আগ্রাসী: রাসেলকে আজও এই ভঙ্গিতে দেখতে চান নাইট ভক্তরা।
পুরনো সৈন্যই উদ্বেগের কারণ কলকাতা নাইট রাইডার্সের। কেকেআরের হয়ে দীর্ঘদিন খেলে যাওয়া কুলদীপ যাদবই এখন পথের কাঁটা শ্রেয়স আয়ারদের। চায়নাম্যান বোলারকে কী ভাবে সামলানো যায়, তার ছক তৈরি করা হয়েছে শেষ দু’দিন ধরে। এমনকি খাটো লেংথের বোলিংয়ের বিরুদ্ধেও সমস্যায় পড়তে দেখা গিয়েছে নীতীশ রানা, আন্দ্রে রাসেলদের। খলিল আহমেদ, শার্দূল ঠাকুরদের সামলানোর বিশেষ প্রস্তুতিও চলছে গত আটচল্লিশ ঘণ্টায়।
কলকাতার সামনে প্লে-অফের পথ আদৌ মসৃণ নয়। আগামী ছ’টি ম্যাচের মধ্যে পাঁচটি ম্যাচ না জিতলে প্লে-অফের স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে কেকেআরের। প্লে-অফ ম্যাচ হবে নাইটদের ঘরের মাঠ ইডেনে। সেখানে কলকাতার সমর্থকদের সামনে খেলার জন্য শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যেতে চান নাইট অধিনায়ক। তাই প্রত্যেকটি ম্যাচের আগে বিশেষ প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে পুরো দলকে।
দিল্লি ম্যাচের আগে চায়নাম্যান বোলারকে সামলানোর জন্য দলের এক বাঁ-হাতি স্পিনারকে দিয়ে শেষ দু’দিন ধরে লেগস্পিন করানো হচ্ছে। তিনি রাহুল সাওয়ান্ত। মুম্বইয়ের এই ক্রিকেটার বাঁ-হাতি অফস্পিনের পাশাপাশি লেগস্পিনও করতে পারেন। তাঁকে খেলেই কুলদীপের জন্য তৈরি হচ্ছে কেকেআর। শেষ ম্যাচে কুলদীপ চার ওভারে ৩৫ রান দিয়ে তুলে নিয়েছিলেন শ্রেয়স, প্যাট কামিন্স ও উমেশ যাদবের উইকেট। মাঝের সারির ব্যাটিংয়ে ভাঙন ধরানোয় ১৭১ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল কেকেআর। কুলদীপের ঘূর্ণি সামলানোর উপায় খুঁজছিল নাইটরা। রাহুলকে নেটে সামলিয়ে আজ, বৃহস্পতিবার ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে কুলদীপ কাঁটা নাইটরা উপড়ে ফেলতে পারেন কি না, সেটাই দেখার।
অন্য দিকে কামিন্স, রাসেলদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে খাটো লেংথের বল করার। যাতে খলিল, শার্দূল, মুস্তাফিজ়ুরদের বাউন্সার খেলতে সমস্যা না হয়। সবচেয়ে বেশি সমস্যা দেখা গিয়েছে রানার। লকি ফার্গুসনের গতি ও বাউন্সে রীতিমতো ভয় পেয়ে লাফিয়ে বল সামলাতে গিয়েছিলেন তিনি। বাউন্সারের সময় কোনও ব্যাটার চমকে উঠলে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন। রানার সঙ্গে তাই শেষ দু’দিনের অনুশীলনে অনেক বেশি সময় নিয়ে আলোচনা করতে দেখা যায় কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালামকে। কোথায় তাঁর সমস্যা, কী করলে তা ঠিক হতে পারে, সে সব নিয়ে আলোচনা চলে কোচের সঙ্গে। দিল্লির বিরুদ্ধে নাইটদের প্রথম একাদশে বেশ কিছু পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। অ্যারন ফিঞ্চকে নেটে শুরুর দিকে ব্যাট করানো হচ্ছে। তাঁকে প্রথম একাদশে ফেরানো হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে হাফসেঞ্চুরি করার পরেও গুজরাত ম্যাচে বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল ফিঞ্চকে। নাইট সমর্থকেরাও এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি। গণমাধ্যমে নাইটদের দলগঠন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ফিঞ্চের মতো বিশেষজ্ঞ ওপেনারকে দলে ফেরানো হয় কি না, নজর থাকবে কেকেআর ভক্তদের।
নাইটদের ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিয়োয় কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালাম বলেছেন, ‘‘দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে প্রত্যেককে একসঙ্গে লড়াই করে ফিরে আসতে হয়। গত মরসুমে আমাদের এ রকমই পরিস্থিতি ছিল। সেখান থেকে ফাইনাল খেলেছে দল। শেষ বার পারলে এ বার কেন পারব না?’’ যোগ করেন, ‘‘যতটা সম্ভব দলের প্রত্যেককে আত্মবিশ্বাসী করে তোলার চেষ্টা করব। প্রত্যেকটা বল সর্বশক্তি দিয়ে খেলব। কোনও ভাবেই কোনও প্রতিপক্ষকে হাল্কা ভাবে নেব না। পুরো চল্লিশ ওভার সমান ভাবে লড়াই করে যেতে হবে। তবে আসবে সাফল্য।’’
ম্যাকালামের বক্তব্যে নাইটরা উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন কি না, তার জবাব পাওয়া যাবে বৃহস্পতিবারের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে।