শতরানের পর শুভমনের (বাঁ দিকে) উল্লাস। পাশে সুদর্শন। ছবি: আইপিএল
আইপিএলে প্লে-অফের লড়াইয়ে টিকে থাকল গুজরাত টাইটান্স। শুক্রবার চেন্নাই সুপার কিংসকে ঘরের মাঠে ৩৫ রানে হারিয়ে দিল তারা। শুভমন গিল এবং সাই সুদর্শনের জোড়া শতরানে ভর করে আগে ব্যাট করে ২৩১/২ তোলে গুজরাত। জবাবে চেন্নাই থেমে গেল ১৯৬/৮ রানে। জিতে পঞ্জাব এবং মুম্বইকে টপকে আট নম্বরে উঠে এল গুজরাত। হেরে গেলেও শেষ বেলায় মহেন্দ্র সিংহ ধোনির আক্রমণাত্মক ইনিংসে পয়সা উশুল সমর্থকদের।
২৩২ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়েছিল চেন্নাই। দু’বলে দু’উইকেট হারায় তারা। প্রথম ওভারের শেষ বলে ফিরে যান রাচিন রবীন্দ্র (১)। তাঁকে একক দক্ষতায় রান আউট করেন ডেভিড মিলার। পরের ওভারের প্রথম বলে ফেরেন অজিঙ্ক রাহানেও (১)।
ওপেন না করে এ দিন তিনে নেমেছিলেন রুতুরাজ গায়কোয়াড়। তৃতীয় ওভারে উমেশ যাদবের বলে কোনও রান না করেই রশিদ খানের হাতে ক্যাচ দেন। ছয় মারতে গিয়েছিলেন। রশিদ প্রথমে এক হাতে ক্যাচ নিয়েও টাল সামলাতে না পেরে বলটি ছুড়ে দিয়েছিলেন। বাউন্ডারির এ পারে এসে ক্যাচটি নেন।
সেখান থেকে খেলা ঘোরানোয় মরিয়া প্রচেষ্টায় নামেন দুই বিদেশি ড্যারিল মিচেল এবং মইন আলি। গুজরাতের বোলারদের রেয়াত করেননি তাঁরা। বড় রান তাড়া করতে হওয়ায় ধীরগতিতে খেলার দিকেও হাঁটেননি। শুরু থেকে চালাতে থাকেন।
চতুর্থ উইকেটে ১০৯ রানের জুটি তৈরি হয়ে যায়। স্পিনার এনেও গুজরাতের কোনও লাভ হয়নি। রশিদ খানই হোন বা নুর আহমদ, কাউকেই ছাড়ছিল না মিচেল-মইন জুটি। অবশেষে জুটি ভাঙেন মোহিত শর্মা। দ্বিতীয় বলেই তুলে নেন মিচেলকে (৬৩)। কিছু ক্ষণ পরে ফিরে যান মইনও (৫৬)।
তার আগে ব্যাট করতে নেমে ২৩১/২ তোলে গুজরাত। হারলেই এ বারের আইপিএল থেকে বিদায়। মাথার উপর সেই চাপ নিয়ে চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিল গুজরাত টাইটান্স। মরণ-বাঁচন ম্যাচে একই ইনিংসে জোড়া শতরান দেখা যায়। শুভমন গিল এবং সাই সুদর্শন দু’জনেই শতরান করেন। ১৮তম ওভারে জুটি ভাঙে। তত ক্ষণে যুগ্ম ভাবে সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটির নজির তৈরি হয়ে গিয়েছে।
মিচেল স্যান্টনার প্রথম ওভারে দেন ১৪ রান। সেই শুরু। পঞ্চম ওভারে শার্দূল ঠাকুর তিন রান দেন। এ ছাড়া আর দু’টি বাদে প্রতিটি ওভারেই ১০ রানের বেশি তোলে গুজরাত। সিমরজিত সিংহের একটি ওভার থেকে আসে ২৩ রান। বাকি কোনও বোলারই দাঁত ফোটাতে পারেননি।
জয় ছাড়া কোনও বিকল্প ছিল না। চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে তাই প্রথম ওভার থেকেই নিজের মনোভাব স্পষ্ট করে দেন গুজরাতের দুই ওপেনার। মাঠের এমন কোনও দিক নেই যে দিকে তাঁরা বল মারেননি। ইনিংসের অর্ধেকও তখন গড়ায়নি। ক্যামেরা ধরে চেন্নাই অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোয়াড়কে। হতাশ মুখে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। মহেন্দ্র সিংহ ধোনির অবস্থাও সে রকম ছিল।
আসলে এই ম্যাচে চেন্নাই তিন প্রধান পেসারকে ছাড়াই খেলতে নেমেছিল। দীপক চাহার চোটের জন্য বাইরে। মুস্তাফিজুর রহমান এবং মাথিশা পাথিরানা দেশে ফিরে গিয়েছেন। ভাঙাচোরা বোলিং বিভাগ নিয়ে গুজরাতের এই মারমুখী ব্যাটিংয়ের সামনে সামাল দিতে পারেননি।
এক সময় জল্পনা চলছিল, কে আগে শতরান করবেন। শুভমন এবং সুদর্শন দু’জনেই দাঁড়িয়েছিলেন ৪৮ বলে ৯৬ রানে। ১৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলে সিমরজিৎকে চার মেরে শতরান পূরণ করেন শুভমন। সেই ওভারেরই শেষ বলে ছয় মেরে শতরান হয় সুদর্শনের।
দু’জনেই পর পর ফিরে যান। একই ওভারে শুভমন (১০৩) এবং সুদর্শনকে (১০৪) তুলে নেন তুষার দেশপান্ডে। গুজরাতের রান তোলার গতিও কমে যায়। পরের দিকের দুই ব্যাটার ডেভিড মিলার বা শাহরুখ খান সেই গতি বজায় রাখতে পারেননি।