কোহলির নেতৃত্বে দ্বিতীয় ম্য়াচ জিতল বেঙ্গালুরু। ছবি: আইপিএল।
২২ গজে রবিবার সেরা দিন ছিল না রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের। সেরা দিন ছিল না বিরাট কোহলিরও। তবু রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে জয় পেল বেঙ্গালুরু। ঘরের মাঠে টান টান ম্যাচে সঞ্জু স্যামসনের দলকে কোহলিরা হারালেন ৭ রানে। ব্যাট হাতে ঘাটতি কোহলি এদিন পূরণ করলেন নেতৃত্ব দিয়ে। তাঁর বোলার পরিবর্তন এবং ফিল্ডিং সাজানোর দক্ষতার কাছে আটকে গেল রাজস্থান।
দিনের শুরুতে ট্রেন্ট বোল্টের প্রথম বলটাই উইকেটে সামনে খুঁজে পেয়ে গেল কোহলির পা। ডিআরএস নেওয়ার কথা ভাবেননি কোহলি। সোজা হাঁটা লাগালেন সাজঘরের দিকে। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর এবং রাজস্থান রয়্যালসের ম্যাচ ঘিরে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের গ্যালারির গর্জন শুরু হতেই থেমে গেল।
কোহলির গোল্ডেন ডাক। ম্যাচের প্রথম বলেই কোহলি আউট হওয়ায় বেঙ্গালুরু তিন নম্বরে ব্যাট করতে পাঠায় বাংলার অলরাউন্ডার শাহবাজ় আহমেদ। ব্যাটিং অর্ডারের উপর দিকে শাহবাজ়কে ঠেলে দেওয়া, অনেকটা যেন টেস্টে নাইট ওয়াচ ম্যান নামিয়ে প্রধান ব্যাটারদের আড়াল করার চেষ্টা! ঘরোয়া ক্রিকেটেও শাহবাজ় ব্যাট করেন পাঁচ থেকে সাত নম্বরের মধ্যে।
শাহবাজ়কেও (২) দ্রুত আউট করলেন নিউ জ়িল্যান্ডের জোরে বোলার। ১২ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যাওয়া আরসিবির হাল ধরেন ফ্যাফ ডুপ্লেসি এবং গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। তৃতীয় উইকেটে তাঁদের জুটিতে উঠল ১২৭ রান। ডুপ্লেসি করলেন ৩৯ বলে ৬২ রান। ৮টি চার এবং ২টি ছয় দিয়ে সাজালেন নিজের ইনিংস। ব্যাট হাতে একই রকম মানানসই ছিলেন ম্যাক্সওয়েলও। তাঁর ব্যাট থেকে এল ৪৪ বলে ৭৭ রান। ৬টি চারের পাশাপাশি ৪টি ছক্কা মারলেন অসি অলরাউন্ডার।
ডুপ্লেসি এবং ম্যাক্সওয়েল ছাড়া বেঙ্গালুরুর কোনও ব্যাটারই রবিবার সাফল্য পেলেন না ঘরের মাঠে। মাহিপাল লোমরোর (৮), সুয়ষ প্রভুদেশাইরা (শূন্য) পর পর আউট হয়ে গেলেন। ইনিংসের শেষ দিকে আগ্রাসী ব্যাটিং দেখা গেল না দীনেশ কার্তিক বা ওয়ানিন্দু হাসরঙ্গার (৭ বলে ৬) কাছ থেকে। গত এ বারের কার্তিক যেন গত বারের আইপিএলের ছায়া। ব্যাট হাতে দাপট দেখাতে পারছেন না কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্রাক্তন অধিনায়ক। কার্তিকের ব্যাট থেকে এল ১৩ বলে ১৬ রান। সঞ্জুদের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত বেঙ্গালুরু করল ৯ উইকেটে ১৮৯ রান।
রাজস্থানের সফলতম বোলার ট্রেন্ট ৪১ রানে ২ উইকেট নিলেন। সন্দীপ শর্মা শেষ ওভারে পর পর দু’বলে ২ উইকেট নিলেও খরচ করলেন ৪৯ রান। এ ছাড়া যুজবেন্দ্র চহাল ২৮ রানে ১ উইকেট এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিন ৩৬ রানে ১ উইকেট নিলেন।
জবাবে শুরুটা ভাল হয়নি রাজস্থানেরও। প্রথম ওভারেই মহম্মদ সিরাজের বলে আউট হলেন জশ বাটলার। ১ রানে ১ উইকেট হারালেও চাপে পরেননি সঞ্জুরা। দলের হাল ধরেন অন্য ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল এবং তিন নম্বরে নামা দেবদত্ত পাড়িক্কল। যশস্বী করলেন ৩৭ বলে ৪৭ রান। মারলেন ৫টি চার এবং ২টি ছয়। উইকেটের অন্য প্রান্তে পাড়িক্কলের ব্যাট থেকে এল ৩৪ বলে ৫২ রানের ইনিংস। ৭টি চার এবং ১টি ছক্কা মারলেন তিন নম্বরে নামা পাড়িক্কল। দ্বিতীয় উইকেটে তাঁদের জুটিতে উঠল ৯৮ রান।
তাঁরা দু’জনে পর পর আউট হওয়ায় চাপে পড়ে যায় রাজস্থানের ইনিংস। ভাল শুরু করলেও দলকে ভরসা দিতে পারলেন না অধিনায়ক সঞ্জু। ১৫ বলে ২২ রান করলেন তিনি। চেনা ছন্দে দেখা গেল না শিমরন হেটমায়ারকেও (৯ বলে ৩)। শেষ দিকে কিছুটা লড়াই করলেন ধ্রুব জুড়েল। রাজস্থানকে জয় এনে দেওয়ার জন্য তাঁর লড়াই অবশ্য যথেষ্ট ছিল না। শেষ ওভারে অশ্বিনের (৬ বলে ১২) চেষ্টাও সফল হল না। জুড়েল অপরাজিত থাকলেন ১৬ বলে ৩৪ রান করে। তাঁর আগ্রাসী ইনিংসে ছিল ২টি করে চার এবং ছয়। সঞ্জুদের ইনিংস শেষ হল ৬ উইকেটে ১৮২ রানে।
রাজস্থানের বিরুদ্ধে বেঙ্গালুরুর সেরা বোলার হর্ষল পটেল। ৩২ রান খরচ করে ৩ উইকেট নিলেন তিনি। ভাল বল করলেন ডেভিড উইলি। ২৬ রানে ১ উইকেট তাঁর। ৩৯ রান খরচ করে বাটলারের উইকেট সিরাজের।