অবসর ঘোষণা করলেন না ধোনি। তাঁকে আরও এক বছর খেলতে দেখা যেতে পারে। — ফাইল চিত্র
সবাই ভেবেছিলেন ট্রফিটা হাতে তুলে তিনি অবসর ঘোষণা করবেন। দলের ক্রিকেটাররা সেই মঞ্চও তৈরি করে দিয়েছিলেন। কিন্তু মহেন্দ্র সিংহ ধোনি বরাবরই বাকিদের থেকে আলাদা। আবেগে ভেসে, সতীর্থদের কাঁধে চেপে মাঠ ঘুরে বিদায় নেওয়ার পাত্র তিনি নন। তাই পঞ্চম আইপিএল ট্রফি জিতেও অবসর ঘোষণা করলেন না তিনি। জানিয়ে দিলেন, সম্ভব হলে আরও একটা বছর পরে ফিরে আসতে চান।
ট্রফি হাতে তোলার আগেই সঞ্চালক হর্ষ ভোগলের প্রশ্নের মুখোমুখি হন ধোনি। সরাসরি অবসর নিয়ে প্রশ্ন না করলেও, হর্ষের ইঙ্গিত ছিল সে দিকেই। হাসতে হাসতে ধোনির উত্তর, “তুমি তা হলে একটা উত্তর খুঁজছ তাই তো? হ্যাঁ, হয়তো অবসর ঘোষণা করার এটাই সেরা সময়। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে গোটা দেশে যে ভালবাসা পেয়েছি সেটা কোনও দিনই ভোলার হয়। এখান থেকে ক্রিকেটকে পাকাপাকি ভাবে বিদায় জানাতেই পারি। কিন্তু আমার কাছে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জ হল, পরের নয় মাসে কঠোর পরিশ্রম করে এবং আরও একটা আইপিএল খেলার চেষ্টা করা। এখনও আমার কাছে ভাবার জন্য ৬-৭ মাস রয়েছে। আমার তরফে থেকে এটা সমর্থকদের কাছে উপহার। জানি শরীরের জন্য কাজটা সহজ হবে না। তবুও।”
ধোনি মেনে নিয়েছেন, যে ভালবাসা তিনি পেয়েছেন তা কোনও দিন ভুলতে পারবেন না। মাথা ঠান্ডা রাখলেও তিনি রক্তমাংসের মানুষ। চোখে জল তাঁরও আসে। ধোনি বলেছেন, “এই ভালবাসাতে আপনি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়বেনই। চেন্নাইয়ের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামার সময় গোটা স্টেডিয়াম আমার নাম ধরে চিৎকার করছিল। তখন সত্যি আমার চোখ পুরো জলে ভরে গিয়েছিল। কিছু ক্ষণের জন্য ডাগআউটে চুপচাপ বসেছিলাম। বুঝতে পেরেছিলাম, আমাকে এটা উপভোগ করতে হবে। আসলে ওরা আমি যেমন, তেমন ভাবেই আমাকে ভালবাসে। আমি এমন কিছু কখনও দেখাতে যাই না যেটা আমি নই। সব কিছু সহজ রাখার চেষ্টা করি।”
আগে চারটি আইপিএল ট্রফি জিতলেও পঞ্চম ট্রফি নিয়ে আলাদা ভালবাসা রয়েছে ধোনি। সেই প্রসঙ্গে বলেছেন, “আমার কাছে সব ট্রফিই বিশেষ অনুভূতির। কিন্তু আইপিএলের বিশেষত্ব হল, প্রতিটা ম্যাচই টানটান উত্তেজনার। আপনাকে সব সময় তৈরি থাকতে হবে। আজ আমাদের খেলায় অনেক ভুল হয়েছে। বোলিং বিভাগ ঠিকঠাক নিজেদের কাজ করতে পারেনি। কিন্তু ব্যাটিং বিভাগ সব চাপ কাটিয়ে আমাদের জয় এনে দিয়েছে।”
দলের ক্রিকেটারদের সম্পর্কেও অগাধ আস্থা রয়েছে ধোনির। বলেছেন, “আমি নিজেও হতাশ হয়ে পড়ি। আমি তো একটা মানুষ। কিন্তু প্রত্যেকের কাছে চাপ সামলানোর আলাদা আলাদা উপায় রয়েছে। আমার দলে অজিঙ্কের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটার রয়েছে। তাই চিন্তার কোনও কারণ নেই। আমার দলে কারও কোনও ব্যাপারে দ্বিধা থাকলে, সে অনায়াসে প্রশ্ন করতে পারে। সেই দরজা সব সময় খোলা রয়েছে।”
সোমবারই শেষ ম্যাচ খেলে ফেললেন রায়ডু। সতীর্থকে নিয়ে ধোনি বলেছেন, “রায়ডুর অন্যতম একটা বৈশিষ্ট্য হল, ও মাঠে থাকলে সব সময় নিজের ১০০ শতাংশ দেবে। কিন্তু ও দলে থাকলে আমরা কোনও দিন ফেয়ারপ্লে পুরস্কার জিততে পারব না। অনেক দিন ধরে রায়ডুর সঙ্গে খেলছি। সেই ভারত এ সফরের সময় থেকে। ও এমন ক্রিকেটার যে পেস এবং স্পিন সমান ভাবে খেলতে পারে। এটা সত্যিই একটা বিশেষ গুণ। আমার আগেই মনে হয়েছিল ও আজকের ম্যাচে কিছু একটা করবে। আসলে ও-ও আমার মতো। খুব একটা ফোন ব্যবহার করে না। আশা করি জীবনের পরবর্তী পর্যায়ে ও ভাল ভাবেই উপভোগ করবে।”