IPL 2023

কলকাতায় ‘মোকা’ এল যশস্বীর ব্যাটে! ৪৭ বলে ৯৮, নাইট রাইডার্সকে গুঁড়িয়ে দিয়ে গেল রাজস্থান

ইডেনে ঝড় তুললেন যশস্বী জয়সওয়াল। কেকেআরের বিরুদ্ধে বিধ্বংসী ব্যাটিং করলেন তিনি। যশস্বীর ব্যাটে কেকেআরকে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকায় তিন নম্বরে পৌঁছে গেল রাজস্থান রয়্যালস।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১১ মে ২০২৩ ২২:৩৭
Share:

ইডেনে কেকেআরকে ছারখার করে দিলেন যশস্বী জয়সওয়াল। ছবি: আইপিএল

ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ আছড়ে পড়ার আগেই ইডেনে আছড়ে পড়ল যশস্বী জয়সওয়াল নামের এক ঘূর্ণিঝড়। কলকাতা নাইট রাইডার্সকে লন্ডভন্ড করে দিল সেই ঝড়। একার ব্যাটে রাজস্থান রয়্যালসকে জেতালেন যশস্বী। সেই সঙ্গে এ বারের আইপিএলে নিজের ব্যাটিংয়ের সিলমোহর লাগিয়ে দিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। ফুচকা বিক্রি করা যশস্বী যেন বিনে পয়সায় চার-ছক্কার ফুচকা খাইয়ে গেলেন নাইটদের। সঙ্গে দিলেন দেদার ফাও। তার আনন্দে মাতল ইডেন। যশস্বীর ব্যাটিংকে দাঁড়িয়ে কুর্নিশ জানালেন দর্শক।

Advertisement

কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্লে-অফে ওঠার স্বপ্নে বড় ধাক্কা দিল রাজস্থান রয়্যালস। যুজবেন্দ্র চহাল দেখালেন, লেগ স্পিনের জাদুতে কী ভাবে ব্যাটারদের ধোঁকা দেওয়া যায়। অন্য দিকে যশস্বীকে দেখে মনে হচ্ছিল, বুক ক্রিকেট খেলতে নেমেছেন। প্রতিটা বল বাউন্ডারির বাইরে গিয়ে পড়ছিল। ১৫০ রান তাড়া করতে নেমে প্রথম তিন ওভারেই খেলা কেকেআরের হাত থেকে ছিনিয়ে নিলেন তিনি। মাত্র ১৩ বলে অর্ধশতরান করলেন যশস্বী। আইপিএলের ইতিহাসে এটি দ্রুততম অর্ধশতরান।

রাজস্থানের হয়ে ৪ উইকেট নেওয়া চহাল বিরতিতে বলছিলেন, তাঁদের প্রথম লক্ষ্য ইডেনে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে হারানো। এই ম্যাচ তাঁদের কাছে কোয়ার্টার ফাইনাল। টানা তিন ম্যাচে হারের জ্বালার শোধ কেকেআরের বিরুদ্ধে পুষিয়ে নিল রাজস্থান। বোলিং, ফিল্ডিং, ব্যাটিং— তিন ক্ষেত্রেই ঘরের মাঠে কলকাতাকে দাঁড়াতে দিল না সঞ্জু স্যামসনের দল। ম্যাচ জিতে পয়েন্ট তালিকায় এক লাফে তিন নম্বরে উঠে এল রাজস্থান।

Advertisement

টসে জিতে কলকাতাকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠান সঞ্জু। শুরুটা ভাল হয়নি কেকেআরের। আরও এক বার ব্যর্থ দলের ওপেনিং জুটি। ট্রেন্ট বোল্টের বলে জেসন রয় ও রহমানুল্লা গুরবাজ় অল্প রানে আউট হলেন। তবে দু’টে ক্ষেত্রেই কৃতিত্ব দলের ফিল্ডারদের। বাউন্ডারিতে জেসনের দুরন্ত ক্যাচ ধরলেন শিমরন হেটমায়ার। গুরবাজ়ের ক্যাচ ধরলেন সন্দীপ শর্মা।

