মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে শেষ ওভারে দুরন্ত বল করেছেন লখনউ সুপার জায়ান্টসের মহসিন খান। ছবি: আইপিএল
মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে শেষ ওভারে ম্যাচের নায়ক হয়ে উঠেছেন মহসিন খান। লখনউ সুপার জায়ান্টসের এই পেসারের হাতে হেরেছেন রোহিত শর্মারা। ৬ বলে ১১ রান করতে পারেননি তাঁরা। অথচ রোহিতদের বিরুদ্ধে দলকে জেতাতে মাঠে নামেননি মহসিন। নিজের জন্যও নয়। তিনি নেমেছিলেন তাঁর বাবার জন্য।
মহসিনের বাবা হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর কথা ভেবে চিন্তা হচ্ছিল মহসিনের। কিন্তু তার পরেও খেলতে নেমেছিলেন তিনি। শুধু বাবার জন্য। ম্যাচ শেষে লখনউয়ের পেসার বলেছেন, ‘‘এক বছর পরে আমি খেলছি। নিজেই চোট থেকে উঠেছি। আমার বাবাও গত ১০ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি। বাবার কথা খুব মনে পড়ছে। বাবার জন্যই আজ খেলতে নেমেছিলাম। আশা করি আমার খেলায় বাবা খুশি হবে।’’
শেষ ওভারে রান-আপ কিছুটা কমিয়ে বল করেছেন মহসিন। সেই সময় কী পরিকল্পনা করেছিলেন সেটাও জানিয়েছেন লখনউয়ের পেসার। মহসিন বলেছেন, ‘‘রান আপ কিছুটা কমিয়েছিলাম। নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করছিলাম। ঠিক করেছিলাম, বেশি গতিতে বল করব না। ইয়র্কার করার চেষ্টা করছিলাম। ব্যাটারদের বুঝতে দিইনি আমি কী করতে চাইছি। সেই কারণেই সফল হয়েছি।’’
অথচ ক্রিকেটজীবনও শেষ হয়ে যেতে পারত মহসিনের। চিকিৎসা শুরু করতে আর কিছু দিন দেরি হলে কেটে ফেলতে হত তাঁর বাঁ হাত। মুম্বইকে হারানোর পর জীবনের এমনই কঠিন সময়ের গল্প শুনিয়েছেন মহসিন। পুরো সুস্থ হতে না পারায় এ বারের আইপিএলের প্রথম দিকে লখনউয়ের হয়ে খেলতে পারেননি বাঁহাতি জোরে বোলার। খেলতে গিয়েই গুরুতর চোট পেয়েছিলেন। তাঁর বাঁ কাঁধে রক্ত জমাট বেঁধে গিয়েছিল। সুস্থ হওয়ার জন্য অস্ত্রোপচার করাতে হয়।
মহসিন বলেছেন, ‘‘আশা করব আমার মতো চোট কোনও ক্রিকেটার পাবে না। আঘাত লেগে আমার ধমনীতে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আমার হাতের স্নায়ু সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে গিয়েছিল। সেই কঠিন সময়ে ক্রিকেট সংস্থা, গৌতম গম্ভীর স্যর, রাজীব শুক্লা স্যর, লখনউ ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি, সঞ্জীব গোয়েনকা স্যর এবং পরিবারের সকলের কাছ থেকে অনেক সাহায্য পেয়েছি।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘সুস্থ হওয়ার জন্য অস্ত্রোপচারের আগে এবং পরে আমাকে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়েছে। খুব কঠিন ছিল বিষয়টা। ভাবিনি আবার কখনও ক্রিকেট খেলতে পারব। আমি হাত তুলতে পারতাম না। হাত পুরো সোজাও করতে পারতাম না।’’