নারাইনের হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পরেও তাঁকে নিয়ে আশাবাদী কেকেআর। ছবি: পিটিআই
কলকাতা নাইট রাইডার্সের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সুনীল নারাইন। অতীতে কলকাতাকে অনেক ম্যাচ জিতিয়েছেন। কখনও বল হাতে। আবার কখনও ব্যাট হাতে। এ বার তাঁর পারফরম্যান্স নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন উঠেছে।
কেকেআর সমর্থকদের হতাশ করেছেন নারাইন। তবু তাঁর প্রতি অটুট কেকেআর কর্তৃপক্ষের আস্থা। ১৪টি ম্যাচের পর সমাজমাধ্যমেও সেই আস্থার নিদর্শন রাখল কেকেআর।
কথায় বলে, ‘বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহু দূর’। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটারকে নিয়ে কলকাতা নাইট রাইডার্স কর্তৃপক্ষের অবস্থা অনেকটা এমনই। ম্যাচের পর ম্যাচ ব্যর্থতা সত্ত্বেও তাঁরা বিশ্বাস করেছেন, নারাইন এবং আন্দ্রে রাসেল সাফল্য এনে দেবেন। সেই বিশ্বাস থেকেই আইপিএলের লিগ পর্বের ১৪টি ম্যাচেই খেলানো হয়েছে দুই ক্যারিবিয়ানকে। অথচ অন্য বিদেশি ক্রিকেটাররা একটি-দু’টি ম্যাচে ব্যর্থ হলেই বাদ দেওয়া হয়েছে প্রথম একাদশ থেকে। প্রতিযোগিতার মাঝে একাধিক বার নারাইন এবং রাসেলের প্রতি অগাধ আস্থার আভাস পাওয়া গিয়েছে কেকেআর অধিনায়ক নীতীশ রানা এবং কোচ চন্দ্রকান্ত পন্ডিতের কথায়। সেই আস্থা এ বার দেখা গেল সমাজমাধ্যমে।
শেষ ম্যাচে লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে নারাইন ৪ ওভারে ২৮ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন। সেই পরিসংখ্যান তুলে ধরে কেকেআরের পক্ষে লেখা হয়েছে, ‘‘এমন পারফরম্যান্স আবার দেখার জন্য আমরা অপেক্ষা করতে পারছি না।’’ তা হলে কি আগামী বছর আইপিএলেও বেগনি জার্সি গায়ে মাঠে নামবেন ৩৪ বছরের ক্রিকেটার? তাঁকে নিয়েই আগামী বছরের পরিকল্পনা করছেন নাইট রাইডার্স কর্তৃপক্ষ? কেকেআরের পোস্টের পর এই প্রশ্ন তৈরি হয়েছে কলকাতার সমর্থকদের মধ্যে।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নারাইনের বলের ধার কমেছে। এ বার নারাইন ১৪টি ম্যাচ খেলে উইকেট পেয়েছেন ১১টি। ওভারপ্রতি খরচ করেছেন ৭.৯৭ রান। তাঁর বল খেলতে ব্যাটাররা তেমন সমস্যায় পড়েননি। প্রতিটি উইকেট নিতে নারাইন খরচ করেছেন ৩৪.৮১ রান। প্রতি ২৬.১৮ বলে একটি উইকেট পেয়েছেন। অর্থাৎ, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এক জন বোলারের জন্য নির্ধারিত ৪ ওভার বা ২৪ বলে নারাইন কোনও উইকেট নিতে পারেননি।
ব্যাট হাতেও আগের মতো পারফরম্যান্স করতে পারছেন না ওয়েস্ট ইন্ডিজের অলরাউন্ডার। এ বারের আইপিএলে করেছেন মাত্র ২১ রান। সর্বোচ্চ অপরাজিত ৭। গড় ৩। স্ট্রাইক রেট ৮৪। ফিল্ডার নারাইনও সহজ ক্যাচ ফেলেছেন। যদিও নাইট কর্তৃপক্ষের বিশ্বাস তাঁকে নতুন মাইলফলক স্পর্শ করার সুযোগ করে দিয়েছে। এ বারের আইপিএলে কেকেআরের হয়ে ১৫০টি ম্যাচ খেলার মাইলফলক স্পর্শ করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের অলরাউন্ডার।
শেষ দু’টি ম্যাচে ভাল বল করেছেন নারাইন। লখনউয়ের আগে চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে ৪ ওভার বল করে ১৫ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছিলেন। তাঁকে নাগাড়ে খেলিয়ে যাওয়ার মর্যাদা দিয়েছেন শেষ দু’ম্যাচে। তত ক্ষণে কেকেআরের প্লে-অফে ওঠার সম্ভাবনা চলে গিয়েছিল অন্য দলগুলির হাতে। তবু নারাইনেই আস্থা কেকেআরের।