ম্যাচের পর চেন্নাই অধিনায়ক ধোনির কোলে জাডেজা। ছবি: আইপিএল।
পঞ্চম বার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই সুপার কিংস। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের নজির স্পর্শ করেছেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনিরা। অন্য দিকে, পর পর দু’বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন অধরা থেকে গিয়েছে গুজরাত টাইটান্সের। চেন্নাইয়ের ক্রিকেটারদের গলায় ধরা পড়েছে উচ্ছ্বাস।
চাপের মুখে শেষ দু’বলে ছক্কা এবং চার মেরে চেন্নাইকে চ্যাম্পিয়ন করেছেন রবীন্দ্র জাডেজা। ম্যাচ শেষে উচ্ছ্বাস নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলেন না বাঁহাতি অলরাউন্ডার। দলকে জিতিয়ে বলেন, ‘‘আমি গুজরাতের ছেলে। তাই অনুভূতিটা একটু অন্য রকম। এখানকার দর্শকেরা অসাধারণ। বৃষ্টির জন্য এত মানুষ গভীর রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করেছেন। চেন্নাইয়ের সমর্থকদের অভিনন্দন জানাতে চাই সব সময় পাশে থাকার জন্য।’’ এই জয় কাকে উৎসর্গ করবেন? জাডেজা বলেছেন, ‘‘আমি এই জয় উৎসর্গ করতে চাই সিএসকে পরিবারের এক জন বিশেষ ব্যক্তিকে। তিনি মহেন্দ্র সিংহ ধোনি।’’ বুঝিয়ে দিলেন, প্রথম কোয়ালিফায়ারে মাঠে ধোনির সঙ্গে তর্কে জড়ান জাডেজা। দু’জনেই বেশ উত্তেজিত দেখিয়েছিল সে সময়। তৈরি হয় জল্পনা। জয়ের পর ডাগ আউটের দিকে দৌড়ে গিয়ে ধোনির কোলেও উঠে সেই জল্পনায় আগেই জল ঢেলে দেন জাডেজা।
শেষ ২ বলে জয়ের জন্য ১০ রান দরকার ছিল। তখন কী ভাবছিলেন? চেন্নাইয়ের অলরাউন্ডার বলেছেন, ‘‘মাথায় একটা ভাবনাই ছিল। আমার পক্ষে যত জোরে সম্ভব, তত জোরে বল মারার কথা ভাবছিলাম। তাতে বল কোথায় যাবে, সেটা নিয়ে ভাবিনি। শুধু বল জোরে মারতে চেয়েছিলাম। নিজের প্রতি বিশ্বাস ছিল। উইকেটের সোজা মারার চেষ্টা করেছিলাম। জানতাম মোহিতের হাতে ভাল স্লোয়ার আছে।’’
ফাইনালে চেন্নাইয়ের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন ডেভন কনওয়ে। গোটা আইপিএলেই ভাল ছন্দে ছিলেন নিউ জ়িল্যান্ডের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। ফাইনালের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পেয়েছেন। লক্ষ্য কঠিন হলেও ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে ব্যাট করেছেন। ২৫ বলে ৪৭ রানের ইনিংস খেলা কনওয়ে বলেছেন, ‘‘ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করেছি। যতটা সম্ভব তুলে মারার চেষ্টা করেছি। রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের সঙ্গে ব্যাট করার অভিজ্ঞতা দারুণ। ও খুব পরিচ্ছন্ন ভাবে বল মারতে পারে। আমাদের জুটিটা ভাল হয়েছে। বাঁহাতি-ডানহাতি দুই ব্যাটার মিলে দারুণ উপভোগ করেছি। দারুণ আবহের মধ্যে ফাইনাল হল। আমাদের দলে বেশ কয়েক জন সেরা ক্রিকেটার রয়েছে। ওদের সঙ্গে কথা বলে ব্যাটিং এবং ক্রিকেট সম্পর্কে অনেক কিছু শেখারও সুযোগ পেয়েছি।’’
এ বারের আইপিএলে নতুন মেজাজে দেখা গিয়েছে অজিঙ্ক রাহানেকে। তাঁর উপর আস্থা রাখার জন্য সিএসকে কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। রাহানে বলেছেন, ‘‘আমার সাফল্যের কৃতিত্ব সিএসকে কর্তৃপক্ষের। তাঁরা সব সময় আমার পাশে থেকেছেন। আমাকে সুযোগ দিয়েছেন। তাই জয়টা আমার কাছে বিশেষ। অম্বাতি রায়ডু এই ম্যাচ খেলে অবসর নেবে। শেষ ম্যাচেও গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলল আমাদের জন্য।’’
দীপক চাহার বলেছেন রায়ডুর আত্মবিশ্বাসের কথা। ম্যাচের পর তিনি বলেন, ‘‘রায়ডু আমাকে আগেই বলেছিল ফাইনাল জিতেই অবসর নেব। কতটা আত্মবিশ্বাস থাকলে এ ভাবে বলা যায়।’’ উচ্ছ্বসিত রুতুরাজও। তিনি বলেছেন, ‘‘গত বছর আমরা ভাল পারফরম্যান্স করতে পারিনি। সেই জায়গা থেকে এ ভাবে ফিরে আসতে পারাটাই দুর্দান্ত। প্রথম কোয়ালিফায়ার এবং ফাইনালের জয়টা দারুণ। আমরা এই জয় রায়ডুকে উৎসর্গ করছি।’’