শ্রেয়সরা হারলেন দিল্লির কাছে। ছবি আইপিএল
নিলামে এ বার কলকাতা তাঁকে রাখেনি। তার আগের দু’টি মরসুমে দলে থেকেও খুব বেশি ম্যাচে খেলতে পারেননি তিনি। কলকাতাকে প্রথম বার সামনে পেয়েই হিসেব বুঝে নিলেন কুলদীপ যাদব। চারটি উইকেট নিয়ে একাই শেষ করে দিলেন কলকাতাকে। রবিবার দিল্লি ক্যাপিটালসের কাছে ৪৪ রানে হারল কলকাতা। দু’ম্যাচ জয়ের পর থামল তাঁদের রথ।
টসে হেরে যাওয়ার সময়ই ঋষভ পন্থ বলেছিলেন, প্রথমে ব্যাট করতে হলেও তাঁর কোনও অসুবিধা নেই। বাস্তবে সেটাই দেখা গেল। কলকাতার বোলারদের দিশাহীন বোলিংয়ের সামনে তাণ্ডব চালালেন দিল্লির ব্যাটাররা। স্কোরবোর্ডে ২১৫ তুলে ফেলে দিল্লি। বিরাট রানের বোঝা নিয়ে নামা সহজ কথা নয়। কলকাতার শুরুটাও ধীরগতিতে হল। ফলে জিততে কোনও অসুবিধাই হল না দিল্লির।
টসে হেরে ব্যাট করতে নেমেছিল দিল্লি। আগের ম্যাচে মাত্র চার রানে ফিরে যাওয়ার হতাশা কাটাতে বেশি সময় নিলেন না ডেভিড ওয়ার্নার। অস্ট্রেলীয় ব্যাটারের রানে ফেরা ছিল সময়ের অপেক্ষা। তবে রানের খরা কাটানোর জন্য যে কেকেআর ম্যাচকেই বেছে নেবেন এটা বোধহয় কেউ ভাবতেই পারেননি। শুরু থেকেই চূড়ান্ত আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলা শুরু করেন ওয়ার্নার এবং পৃথ্বী শ। উমেশ যাদব, রাসিখ সালাম, প্যাট কামিন্সদের পিটিয়ে প্রথম চার ওভারে ৫০ উঠে যায়। তাতেও থামার লক্ষণ দেখাচ্ছিলেন না কেউই। পৃথ্বী আগের ম্যাচেও ঝোড়ো শুরু করেছিলেন। এ দিনও তাঁর দাপট অব্যাহত। কলকাতা অধিনায়ক শ্রেয়স আয়ার বুঝতেই পারছিলেন না কাকে বোলিং করাতে আনবেন।
নবম ওভারে অবশেষে জুটি ভাঙলেন বরুণ চক্রবর্তী। তাঁর গুগলি বুঝতে না পেরে বোল্ড হয়ে গেলেন পৃথ্বী। ঋষভ পন্থ নেমেও চালিয়ে খেলা শুরু করেছিলেন। ওয়ার্নারের সঙ্গে ৫৫ রানের জুটি গড়ার পর ফিরে গেলেন তিনি। এর পর ললিত যাদব, রভম্যান পাওয়েল এবং ওয়ার্নারকে হারিয়ে কিছুক্ষণের জন্যে চাপে পড়েছিল দিল্লি। রানের গতিও কিছুটা কমে গিয়েছিল। কিন্তু সেই চাপ অচিরেই কাটিয়ে দিলেন অক্ষর পটেল এবং শার্দূল ঠাকুর।
নামের পাশে বোলার লেখা থাকলেও এ দিন তাঁরা যেন পাক্কা ব্যাটারের ভূমিকায় দেখা দিলেন। ১৪ বলে ২২ রান করলেন অক্ষর। শার্দূল আরও বেশি ভয়ঙ্কর ছিলেন। তিনটি ছয় এবং একটি চারের সাহায্যে তিনি ১১ বলে ২৯ রান করলেন। দু’জন মিলে ষষ্ঠ উইকেটে জুড়লেন ৪৯ রান। শুধু তাই নয়, দলকে দুশো পার করে ভাল জায়গায় পৌঁছে দিলেন তারা।
টসের সময় আত্মবিশ্বাসী থাকলেও কেকেআরের শুরুটা মোটেও ভাল হয়নি। সামনে বিরাট লক্ষ্যমাত্রা থাকা সত্ত্বেও অজিঙ্ক রহাণে যথেষ্ট ধীরগতিতে শুরু করেছিলেন। শার্দূলকে দু’টি ছক্কা মেরে রানের গতি বেঙ্কটেশ আয়ার কিছুটা বাড়ালেও তিনি বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না। বেঙ্কটেশ এবং রহাণে, দু’জনকেই দু’ওভারের ব্যবধানে তুলে নিলেন খলিল আহমেদ।
কলকাতা এর পরেও লড়াই ছাড়েনি। ধীরে ধীরে জুটি গড়ে দলকে জয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন নীতীশ রানা এবং শ্রেয়স। তৃতীয় উইকেটে ৬৯ রানের জুটিও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু দু’জনেই প্রলোভনে পা দিয়ে আউট হলেন। ললিত যাদব এসে প্রথম বলে ছয় খাওয়ার পর দ্বিতীয় বলেই স্লোয়ার দিয়েছিলেন। সেটাতেও ছয় মারতে গিয়ে সীমানার ধারে ধরা পড়লেন নীতীশ। তার কয়েক ওভার পরেই শ্রেয়স এগিয়ে এসে ছয় মেরেছিলেন কুলদীপকে। পরের বলেই কুলদীপের ডেলিভারিতে ঠকে গিয়ে বলের লাইন মিস। তাঁকে স্টাম্প করেন স্মিথ।