বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে লখনউকে জয় এনে দিলেন মায়াঙ্ক। ছবি: আইপিএল।
ঘরের মাঠে হেরে গেল বিরাট কোহলিদের রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। লোকেশ রাহুলের লখনউ সুপার জায়ান্টসের কাছে ২৮ রানে হেরে চাপ বাড়ল ফ্যাফ ডুপ্লেসির দলের উপর। প্রথমে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ১৮১ রান করে লখনউ। জবাবে বেঙ্গালুরু করল ১৯.৪ ওভারে ১৫৩। কোহলিদের ইনিংসে ধস নামালেন অভিষেক ম্যাচে ১৫৫.৮ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিতে বল করা মায়াঙ্ক যাদব। মাত্র ১৪ রান খরচ করে ৩ উইকেট নিলেন তিনি। এ দিন তাঁর একটি বলের গতি ছিল ১৫৬.৭ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। যা এ বারের প্রতিযোগিতার দ্রুততম।
জয়ের জন্য ১৮২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারাল বেঙ্গালুরু। দলের প্রথম তিন ব্যাটার কিছুটা রান করলেও পরের দিকের ব্যাটারেরা দলকে ভরসা দিতেই পারলেন না। বড় রান অবশ্য কেউই পেলেন না। ওপেন করে কোহলি করলেন ১৬ বলে ২২। মারলেন ২টি চার এবং ১টি ছয়। অপর ওপেনার ডুপ্লেসির অবদান ১৩ বলে ১৯। ৩টি চার মারলেন বেঙ্গালুরু অধিনায়ক। কিছুটা লড়াই করলেন তিন নম্বরে নামা রজত পাটীদার। তাঁর ব্যাট থেকে এল ২১ বলে ২৯ রানের ইনিংস। ২টি করে চার এবং ছয় মারলেন তিনি। তার পর গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (শূন্য), ক্যামেরন গ্রিন (৯), অনুজ রাওয়াত (১১), দীনেশ কার্তিকেরা (৪) মিডল অর্ডারকে ভরসা দিতে পারলেন না। আইপিএলে ১৬তম শূন্য রান করলেন অসি অলরাউন্ডার ম্যাক্সওয়েল। পাটীদার, ম্যাক্সওয়েল এবং গ্রিনকে আউট করে বেঙ্গালুরুর ইনিংসের ভিত আলগা করে দেন দিল্লির ২১ বছরের তরুণ জোরে বোলার মায়াঙ্ক। এই চাপ শেষ পর্যন্ত সামলাতে পারল না বেঙ্গালুরু।
শেষ দিকে কিছুটা চেষ্টা করেন মহিপাল লোমরুর। কিন্তু ওভার প্রতি রানের লক্ষ্যকে বাগে আনতে পারেননি। কাজে এল না লোমরুর লড়াই। তিনি ১৩ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেললেন ৩টি চার এবং ৩টি ছয়ের সাহায্যে। বেঙ্গালুরুর শেষ দিকের ব্যাটারেরাও কেউ রান পেলেন না। মহম্মদ সিরাজ কিছুটা আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের চেষ্টা করেন। ৮ বলে দু’টি ছয়ের সাহায্যে ১২ করেন সিরাজ। মায়াঙ্ক ছাড়া লখনউয়ের হয়ে ভাল বল করলেন নবীন উল হক। তিনি ২৫ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন। ৯ রানে ১ উইকেট মার্কাস স্টোইনিসের। ২১ রান দিয়ে ১ উইকেট পেয়েছেন মণিমরণ সিদ্ধার্থ। ৩৮ রান খরচ করে ১ উইকেট যশ ঠাকুরের।
এর আগে লখনউয়ের ব্যাটারেরাও তেমন সুবিধা করতে পারেননি বেঙ্গালুরুর ২২ গজে। রাহুল নেতৃত্বে ফিরলেও রান পেলেন না। টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন বেঙ্গালুরুর অধিনায়ক ডুপ্লেসি। রাহুলের দল লড়াই করার মতো জায়গায় পৌঁছায় কুইন্টন ডিককের দায়িত্বশীল ইনিংসের সুবাদে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটরক্ষক-ব্যাটার ওপেন করতে নেমে খেললেন ৮১ রানের অনবদ্য ইনিংস। তাঁর ৫৬ বলের ইনিংসে রয়েছে ৮টি চার এবং ৫টি ছক্কা। উইকেটের এক প্রান্ত আগলে রাখেন দলের ইনিংসের প্রায় শেষ পর্যন্ত।
ওপেন করতে নেমে লখনউ অধিনায়ক রাহুলের অবদান ১৪ বলে ২০। তাঁর ইনিংসে রয়েছে ২টি ছয়। ব্যর্থ তিন নম্বরে নামা দেবদত্ত পাড়িক্কলও (৬)। চার নম্বরে নেমে দলকে ভরসা দিতে পারলেন না স্টোইনিসও। অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার করলেন ১৫ বলে ২৪। মারলেন ১টি চার এবং ২টি ছয়। ব্যর্থ আয়ুষ বাদোনি (শূন্য)। শেষ দিকে ব্যাট হাতে আগ্রাসী ক্রিকেট খেললেন নিকোলাস পুরান। তিনি ২১ বলে ৪০ রান করে অপরাজিত থাকলেন। তাঁর ব্যাট থেকে এল ১টি চার এবং ৫টি ছক্কা। তাঁর ইনিংসই প্রতিপক্ষের সামনে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়। শেষে তাঁর সঙ্গে ২২ গজে ছিলেন ক্রুণাল পাণ্ড্য (অপরাজিত শূন্য)।
বেঙ্গালুরুর বোলারদের মধ্যে সফলতম গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। তিনি ২৩ রানে ২ উইকেট নিলেন। ২৪ রানে ১ উইকেট যশ দয়ালের। রিসি টোপলে ৩৯ রান খরচ করে ১ উইকেট পেলেন। ৪৭ রানে ১ উইকেট সিরাজের।