মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। — ফাইল চিত্র।
আইপিএলের সফলতম ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি চেন্নাই সুপার কিংস। ১৫ বার প্রতিযোগিতা খেলে পাঁচ চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনিরা। সব চেয়ে বেশি ১০ বার ফাইনালে ওঠার কৃতিত্বও চেন্নাইয়ের ঝুলিতে। চেন্নাইয়ের এই সাফল্যের রহস্য কী? চেন্নাই সুপার কিংসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন ধোনি নিজেই।
ধোনি বলেছেন দলের কথা। তাঁর কাছে দলই সবার আগে। ৪২ বছরের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার বলেছেন, ‘‘ধরুন আমাদের দলে দারুণ এক জন ক্রিকেটার রয়েছে। সে হয়তো আমাদের দলের আবহের সঙ্গে পরিচিত নয়। অন্য পরিবেশ থেকে খেলতে এসেছে। আমরা প্রথমে তাকে দলের লক্ষ্য বুঝিয়ে দিই। সে এগিয়ে আসার আগে, আমরা তার দিকে তিন পা এগিয়ে যাই। তাকে সহজ হতে সাহায্য করি সকলের সঙ্গে।’’
ধোনি জানিয়েছেন, তাঁরা কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করেন এক জন ক্রিকেটারকে দলের সঙ্গে একাত্ম হওয়ার সুযোগ দিতে। তিনি বলেছেন, ‘‘দ্বিতীয়ত আমরা বলি, তুমি যেটা ভাল করতে পার, সেটাই করবে। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে, তার জন্য অন্যদের যাতে সমস্যা না হয়। তৃতীয়ত আমরা নিজের মতো সময় কাটানোর সময় দিই। অবসর সময় যাই করুক সেটা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। দিনের শেষ আমরা তার সেরা পারফরম্যান্সটা চাই দলের জন্য। আমাদের দল পরিচালকদের লক্ষ্যই থাকে প্রত্যেক ক্রিকেটারের সেরাটা বের করে আনা। কেউ দলের জন্য খুব ভাল প্রমাণিত হলে তাকে আমরা সম্পদে পরিণত করার চেষ্টা করি।’’
ধোনি জানিয়েছেন, এই পদ্ধতিটা এক তরফা নয়। দু’পক্ষের সমান সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি বলেছেন, ‘‘সেই ক্রিকেটারকেও এগিয়ে আসতে হবে। সে না চাইলে কিছুই সম্ভব নয়। কেউ চাইলে না চাইতেই পারে। তেমন ক্ষেত্রে আমাকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। এক জনের ভুল বা অসহযোগিতা দলের সকলের মধ্যে ছড়িয়ে যাক, তা কখনও চাইনি অধিনায়ক হিসাবে। সে যদি খুব বড় মাপের খেলোয়াড়ও হয়, তা হলেও আমরা তাকে দল থেকে ছেড়ে দেওয়ার পক্ষে। কারও জায়গা ফাঁকা পড়ে থাকে না। কেউ না কেউ ঠিক তার জায়গা নিয়ে নেবে। হতে পারে যে আসবে, সে চলে যাওয়া ক্রিকেটারের মতো বড় মাপের নয়। কিন্তু তার পারফরম্যান্স দলের উপকার করবে।’’
এ বার নিয়ে তৃতীয় বার আইপিএলের প্লে-অফে উঠতে পারল না চেন্নাই। মাথিশা পাতিরানার চোট এবং মুস্তাফিজুর রহমানের চলে যাওয়া প্রভাব ফেলেছে। আগামী বছর আইপিএল খেলবেন কিনা, এখনও ঠিক করেননি ধোনি। তবে বলেছেন, ‘‘ভয় থাকা ভাল। সকলের মধ্যে ভয় থাকা দরকার। না হলে সাহসী ক্রিকেট খেলা যায় না। দলে জায়গা হারানোর ভয় থাকা উচিত। পারফর্ম করার এই চাপ না থাকলে হয় না। চাপ আমাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করছে। সব কিছু মনে রাখতে সাহায্য করে। মনের মধ্যে ভয় থাকলে এবং সে ভাবে খেলতে পারলে, বাকিরা মনে করবে আমি সাহসী ক্রিকেটার।’’ সতীর্থদের পরামর্শ দেওয়ার সুরে বলেছেন দেশকে দু’টি বিশ্বকাপ দেওয়া প্রাক্তন অধিনায়ক।