কেকেআরকে বিপদে ফেলতে পারে দলের তিনটি বড় দুর্বলতা। ছবি: আইপিএল।
গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে জয় এনে দিয়েছিল রিঙ্কু সিংহের অবিশ্বাস্য ইনিংস। ম্যাচের শেষ পাঁচ বলে ৫টি ছক্কা মেরে রুদ্ধশ্বাস জয় এনে দিয়েছিলেন তিনি। শেষ ৭ বলে রিঙ্কু তুলেছিলেন ৪০ রান! এইটুকু বাদ দিলে নাইটদের পারফরম্যান্স তেমন আশাপ্রদ ছিল না গত বারের চ্যাম্পিয়নদের ছিল না। রিঙ্কু প্রতি ম্যাচে দুরন্ত জয় এনে দেবেন, ভাবা ভুল। অন্তত তিনটি খামতি ঢাকতে না পারলে আইপিএলে কলকাতার বেশি দূর যাওয়া কঠিন।
আইপিএলের পয়েন্ট তালিকায় এখন তৃতীয় স্থানে রয়েছে কেকেআর। নাইটদের নেট রান রেট ১.৩৭৫। তিনটি ম্যাচের দু’টিতে জয় এসেছে। কিন্তু দ্রুত দুর্বলতা ঢাকতে না পারলে সমস্যা বড় হয়ে উঠতে পারে।
এক, দ্রুত উইকেট হারালে চলবে না। তিনটি ম্যাচের একটিতেও কেকেআরের ওপেনিং জুটি দলকে ভরসা দিতে পারেনি। তিনটি ম্যাচে কেকেআর প্রথম উইকেটের জুটিতে তুলেছে যথাক্রমে ১৩, ২৬ এবং ৩০ রান। টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বড় রানের ইনিংস তৈরি করতে হলে, ভাল শুরু দরকার। পাওয়ার প্লে-র (প্রথম ৬ ওভার) সুবিধা যতটা বেশি সম্ভব কাজে লাগাতে হবে নাইটদের। তিনটি ম্যাচেই ওপেন করেছেন আফগান উইকেটরক্ষক-ব্যাটার রহমানুল্লা গুরবাজ়। কিন্তু প্রতি ম্যাচেই বদলে গিয়েছে তাঁর সঙ্গী। মনদীপ সিংহ, বেঙ্কটেশ আয়ার এবং এন জগদীশনকে দেখা গিয়েছে গুরবাজ়ের সঙ্গে। এখনও সঠিক ওপেন জুটি তৈরি করতে না পারা কেকেআরের বড় দুর্বলতা।
দুই, দলের যাঁরা বড় নাম এখনও পর্যন্ত তাঁরা তেমন কিছু করতে পারেননি। বিশেষত আন্দ্রে রাসেল। দীর্ঘ দিন কেকেআরের হয়ে খেললেও তাঁদের ছন্দে না থাকার খেসারত দিতে হচ্ছে নাইটদের। রাসেল তিনটি ম্যাচে করেছেন যথাক্রমে ৩৫, শূন্য এবং ১ রান। এখনও বল করতে দেখা যাননি তাঁকে। অথচ এই রাসেলই গত বছর করেছিলেন ৩৩৫ রান। নিয়েছিলেন ১৭টি উইকেট। প্রত্যাশিত ছন্দে নেই অধিনায়ক নীতীশ রানাও। দলকে ব্যাট হাতে তেমন ভরসা দিতে পারছেন না। প্রথম একাদশের এই দুই গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছেন কলকাতার জন্য। কেকেআরের ভাল ফলের জন্য তাঁদের ছন্দে ফেরা জরুরি।
তিন, দলের জোরে বোলিং আক্রমণ। উমেশ যাদব, লকি ফার্গুসন, টিম সাউদি এবং শার্দূল ঠাকুর রয়েছেন দলে। এঁদের কেউই এখনও পর্যন্ত দলকে ভরসা দেওয়ার মতো পারফরম্যান্স করতে পারেননি। এখনও পর্যন্ত ২৮ ওভার বল করে কলকাতার জোরে বোলাররা নিয়েছেন ৪ উইকেট। দলের ভাল পারফরম্যান্সের জন্য সাউদি, ফার্গুসন, উমেশদের মতো অভিজ্ঞ বোলারদের আরও বেশি দায়িত্ব নিতে হবে। প্রতিপক্ষের ইনিংসকে শুরুতে ধাক্কা দিতে হবে। প্রতি ম্যাচে স্পিনারদের উপর নির্ভর করলে ভুগতে হতে পারে কলকাতাকে।
রিঙ্কুর অবিশ্বাস্য ইনিংসের নীচে অনেকটাই ঢাকা পড়ে গিয়েছে দলের তিনটি বড় দুর্বলতা। অনেকটা প্রদীপের আলোর নীচে থাকা অন্ধকারের মতো। যা উদ্বেগ বাড়াতে পারে আইপিএলের কলকাতা ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির।