এ বারের আইপিএলে আরও এক বার হারল কলকাতা। —ফাইল চিত্র
আমদাবাদে প্রায় হারের মুখ থেকে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন রিঙ্কু সিংহ। ঘরের মাঠে ফিরতেই হার কলকাতা নাইট রাইডার্সের। সানরাইজার্স হায়দরবাদের বিরুদ্ধে ২২৯ রান তাড়া করতে নেমে কেকেআর থেমে গেল ২০৫ রানে।
টস জিতে বল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন নীতীশ রানা। ইডেনের পিচে ২০১৮ সাল থেকে আইপিএলে টস জিতলে সকলেই প্রথমে বলই করেছেন। একই পথে হাঁটলেন কেকেআর অধিনায়ক। কিন্তু তাতেই বিপদ হল কলকাতার। নীতীশ আর কী করে জানবেন টেস্ট ক্রিকেটে ৮০-র উপরে গড় থাকা হ্যারি ব্রুক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও এমন দাপট দেখাবেন। ছ’টি টেস্টে চারটি শতরান আছে ইংরেজ ব্যাটারের। লাল বলের ক্রিকেটে সাফল্য পেলেও সাদা বলে তেমন দাপট দেখা যায়নি তাঁর। ইডেনের পিচে তিনিই কালঘাম ছুটিয়ে দিলেন কেকেআরের।
হায়দরাবাদের ইনিংসে শুরু থেকেই দাপট দেখালেন ব্রুক। প্রথম ওভারে তিনটি চার মারেন তিনি। পেসারদের আক্রমণ করছিলেন শুরু থেকেই। স্পিনাররা আসতে কিছুটা দেখে খেলছিলেন। কিন্তু রানের গতি সে ভাবে কমতে দেননি। ব্রুকের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রান করছিলেন এডেন মার্করাম, অভিষেক শর্মা এবং এনরিখ ক্লাসেনরা। মার্করাম ২৬ বলে ৫০ রান করেন। ১৭ বলে ৩২ রান করেন অভিষেক। মাত্র ছ’বল খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন ক্লাসেন। তিনি ১৬ রান করে অপরাজিত থাকেন।
কেকেআরের পেসাররা কেউই শুরুতে উইকেট নিতে পারেননি। আন্দ্রে রাসেল প্রথম উইকেট নেন। একই ওভারে দু’উইকেট নিয়ে কলকাতাকে ম্যাচে ফেরানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পায়ে টান লাগায় তাঁকে মাঠ ছাড়তে হয়। বরুণ চক্রবর্তী ৪ ওভারে ৪১ রান দিয়ে একটি উইকেট নেন। রাসেল পরে মাঠে ফিরে বল করতে শুরু করেন। কিন্তু আরও একটি উইকেট নিয়েই পায়ে লাগে তাঁর। খোঁড়াতে খোঁড়াতে মাঠ ছাড়েন। তাঁর ওভার শেষ করেন শার্দূল ঠাকুর। পাঁচ বলে ১৪ রান দিয়ে দেন তিনি। কলকাতার বোলিং আক্রমণকে নির্বিষ করে দেন ব্রুক। গোটা মাঠ জুড়ে খেলতে থাকেন তিনি। ২২৮ রান তুলে নেয় হায়দরাবাদ।
ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই রহমনউল্লাহ গুরবাজ়কে ফেরান ভুবনেশ্বর কুমার। প্রথম ওভারের সেই ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই মার্কো জানসেন পর পর দু’বলে ফিরিয়ে দেন বেঙ্কটেশ আয়ার এবং সুনীল নারাইনকে। মাথায় ২২৯ রানের লক্ষ্য নিয়ে ২০ রানে তিন উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে যায় কলকাতা। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলার মরিয়া চেষ্টা করেন নীতীশ রানা। অধিনায়কের ব্যাট থেকে এক ওভারে ২৮ রান আসে। উমরান মালিকের গতিকে কাজে লাগিয়ে একের পর এক বাউন্ডারি মারেন তিনি।
বল হাতে তিন উইকেট নেওয়া রাসেল ব্যাট করতে নামতেই আবার ব্যর্থ। মাত্র তিন রান করে আউট হয়ে যান তিনি। আগের ম্যাচের মতো এ বারও কলকাতার ভরসা ছিলেন রিঙ্কু। একের পর এক ছক্কা হাঁকাচ্ছিলেন তিনি। জানসেনকে দু’টি ছক্কা মারেন একই ওভারে। চালিয়ে খেলছিলেন নীতীশও। দু’জনে মিলে কলকাতাকে আশা দেখাচ্ছিলেন। কিন্তু তাঁদের ৬৯ রানের জুটি ভেঙে দিলেন টি নটরাজন। ফুলটস বলে মারতে গিয়ে ওয়াশিংটন সুন্দরের হাতে ক্যাচ দেন নীতীশ।
আমদাবাদে পাঁচ ছক্কা হাঁকানো রিঙ্কু শুক্রবারও দাপট দেখালেন। ৩১ বলে ৫৮ রান করেন তিনি। যত ক্ষণ রিঙ্কু ক্রিজে ছিলেন, তত ক্ষণ আশা ছিল। শেষ দু’ওভারে ৪৮ রান প্রয়োজন ছিল। ১৯তম ওভারে নটরাজন বল করতে এসে দেন ১৬ রান। সেই ওভারে তিনটি চার মারেন রিঙ্কু। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৩২ রান। গত ম্যাচে শেষ ওভারে ২৯ রান তাড়া করে জেতা নাইট সমর্থকরা, এই ম্যাচেও আশায় বুক বাঁধছিলেন। কিন্তু রোজ রোজ তো আর রিঙ্কুর পক্ষে পাঁচ পাঁচ ছক্কা মারা সম্ভব নয়। উমরান শেষ ওভারে দেন মাত্র ৮ রান। শার্দূল ঠাকুরকে আউটও করেন তিনি।
কলকাতার পরের ম্যাচ রবিবার। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে খেলবে নাইটরা। মুম্বইয়েই হবে সেই ম্যাচ। রবিবার দুপুরে মুখোমুখি হবে রোহিত শর্মা এবং নীতীশ রানার দল।