ব্যাট হাতে কলকাতার রিঙ্কুর তান্ডব দেখল গুজরাত। ছবি: আইপিএল।
শেষ ৬ বলে দরকার ছিল ২৯ রান। গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে কলকাতা নাইট রাইডার্স তুলল ৩১ রান। তার মধ্যে ৫ বলে ৩০ রান করলেন রিঙ্কু সিংহ। চাপের মুখে কলকাতার মিডল অর্ডার ব্যাটারের অবিশ্বাস্য ব্যাটিং কেড়ে নিল রশিদ খানদের মুখের গ্রাস।
কলকাতার ইনিংসের ১৯ ওভারের পর গুজরাতের জয় প্রায় নিশ্চিত মনে হচ্ছিল। প্রায় হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন কলকাতার সমর্থকরা। টেলিভিশনের ক্যামেরায় দেখা গেল নাইট কোচ চন্দ্রকান্ত পন্ডিতের থমথমে মুখ। দলের দ্বিতীয় জয়ের আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন দেখাচ্ছিল তাঁকে। কিন্তু রিঙ্কুই বোধহয় একমাত্র অন্যরকম ভেবেছিলেন।
যশ দয়ালের প্রথম বলে ১ রান নিয়ে রিঙ্কুকে স্ট্রাইক দেন উমেশ যাদব। বাকিটা উইকেটের নন স্ট্রাইকার প্রান্তে দাঁড়িয়ে শুধু দেখলেন। দেখল গোটা নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম।
প্রথম ছক্কা: যশের ওভারের দ্বিতীয় বলটি ছিল অফ স্টাম্পের বাইরে ফুলটস। রিঙ্কুর ব্যাটে লাগার পর বল উড়ে গেল ওয়াইড লং অফে।
দ্বিতীয় ছক্কা: যশের তৃতীয় বলটি ছিল লেগ সাইডে নিচু ফুলটস। দ্রুত বলের লাইন পড়ে ফেলেন রিঙ্কু। নিমেষে সরে গিয়ে চালালেন ব্যাট। বল গিয়ে পড়ল ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ার লেগের ফেন্সে।
তৃতীয় ছক্কা: পর পর দু’টি ছক্কা খেলে ওভারের চতুর্থ বলটি বেশ খারাপ করলেন যশ। অফ স্টাম্পের বাইরে প্রায় কোমর সমান উচ্চতায় ফুলটস দিলেন। মরিয়া রিঙ্কুর ব্যাটে গেলে বল উড়ে গেল লং অফের উপর দিয়ে।
চতুর্থ ছক্কা: দলের সিনিয়রদের সঙ্গে আলোচনা করে পঞ্চম বল করার জন্য দৌড় শুরু করলেন যশ। অফ স্টাম্পের সামান্য বাইরে বল পড়ল। বলের উচ্চতাও খুব বেশি ছিল না। তবু রিঙ্কু সমান সাবলীল। বল উড়িয়ে দিলেন লং অনের উপর দিয়ে।
পঞ্চম ছক্কা: ম্যাচের শেষ বলের আগে বেশ কিছু ক্ষণ আলোচনা করলেন রশিদরা। কলকাতার জয়ের জন্য দরকার ছিল ৪ রান। যশ অফ স্টাম্পের বাইরে একটু খাটো লেংথে বল ফেললেন। তাও রিঙ্কু বল উড়িয়ে দিলেন প্রায় বোলারের মাথার উপর দিয়ে।
অসম্ভব চাপের মুখে দাঁড়িয়ে পর পর পাঁচ বলে ছক্কা হাঁকালেন রিঙ্কু। গোটা স্টেডিয়াম মন্ত্রমুগ্ধের মতো দেখল রিঙ্কুর তান্ডব। যশের আইপিএলজীবনকেই অনিশ্চয়তার সামনে দাঁড় করিয়ে দিল রিঙ্কুর ব্যাট। প্রায় হেরে যাওয়া ম্যাচ দলকে জিতিয়ে আর বলের দিকে তাকাননি রিঙ্কু। শট মেরেই নিশ্চিত হয়ে যান ছক্কা হচ্ছেই। সোজা ছুটতে শুরু করেন ডাগ আউটে থাকা সতীর্থদের দিকে। ওভারের শুরুতে থমথমে মুখে বসে থাকা পন্ডিতের চোখে তখন জল।