আইপিএল থেকে বিদায় নিল নীতীশের কলকাতা। ছবি: আইপিএল
টস জিতে কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক নীতীশ রানা বল করার সিদ্ধান্ত নিতেই ‘গেল গেল’ রব উঠে গেল সমর্থকদের মনে। আগে ব্যাট করলে বড় রানে জেতার সুযোগ তৈরি করা যেত। কিন্তু সেটা কলকাতার মাথাতেই এল না। প্রথমে বল করে অল্প রানে লখনউ সুপার জায়ান্টসকে আটকে রাখার নীতি নিলেন নীতীশ। লখনউ তুলল ১৭৬ রান। প্লে-অফে ওঠার আশা বাঁচিয়ে রাখতে যে রান ৭.৫ ওভারে তুলতে হত কেকেআরকে। যা প্রায় অসম্ভব ছিল।
লখনউ ব্যাট করতে নেমে ইডেনের পিচে প্রথমে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। একের পর এক উইকেট হারাতে থাকেন কুইন্টন ডি’ককরা। তৃতীয় ওভারে করণ শর্মা আউট হন। বৈভব আরোরা এক ওভারে তুলে নেন প্রেরক মকঁড় এবং মার্কাস স্টোইনিসের উইকেট। ক্রুণাল পাণ্ড্য মাত্র ৯ রান করে আউট হয়ে যান। এক দিক ধরেছিলেন ওপেনার কুইন্টন। তাঁর উইকেট নেন বরুণ চক্রবর্তী। ২৭ বলে ২৮ রান করে আউট হন কুইন্টন। ৭৩ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে লখনউ চাপে পড়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে নিকোলাস পুরান এবং আয়ুষ বাদোনি দলকে লড়াই করার মতো জায়গায় পৌঁছে দেন।
দেশের হয়ে পুরান সে ভাবে ধারাবাহিকতা দেখাতে না পারলেও আইপিএলে লখনউয়ের বড় ভরসা তিনি। ৩০ বলে ৫৮ রান করেন পুরান। চারটি চার এবং পাঁচটি ছক্কা মারেন তিনি। কলকাতার বিরুদ্ধে ১৭৬ রান তোলার পিছনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান তাঁর। বাদোনি করেন ২৫ রান। তাঁরা ৭৪ রানের জুটি গড়েন। শেষবেলায় কৃষ্ণপ্পা গৌতম ৪ বলে ১১ রান করেন। কলকাতার হয়ে দু’টি করে উইকেট নেন সুনীল নারাইন, শার্দূল ঠাকুর এবং বৈভব আরোরা। একটি করে উইকেট নেন হর্ষিত রানা এবং বরুণ চক্রবর্তী।
কলকাতার সামনে লক্ষ্য শুধু ১৭৭ রান ছিল না, তাদের লক্ষ্য ছিল ওই রান ৭.৫ ওভারে তুলে নেওয়া। তা হলেই রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের রান রেট টপকে যেতে পারত কলকাতা। রবিবার রোহিত শর্মার মুম্বই ইন্ডিয়ান্স এবং বিরাট কোহলিরা হেরে গেলে কলকাতার সুযোগ থাকত আইপিএলের প্লে-অফে ওঠার। কিন্তু কলকাতা ৭.৫ ওভারে তোলে ৭৪ রান। প্লে-অফের রাস্তা প্রায় বন্ধ হয়ে যায় তখনই। নেট রান রেটে অনেকটাই পিছিয়ে যায় কেকেআর। ম্যাচ হেরে যাওয়ায় কোনও অঙ্কই আর প্রয়োজন হল না।
কেকেআর ব্যাটারদের কাছে প্লে-অফে ওঠার কাজ কঠিন ছিল, কিন্তু ম্যাচ জেতা নয়। নাইটদের ব্যাটাররা সেটাও কঠিন করে ফেললেন। বেঙ্কটেশ আয়ার এবং জেসন রয় শুরুটা করেছিলেন ঝড়ের গতিতে। পাওয়ার প্লে-তে ৬১ রান তুলে নিয়েছিলেন তাঁরা। তার পরেই বেঙ্কটেশ আউট হন। ভুল শট খেলে আউট হন নীতীশ। জেসন আউট হয়ে নিজের উপর বিরক্তি প্রকাশ করতে করতে মাঠ ছাড়লেন। রহমানুল্লা গুরবাজ চার নম্বরে নেমে করলেন মাত্র ১০ রান। আন্দ্রে রাসেল ৭ রান করে আউট হন। সুনীল নারাইন রান আউট হয়ে যান গুরুত্বপূর্ণ সময়ে। এক দিক থেকে কলকাতার ব্যাটাররা যখন আসছেন এবং ডাগ আউটে ফিরে যাচ্ছেন, লড়লেন তখন রিঙ্কু সিংহ।
প্রতি ম্যাচেই কেকেআরের ভরসার নাম রিঙ্কু। ৩৩ বলে ৬৭ রান করে অপরাজিত রইলেন। শেষ ওভারে কলকাতার জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২১ রান। প্রথম বলে এক রান নিয়ে রিঙ্কুকে স্ট্রাইক দেন বৈভব। বাকি পাঁচ বলে রিঙ্কু তোলেন ১৮ রান। কলকাতা হেরে যায় এক রানে। সেই সঙ্গে এ বারের মতো আইপিএল যাত্রা শেষ নাইটদের।