কলকাতা নাইট রাইডার্স। —ফাইল চিত্র।
লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে জিতে আবার চনমনে নাইট বাহিনী। কিন্তু রবিবারের পর আবার খেলতে নামতে হবে মঙ্গলবার। মাঝে সোমবার পুরো দল বিশ্রাম নিয়েছে। কোনও অনুশীলন করেননি শ্রেয়স আয়ারেরা। টানা খেলে যাওয়ার ক্লান্তি সামলানো বড় চ্যালেঞ্জ এখন গৌতম গম্ভীরের দলের কাছে। সেই কারণে মঙ্গলবারের ম্যাচে কী পরিবর্তন হবে? দেখে নেওয়া যাক কলকাতার সম্ভাব্য প্রথম একাদশ।
ফিল সল্ট: লখনউ ম্যাচের আগে রান পাচ্ছিলেন না তিনি। সল্টকে বসিয়ে দেওয়ার কথাও বলছিলেন অনেকে। কিন্তু ইডেনের পিচে ৮৯ রান করে সল্ট বুঝিয়ে দিলেন, তাঁকে কতটা প্রয়োজন দলের। নারাইন অল্প রানে আউট হলে সল্ট জানেন কী ভাবে ক্রিজ়ে পড়ে থেকে রান করতে হয়। গত বছর ওপেনার সমস্যায় ভুগছিল কেকেআর। এ বারে আর সেই সমস্যা নেই সল্ট-নারাইন জুটি রান পেয়ে যাওয়ায়।
সুনীল নারাইন: কখনও ব্যাটে, কখনও বলে ম্যাচ জেতাচ্ছেন নারাইন। তিনি এ বারের দলের বড় ভরসা। গত ম্যাচে ৪ ওভারে মাত্র ১৭ রান দেন। কোনও বাউন্ডারি হয়নি তাঁর বলে। এমন কৃপণ বোলিং করলে ম্যাচের মোড় ঘুরতে বাধ্য। সেই সঙ্গে ওপেন করতে নেমে ঝোড়ো ব্যাটিং তো রয়েছেই।
অঙ্গকৃশ রঘুবংশী: তরুণ ক্রিকেটার গত ম্যাচে রান পাননি। কিন্তু তাঁর ব্যাটিং মন জয় করে নিয়েছে কেকেআরের। আরও কিছু ম্যাচ সুযোগ দেওয়াই উচিত তাঁকে। অঙ্গকৃশকে তাই এখনই বসানো হবে না। আরও কিছু ম্যাচে ব্যাট করার সুযোগ পাবেন তিনি।
শ্রেয়স আয়ার: অধিনায়ক রান না পেলেও দলের বড় ভরসা। গত ম্যাচে লখনউয়ের বিরুদ্ধে তিনি রান করলেও খুবই মন্থর গতিতে ব্যাট করেন। যা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জন্য আদর্শ নয়। শ্রেয়সকে বাদ দেওয়ার কোনও প্রশ্নই উঠছে না।
মণীশ পাণ্ডে: এ বারের আইপিএলে রান পাচ্ছেন না বেঙ্কটেশ আয়ার। ৫ ম্যাচে ৬৫ রান করেছেন। সেই জায়গায় মণীশকে খেলাতে পারে কেকেআর। অভিজ্ঞ মণীশ আগেও কলকাতার হয়ে খেলেছেন। তিনি মিডল অর্ডারেই ব্যাট করেন। তাই বেঙ্কটেশের জায়গায় দলে নেওয়া হতে পারে মণীশকে।
আন্দ্রে রাসেল: ব্যাট হাতে ম্যাচ জিতিয়েছেন। মিডিয়াম পেস বোলিং করে উইকেটও নেন। এ বারের আইপিএলে কলকাতার বড় ভরসার নাম রাসেল। গত মরসুমে তেমন ভাল খেলতে পারেননি। তার পরেও কলকাতা ভরসা রেখেছিল রাসেলের উপর। সেই দাম দিচ্ছেন তিনি। বুঝিয়ে দিচ্ছেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এখনও কতটা কার্যকর রাসেল।
রিঙ্কু সিংহ: কলকাতার ওপেনিং জুটি এত রান করে দিচ্ছে যে, ফিনিশার রিঙ্কুর প্রয়োজন পড়ছে না। তা বলে রিঙ্কু দলে থাকবেন না সেটা হয় নাকি? গত মরসুমে যে ভাবে একের পর এক ম্যাচ জিতিয়েছেন তিনি, যে রিঙ্কুকে দলে রাখতেই হবে। দল বেকায়দায় পড়লে তিনি নিজেকে উজাড় করে দেবেন, সেটা সমর্থকেরাও জানেন।
রমনদীপ সিংহ: মনে করা হচ্ছিল রমনদীপ হয়তো বাদ পড়বেন দল থেকে। ব্যাটে রান নেই, ক্যাচও ফেলছিলেন। কিন্তু লখনউয়ের বিরুদ্ধে শরীর ছুড়ে তিনি শুধু ক্যাচই নিলেন না, নিজের জায়গাটাও ধরে রাখলেন। আগামী ম্যাচেও তাই জায়গা পেতে পারেন রমনদীপ।
মিচেল স্টার্ক: ফর্মে ফিরেছেন স্টার্ক। ২৪ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা দিয়ে কেনা বোলার এত দিন পর ম্যাচ জেতালেন। দল তাঁর উপর বিশ্বাস রেখেছিল। তার দাম দিলেন অভিজ্ঞ পেসার। তাই যশস্বী জয়সওয়াল, জস বাটলারদের বিরুদ্ধে অবশ্যই দেখা যাবে স্টার্ককে।
মিচেল স্টার্ক। —ফাইল চিত্র।
বৈভব অরোরা: ইডেনের পিচে স্টার্কের সঙ্গে নতুন বলে শুরু করার জন্য অরোরা রয়েছেন। আগের ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন। তবে চিন্তা থাকবে তাঁর রান দেওয়া নিয়ে। ৩ ওভারে ৩৪ রান দিয়েছিলেন লখনউয়ের বিরুদ্ধে। রাজস্থানের বিরুদ্ধে সেই ভুল শুধরে নিতে চাইবেন অরোরা।
বরুণ চক্রবর্তী: নারাইনের সঙ্গে স্পিন বিভাগ সামলাবেন বরুণ। তিনিই দলের দ্বিতীয় স্পিনার। তাঁকে বাদ দেওয়ার প্রশ্নই উঠছে না। আগের ম্যাচে একটি উইকেট নেন। রাজস্থানের বিরুদ্ধেও খেলবেন তিনি।
ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার: গত ম্যাচে আগে বল করার জন্য রিঙ্কুকে বসিয়ে রেখেছিল কলকাতা। ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসাবে নামানো হয়েছিল তাঁকে। যে সম্ভাব্য একাদশ বেছে নেওয়া হয়েছে, তাতে ধরে নেওয়া হয়েছে যে, কেকেআর আগে ব্যাট করছে। সে ক্ষেত্রে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসাবে দেখা যেতে পারে চেতন সাকারিয়াকে। বাঁ হাতি পেসারকে এখনও পর্যন্ত খেলায়নি কেকেআর। হর্ষিত রানা আগের ম্যাচে খুব একটা ভাল বল করতে পারেননি। তাঁর জায়গায় সুযোগ দিয়ে দেখা যেতেই পারে চেতনকে।