MS Dhoni

চার মারলেন, ছয় মারলেন, মন জিতলেন, তবু রবিবার ‘ফিনিশার’ হতে পারলেন না ধোনি

চলতি মরসুমে প্রথম বার ব্যাট করতে নামলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। বিশাখাপত্তনমের দর্শকদের মাতিয়ে চার এবং ছয় মারলেন। কিন্তু দলকে জেতাতে পারলেন না।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২৪ ২৩:৪৬
Share:

মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। ছবি: এক্স।

দিল্লি-চেন্নাই ম্যাচের আগে প্রাক্তন ক্রিকেটার মাইক হাসি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, শেষ বলে ছয় মেরে ম্যাচ জেতাবেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। হাসির একটি ইচ্ছা পূরণ হল ঠিকই, কিন্তু আর একটি অধরাই থেকে গেল। রবিবার বিশাখাপত্তনমে ধোনির ব্যাট থেকে শেষ বলে বেরোল একটি ছক্কা। গ্যালারির মাঝে গিয়ে পড়ল বল। কিন্তু ম্যাচের ফলাফল তাতে বদলাল না। কারণ, শেষ বলের আগেই চেন্নাইয়ের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল।

Advertisement

চলতি আইপিএলে প্রথম বার অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে নেমেছিল চেন্নাই। খেলা শুরুর আগে বিশাখাপত্তনমের মাঠ দেখে মনে হয়নি তারা অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে নেমেছে। চিপকের সঙ্গে গুলিয়ে যেতে বাধ্য, এতটাই ভিড় হলুদ জার্সির। সবাই এসেছিলেন একজনকেই দেখতে। তিনি চেন্নাইয়ের সাত নম্বর জার্সিধারী। অপেক্ষা ছিল, ৩০৭ দিন পরে আবার ব্যাট করতে নামেন কি না।

কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত এল চেন্নাইয়ের ব্যাটিংয়ের ১৭তম ওভারে। তত ক্ষণে ছয় উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে শুরু করেছে চেন্নাই। হারের খাঁড়া ঝুলতে শুরু করেছে সামনে। ২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে দাপট দেখাচ্ছেন বাংলার মুকেশ কুমার। তিনি এলেন, ক্রিজ়ে স্টান্স নিলেন এবং প্রথম বলটাই কব্জির হালকা মোচড়ে ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়্যার লেগ বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে দিলেন। বিশাখাপত্তনম তখন উত্তাল। গ্যালারিতে শুরু হয়ে গিয়েছে নাচ।

Advertisement

পরের বলেই স্তব্ধ হয়ে যেতে পারত সব কিছু। মুকেশের ওয়াইড ইয়র্কারে ধোনির মারা শট উড়ে গিয়েছিল ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে। লোপ্পা ক্যাচ ফেলে দিলেন খলিল আহমেদ। তবে গ্যালারির ধিক্কার নয়, হয়তো আশীর্বাদই পেলেন দিল্লির ক্রিকেটার। কারণ দর্শকেরা খলিলের ক্যাচ নয়, এসেছিলেন ধোনির ব্যাটিং দেখতে।

তৃতীয় বলে আবার চার। পরের ওভারে বল করতে এসেছিলেন খলিল। তাঁকে এত সহজে ছয় মারলেন ধোনি, দেখে মনে হল পুরো ব্যাপারটাই জলভাত। অফস্টাম্পের বাইরে বল ছিল। সামনের পা এগিয়ে এনে নিখুঁত সময়জ্ঞানে শট। বল একস্ট্রা কভারের উপর দিয়ে গ্যালারিতে। বিশাখাপত্তনম ক্রমশ উত্তাল হতে শুরু করেছিল।

ছন্দটা কাটল ১৯তম ওভারে। প্রথম বলে রান নিয়ে ধোনিকে স্ট্রাইক দিয়েছিলেন রবীন্দ্র জাডেজা। পর পর তিনটি বল খেললেন ধোনি। প্রতি বারই রান নেওয়ার পরিস্থিতি ছিল। তবে কোনও বারই ধোনিকে রান নিতে উৎসাহী দেখায়নি। উল্টো দিকে জাডেজার মতো প্রতিষ্ঠিত একজন ব্যাটার যেখানে রয়েছেন, যেখানে আস্কিং রেট প্রতি মুহূর্তে বেড়ে চলেছে, সেখানে ধোনির এই সিদ্ধান্ত দলকে হারিয়ে দিল কি না, সেই প্রশ্ন উঠতেই পারে। দলের চেয়ে বড় হয় ধোনি নিজের জন্য খেললেন কি না, সেই প্রশ্নও অনেকে তোলা শুরু করেছেন। ধন্যবাদ প্রাপ্য মুকেশেরও। ধোনিকে প্রতিটা বল ওয়াইড ইয়র্কার দিলেন। একচল্লিশের ধোনির পক্ষে সামনে ঝুঁকে কভার ড্রাইভ মারা বেশ কঠিন। চেষ্টা করলেও সফল হননি।

তবে মাতিয়ে দিলেন ১৯তম ওভারে। তখন ৬ বলে ৪৩ রান দরকার। ক্রিকেটীয় হিসাবে ম্যাচ হাতের বাইরে। কিন্তু পর পর দু’বলে ধোনির চার এবং ছয় দেখে আবার ক্রিকেট সমর্থকেরা অঘটনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন। প্রার্থনা শুরু হয়ে গিয়েছিল যাতে নোখিয়া অন্তত একটি ‘নো বল’ করেন। তা অবশ্য হয়নি। ধোনি তৃতীয় বলে রান নেননি। চতুর্থ বলে চার মারেন। ম্যাচের শেষ বলও ফেলে দেন গ্যালারিতে।

রবিবারের বিশাখাপত্তনম যা চেয়েছিল তাই দেখতে পেল। ধোনির ব্যাট থেকে চার, ছয় সবই এল। কিন্তু ‘ফিনিশার’ হতে পারলেন না ধোনি। মাইক হাসির মতো অপূর্ণ থেকে গেল আরও অনেক সমর্থকের স্বপ্ন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement