শ্রেয়সের লক্ষ্য বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলা। — ফাইল চিত্র
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে আমদাবাদ টেস্টে চোট পেয়েছিলেন। তার পরে এক দিনের সিরিজ় এবং আইপিএলের প্রথম ভাগ থেকে ছিটকে গিয়েছেন। কলকাতা নাইট রাইডার্স দল যেখানে আইপিএলের প্রথম ম্যাচ খেলতে মোহালিতে রয়েছে, চোট সারাতে প্রায় আড়াই হাজার কিলোমিটার দূরে বেঙ্গালুরুর জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে (এনসিএ) পৌঁছে গেলেন শ্রেয়স আয়ার। আগামী কিছু দিন সেখানে তাঁর শুশ্রূষা চলবে।
পিঠের চোটের কারণে আগেই শ্রেয়স সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে অস্ত্রোপচার করাবেন না। তাই এনসিএ-তে সময় ধরে ধরে তাঁর চিকিৎসা করা হবে। বৃহস্পতিবারই এক ধরনের ইঞ্জেকশন নেওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। কত দিন তিনি এনসিএ-তে থাকবেন, তা সেখানকার চিকিৎসকরাই ঠিক করবেন।
আয়ার নিজে মনেপ্রাণে চাইছেন বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলতে। আগামী ৭ জুন লন্ডনের ‘দ্য ওভাল’-এ অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে খেলবে ভারত। সেই ম্যাচে খেলার জন্যে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত পিছিয়ে দিয়েছেন শ্রেয়স। তাঁর এক ঘনিষ্ঠ বলেছেন, “বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এবং এনসিএ-র চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছে শ্রেয়স। অস্ত্রোপচার পিছিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে সবাই মোটামুটি একমত। বিশেষজ্ঞদের মত নিয়েই এগোতে চাইছে শ্রেয়স।”
তবে কেকেআরের হয়ে এ বার তাঁকে আইপিএলে খেলতে দেখা যাবে কি না, তাই নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে। শ্রেয়স যদি আইপিএলে খেলেন এবং চোট লাগে, তা হলে বিশ্ব টেস্ট ফাইনালে খেলার সম্ভাবনা শেষ হয়ে যাবে। ফলে অস্ত্রোপচার পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তেরও কোনও মূল্য থাকবে না। ওই ঘনিষ্ঠের মতে, শ্রেয়স নিজের শারীরিক অবস্থা দেখেই ঠিক করবেন আদৌ তিনি আইপিএলে এ বার খেলবেন কি না।
কেকেআরের কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত মঙ্গলবার বলেছিলেন, “শ্রেয়সের অনুপস্থিতি দলে প্রভাব ফেলবেই। খুবই দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি। আশা করি শ্রেয়স দ্রুত মাঠে ফিরবে এবং দলে পার্থক্য গড়ে দেবে।”
নাইটরা অবশ্য মনেপ্রাণে চায় শ্রেয়স অন্তত শেষ কয়েকটি ম্যাচে খেলুন। নীতীশ রানাকে অধিনায়ক ঘোষণা করার সময়েই শ্রেয়সের সম্পর্কে লেখা হয়, “আমরা আশাবাদী, চলতি মরসুমে কোনও না কোনও সময়ে শ্রেয়স হয়তো আমাদের দলের হয়ে খেলতে পারবেন।” বার্তাটি পরিষ্কার, শ্রেয়সকে নিয়ে হাল ছাড়তে মোটেই রাজি নয় কলকাতা। যে মুহূর্তে তিনি মাঠে নামার মতো সুস্থ হয়ে উঠবেন, তখনই তাঁকে দলে নেওয়া হবে।
বেশির ভাগ আইপিএলেই দেখা গিয়েছে, শেষ দিকের পাঁচ-ছ’টি ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। অনেক হিসেবনিকেশ বদলে যায় সেই কয়েক দিনে। ম্যাচ জিতে প্লে-অফে ওঠার দৌড় যেমন থাকে, তেমনই খেয়াল রাখতে হয় নেট রান রেটের দিকেও। সেই সময়ের কয়েকটি ম্যাচে শ্রেয়সকে পেলে কলকাতার প্লে-অফে ওঠার সম্ভাবনা জোরালো হবে, যদি না আগেই তারা ভাল খেলে প্লে-অফ কার্যত নিশ্চিত করে ফেলে থাকে।
শ্রেয়স না থাকায় ভারতীয় দল যে রকম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনই কলকাতারও বিপদ। মাঝের সারিতে ভরসার নাম ছিলেন মুম্বইয়ের এই ব্যাটার। দিল্লি থেকে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে নিলামে তাঁকে কেনার পিছনে উদ্দেশ্যই ছিল অধিনায়ক বানানো। সেটাই করা হয়। কিন্তু এক মরসুম নেতৃত্ব দিয়ে কলকাতার হয়ে বিরাট কিছু করতে পারেননি শ্রেয়স। দল গত বার প্লে-অফে উঠতে পারেনি। শ্রেয়স নিজেও আহামরি খেলতে পারেননি। বরং বার বার প্রশ্নের মুখে পড়েছে তাঁর দল নির্বাচন এবং ব্যাটিং অর্ডারে বদল।