দুই ওপেনার আউট হওয়ার পরে ইনিংস ধরার চেষ্টা করেন নীতীশ রানা ও বেঙ্কটেশ আয়ার। কিন্তু রাজস্থানের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে হাত খুলে খেলতে পারছিল না কেকেআর। বেঙ্কটেশ বড় ইনিংস খেললেও নীতীশ ২২ রান করে আউট হয়ে যান। রাজস্থানের হয়ে মাঝের ওভারে উইকেট নিলেন চহাল। নীতীশকে আউট করার সঙ্গে আইপিএলে সর্বাধিক উইকেটের মালিক হলেন তিনি। ভেঙে ফেললেন ডোয়েন ব্রাভোর নজির।

আন্দ্রে রাসেল আগের ম্যাচে ঝড় তুললেও এই ম্যাচে ব্যর্থ। তার মাঝেই নিজের অর্ধশতরান করেন বেঙ্কটেশ। তার পরেই অবশ্য ৫৭ রানের মাথায় চহালের বলে ফিরলেন তিনি। কলকাতার নতুন নায়ক রিঙ্কু এই ম্যাচে রান পেলেন না। তিনিও চহালের শিকার। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৪৯ রানে শেষ হল কেকেআরের ইনিংস।

কেকেআরের বিরুদ্ধে রাজস্থানের স্পিনারদের দেখে মনে হচ্ছিল, কলকাতার স্পিনাররাও হয়তো ভাল বল করবেন। প্রথম ওভারে বল করতে যান নীতীশ। আর প্রথম ওভারেই খেলার ফল নিশ্চিত করে দিলেন যশস্বী। প্রথম ওভারে তিনি ২৬ রান করলেন। সেই শুরু। তার পরে আর থামানো গেল না তাঁকে। তিন ওভারের মধ্যেই নিজের অর্ধশতরান করলেন যশস্বী। ১৩ বলে আইপিএলের ইতিহাসের দ্রুততম অর্ধশতরান করলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। লোকেশ রাহুল ও প্যাট কামিন্সের নজির ভেঙে দিলেন তিনি।

বাটলার শূন্য রানে রান আউট হলেও রাজস্থানের ব্যাটিংয়ে তার কোনও প্রভাব পড়েনি। কারণ, যশস্বীর বিধ্বংসী ব্যাটিং। কোনও বোলারকে রেয়াত করছিলেন না তিনি। দেখে মনে হচ্ছিল, ক্রিকেট বলকে ফুটবলের মতো দেখছেন যশস্বী। পাওয়ার প্লে-তেই ৭৮ রান তুলে ফেলে রাজস্থান।

তার পরেও ব্যাটিং ঝড় থামেনি রাজস্থানের। সব বোলারকেই ব্যবহার করেন নীতীশ। কিন্তু কেউই যশস্বী ও সঞ্জুকে থামাতে পারেননি। যশস্বীকে দেখে হাত খোলা শুরু করেন সঞ্জুও। দুই ব্যাটারের মধ্যে যেন ছক্কা মারার প্রতিযোগিতা চলছিল।

শেষ দিকে শতরান করারও সুযোগ এসেছিল যশস্বীর সামনে। তাঁর শতরানের জন্য নিজের অর্ধশতরানও ছেড়ে দেন সঞ্জু। কিন্তু ২ রানের জন্য তিন অঙ্কে পৌঁছতে পারেননি যশস্বী। ৪৭ বলে ৯৮ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। সঞ্জু অপরাজিত থাকেন ২৯ বলে ৪৮ রানে। ৪১ বল বাকি থাকতে ৯ উইকেটে ম্যাচ জিতে যায় রাজস্থান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement