অভিবাদন: তাঁকে দেখে ইডেনের দর্শক মাতল। কিন্তু জয় পেল না শাহরুখ খানের নাইটরা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
মন খারাপ করা ঘরমুখী জনতাকে ফের মাঠের দিকে টেনে নিয়ে এলেন তিনি। গ্যালারি যদিও তখন অর্ধেক ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল। একটু আগেই গৌতম গম্ভীরদের অসহনীয় হার সহ্য করতে হয়েছে। তিনি মাঠে নামতেই সবাই খুশি।
শাহরুখ ‘বাদশা’ খান, কেকেআরের সবচেয়ে বড় ‘দিওয়ানা’।
প্রায় ফাঁকা গ্যালারি তো কী, কুছ পরোয়া নেহি। ইডেনের দর্শকদের ধন্যবাদ দিতে সারা মাঠ প্রদক্ষিণ শুরু করে দিলেন তিনি। সঙ্গে ছোট্ট আব্রাম। আগের বছর ইডেন যেমন খুদেটি দেখেছিল আব্রামকে, এখন আর তেমন নেই। তবে ইডেনে তাঁর খ্যাতি এখনও তেমনই। তাই বিখ্যাত বাবার সঙ্গে সে-ও কম অভিবাদন পেল না ইডেন গ্যালারি থেকে। সারা মাঠও ছুটে বেড়াল।
শাহরুখ-আব্রামের এই আকস্মিক ইডেন প্রদক্ষিণ হয়ে উঠতে পারত দলের ভিক্ট্রি ল্যাপ। কিন্তু সে আর হল কই? এক বা দু’নম্বর দল হয়ে তো আর প্লে অফে যাওয়া হল না তাঁর দলের। তবু প্লে অফে ওঠার আনন্দটাই ভাগ করে নিলেন বাদশা। কিন্তু দুর্ভাগ্য ইডেনের দর্শকদের, তাঁরা বেশিরভাগই দেখতে পেলেন না এই কিংগ খানকে।
সন্ধ্যায় ভরা ইডেনের উদ্বেগ কাটাতে অবশ্য অনেকটাই সময় নেন এ দিন শাহরুখ। বৃষ্টিস্নাত ইডেনে স্বস্তির ঠাণ্ডা হাওয়া দিলে কী হবে, গ্যালারির প্রায় ৬২ হাজার জোড়া চোখ তাকিয়ে ছিল ক্লাব হাউসের ডান দিকে কেকেআর কর্পোরেট বক্সের সামনের বারান্দার দিকে। কখন তিনি আসবেন।
এ ভাবেই চলল প্রায় ন’ওভার। ইডেন গ্যালারির উদ্বেগ যখন চরমে, তিনি কি আসবেন? শাহরুখ খানের উদয় হবে তো আদৌ ইডেনে? প্রশ্ন যখন প্রায় সবার মনে, তখন তিনি এলেন। অবশেষে।
তিনি বারান্দায় এসে দাঁড়াতেই যেন ফের কালবৈশাখী ঝড় উঠল ইডেনে। জায়ান্ট স্ক্রিনে তাঁর ছবি ভেসে উঠতেই সারা গ্যালারিতে উঠল আওয়াজ, ‘শা..হ..রু..খ, শা..হ..রু..খ’। শুরু হল ‘শাহক্লোন’। এই শব্দব্রহ্ম যে তাঁর ‘ফ্যান’-দের, তা বুঝতে অসুবিধা কোথায়?
শনিবার যে সময় শহরের আকাশের মুখ ভার হওয়া শুরু সেই বিকেল সা়ড়ে তিনটে নাগাদ শাহরুখের ব্যক্তিগত বিমান নামে বিমানবন্দরে। সঙ্গে তাঁর স্ত্রী গৌরী ও দুই পুত্র আরিয়ান ও আব্রাম।
প্লে অফ দৌড়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে নাইটদের ‘ম্যায় হুঁ না’ বলতেই বোধহয় এই সফর দলের মালিকের। এ শহরের ভক্তদের ‘মহবব্বতেঁ’ পেতেও আসা তাঁর। তিনি এলেন, দেখলেন ও জয়ও করলেন। সন্ধ্যায় দল রওনা হওয়ার আগে বরাবরের মতো ক্রিকেটারদের পেপ টকও দেন তিনি। কিন্তু তাঁর ছেলেরা এতেও তাতলেন না।
রাতে ইডেনে খেলা শুরুর পর আসাটাই শাহরুখের নিয়ম। এ দিনও এলেন বেশ দেরিতে। ঘড়িতে তখন সোয়া ন’টা। কেকেআর বক্সে ঢুকে সোজা চেনা বারান্দায়। সেখানে তাঁর প্রিয় জায়গাটা হল বাঁদিকের কোণ। যখন সেখানে দাঁড়ালেন, তখন ইডেনের দর্শকরা প্রায় পাগল। কিন্তু কেকেআরের যখন উইকেট পড়তে শুরু করে এক এক করে, তখন বক্সের মধ্যেই বসে ছিলেন শাহরুখ। বারান্দায় বাঁ দিকের কোণে বাবার জায়গাটা নেন আরিয়ান। খেলার শেষ পর্যন্ত সেখানেই ছিলেন জুনিয়র এসআরকে। নাইটদের ব্যাটন কি এ বার তাঁরই?