হয়ে পড়েছিলাম। তখন তো আমরাই আন্ডারডগ ছিলাম।
এর মধ্যে কিন্তু আলাদা করে সুনীল নারাইনের কথা বলতেই হবে। ও আবার ওপেন করতে নেমে দুর্দান্ত একটা ইনিংস খেলে দিল। ১৭ বলে ৩৪! কোন সময়, না যখন আমাদের টিমের আর কেউ কুড়ির ওপর রান করতে পারেনি। আর ওদের টিমের কেউ ১০ রানও টপকাতে পারেনি। বছর দু’য়েক আগে নারাইনের ক্রিকেট কেরিয়ারই সঙ্কটে পড়ে গিয়েছিল। অ্যাকশন বদলাতে হয় ওকে। সেই সঙ্কট থেকে যে বেরিয়ে আসার মতো মানসিক কাঠিন্য দেখাতে পেরেছে, তার কাছে ওপেন করতে নামা কী আর এমন বড় চ্যালেঞ্জ!
আরও পড়ুন...
কুল্টার নাইলকে ছাড়া নামবে কেকেআর
তবে নারাইন যে ব্যাটসম্যান হিসেবে খারাপ নয়, তার ইঙ্গিত কিন্তু আগেই পাওয়া গিয়েছিল। পাকিস্তান সুপার লিগে প্রচুর ছয় মেরে এসেছে ও। বিগ ব্যাশে ওপেন করেছে। এখানে সুযোগটা পেয়ে দুর্দান্ত ভাবে কাজে লাগিয়েছে। তবে এটা বলতে বাধ্য হচ্ছি, সানি নারাইনের এই ধারাবাহিকতা আমাদের অবাক করে দিয়েছে।
ক্যারিবিয়ানে উইন্ডবলে (নরম প্ল্যাস্টিকের বল) ক্রিকেট খেলার সময় আক্রমণাত্মক ব্যাটিংটা শিখেছিল ও। কিন্তু ওখানে নরম বলে কংক্রিটের পিচে খেলা এক জিনিস আর আইপিএলে মাঠ ভর্তি দর্শকের সামনে ব্যাট করাটা আর এক জিনিস। এ সেই রূপকথা যা ক্রিকেট মাঝে মাঝেই উপহার দেয়।
আরসিবি-র সঙ্গে আমাদের ব্যাটিং যদি সাধারণ মানের হয়ে থাকে, তা হলে বোলিংটা কিন্তু অসাধারণ হয়েছিল। আমরা যে প্ল্যানটা করে নেমেছিলাম, সেটা ঠিকঠাক কাজে লাগাতে পেরেছি। আমরা চেয়েছিলাম উইকেট তুলতে, ডট বল করতে নয়।
এ বার সামনে পুণে। ওরা ভাল ছন্দে রয়েছে। ওদের টিমে বিশাল নামী-দামি (আক্ষরিক অর্থেই) প্লেয়ার আছে। ঘরের মাঠে ওদের হারানো সহজ নয়। বেন স্টোকস আর এমএসডি যা ইচ্ছে তাই করতে পারে এবং করছেও। আবার আমাদের সেরাটা বার করে আনতে হবে পুণেকে হারাতে হলে। তবে ভাগ্য ভাল, এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টে আমরা সেই কাজটা করতে পারছি।