আইপিএলে ট্রফি জেতাই তাঁকে ভারত অধিনায়ক করার জন্য দাবি তুলেছিল। কিন্তু ভারত অধিনায়ক হওয়ার ঠিক পরের আইপিএলে টানা আট ম্যাচে হার। একের পর এক ম্যাচ হেরেছেন এবং রোহিত অসহায় হয়ে গিয়েছেন। প্রতিটি ম্যাচে হারের পর কী বলেছেন রোহিত?
হার এক: ৪ উইকেটে দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে হার দিয়ে শুরু করে মুম্বই। ম্যাচ হেরে রোহিত বলেন, “ভেবেছিলাম আমরা ভাল রান করেছি। এটা এমন পিচ নয় যে ১৭০ রান উঠবে। আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী বল করতে পারিনি। প্রথম ম্যাচ হোক বা শেষ, আমরা সব সময় তৈরি হয়েই মাঠে নামি। আমরা সব ম্যাচ জিততে চাই। হেরে হতাশ, কিন্তু এটাই শেষ নয়।”
হার দুই: রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে ২৩ রানে হার। রোহিত বলেন, “ওরা দারুণ ব্যাট করেছে। বাটলার অকল্পনীয় ইনিংস খেলেছে। আমরা ওকে আউট করার সব রকম চেষ্টা করেছি। কিন্তু ও খুব ভাল খেলেছে। ভেবেছিলাম এই রান তাড়া করে জেতা সম্ভব। ৭ ওভারে যখন ৭০ রান বাকি ছিল, তখন আরও বেশি করে মনে হয়েছিল যে আমরা জিততে পারি। তবে প্রতিযোগিতা সবে শুরু হয়েছে। এখন এমন হতেই পারে। বুমরা, মিলস ভাল বল করেছে। তিলক ভাল ব্যাট করেছে। তবে সূর্যকুমারকে প্রয়োজন। ও সুস্থ হয়ে গেলেই খেলতে নামবে।”
হার তিন: কলকাতার বিরুদ্ধে ৫ উইকেটে হার। রোহিত বলেন, “ভাবতেই পারিনি কামিন্স এসে এই রকম ইনিংস খেলবে। ওকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। খেলা যত এগিয়েছে, পিচ তত ব্যাটিং সহায়ক হয়ে উঠেছে। প্রথম দিকে বল থেমে থেমে আসছিল। এমনিতে যদিও খুব ভাল পিচ। ব্যাট হাতে আমাদের শুরুটা ভাল হয়নি। বোলিংটাও পরিকল্পনা অনুযায়ী করতে পারিনি। ১৫তম ওভার অবধি ম্যাচ আমাদের হাতে ছিল। কিন্তু তার পর কামিন্স এসে সব ঘেঁটে দিল। এই হার হজম করা কঠিন। আমাদের প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে। বার বার এমন পরিস্থিতিতে থাকতে চাই না।”
হার চার: বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে সাত উইকেটে হার। রোহিত বলেন, “আমরা দু’জন বিদেশি নিয়ে খেলতে নেমেছিলাম। ভেবেছিলাম দলের ভারসাম্য ঠিক রাখতে এটাই প্রয়োজন। আমাদের ব্যাটিংটাকে শক্তিশালী করতে চেয়েছিলাম। কিছু বিদেশিকে এখনও দলে পাইনি। আমি শেষ অবধি ব্যাট করতে চাই। কিন্তু ভুল সময়ে আউট হয়ে গেলাম আমি। এই পিচ অবশ্যই ১৫০ রানের নয়। সূর্য দেখিয়ে দিয়েছে ঠিক ভাবে ব্যাট করলে রান করা সম্ভব। ব্যাটে, বলে আমরা ব্যর্থ। এক বার ছন্দে এসে গেলে, আশা করি ভাল খেলব আমরা।”
হার পাঁচ: পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ১২ রানে হার। রোহিত বলেন, “নেতিবাচক কিছু খুঁজে পাওয়াই মুশকিল। জয়ের খুব কাছে চলে এসেছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজেদের চাপটা ধরে রাখতে পারিনি। কোনও ভাবনাই কাজ করছে না। তবে ছেলেদের কৃতিত্বকে ছোট করতে চাই না। পঞ্জাব ভাল খেলেছে। আমরা ভাল ক্রিকেট খেলতে পারছি না। পরিস্থিতি বুঝে খেলতে হবে। আমাদের আরও তৈরি হয়ে মাঠে নামতে হবে।”
হার ছয়: লখনউয়ের বিরুদ্ধে ১৮ রানে হার। রোহিত বলেন, “রান তাড়া করার সময় বড় জুটি গড়া খুব প্রয়োজন। আমরা সেটাই করতে পারিনি। সেটা করতে না পারার কোনও কারণ ছিল না। আমরা চেষ্টা করেছি দলকে আগে রাখতে। লখনউয়ের ব্যাটিং গভীরতা প্রচুর। আমরা শেষের দিকে বুমরাকে রেখেছিলাম। ও ভাল বল করেছে, কিন্তু বাকি বোলারদেরও ভাল করতে হবে। প্রতিটা ম্যাচই আমরা নতুন সুযোগ হিসেবে দেখি। সেই ম্যাচে প্রয়োজন অনুযায়ী প্রথম একাদশ তৈরি করা হয়। আমরা এখনও কোনও ম্যাচ জিততে পারিনি কিন্তু মাথা নত করছি না। আমি নিজে দায়িত্ব নিচ্ছি, দল আমার থেকে যা প্রত্যাশা করে, সেটা দিতে পারছি না। আমি খেলাটা উপভোগ করার চেষ্টা করছি। সামনের দিকে তাকাতে চাই। এটাই শেষ নয়। আমরা আগেও ফিরে এসেছি এরকম জায়গা থেকে, আবার ফিরব।”
হার সাত: চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে তিন উইকেটে হার। রোহিত বলেন, “আমরা লড়াই করেছি। ভাল ব্যাটিং না করেও আমরা ম্যাচের মধ্যে ছিলাম। বোলাররা আমাদের ম্যাচে রেখেছিল। কিন্তু ধোনি ওদের ম্যাচটা জিতিয়ে দিল। আমাদের শুরুটা ভাল হয়নি। কিন্তু আমরা ওদের চাপে রেখেছিলাম। ব্যাটিং খারাপ করেও আমরা ম্যাচে ফিরে আসতে পেরেছিলাম। কিন্তু জয়ের জন্য সেটা যথেষ্ট ছিল না।”
হার আট: লখনউয়ের বিরুদ্ধে ৩৬ রানে হার। রোহিত বলেন, “আমরা ভাল বোলিং করেছিলাম। ব্যাট করার জন্য ভাল পিচ ছিল। মনে করেছিলাম রানটা তাড়া করে জেতা সম্ভব, কিন্তু আমাদের ব্যাটিং ভাল হয়নি। এরকম লক্ষ্য থাকলে ভাল ব্যাটিং করা জরুরি। এই প্রতিযোগিতায় আমরা ব্যাটিংটাই করতে পারিনি। ম্যাচ হারলে সমালোচনা হবেই। আমি চাই সকলকে সুযোগ দিতে। সবাই যাতে নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ পায় সেটা নিশ্চিত করতে চাই। যে ভাবে মরসুমটা যাচ্ছে আমরা কেউই সেটা চাইনি, কিন্তু এমনটা হয়।”