আবার অক্ষরও প্রশংসা করেছেন কুলদীপের। বলেছেন, ‘‘কুলদীপকে প্রথমেই বলে দেওয়া হয়েছিল, প্রত্যেকটা ম্যাচ ও খেলবে। ওর আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছি। আর এখন ও স্বপ্নের সব ডেলিভারি করছে।’’
যুযুধান: চহাল না কুলদীপ, শেষ হাসি থাকবে কার? ফাইল চিত্র
দিল্লি ক্যাপিটালসের জার্সিতে মাঠে নামার পরে এ বার যেন পুনর্জন্ম হয়েছে বাঁ-হাতি ‘রিস্ট-স্পিনার’ কুলদীপ যাদবের। নিজের নতুন দলকে জেতাতে একের পর এক ম্যাচে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছেন।
কলকাতা নাইট রাইডার্স ছেড়ে দেওয়ার পরে এ বারের নিলামে কুলদীপকে কিনে নেয় দিল্লি। নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির হয়ে তিনি প্রতিটা ম্যাচেই প্রায় চমকে দিয়েছেন!
নতুন দলের হয়ে খেলতে নেমে সাড়া ফেলেছেন আর এক ভারতীয় স্পিনারও। তিনি যুজ়বেন্দ্র চহাল। আজ, শুক্রবার, আইপিএলের মঞ্চে আবার একসঙ্গে দেখা যাবে কুল-চাকে। তবে জুটি হিসেবে নয়, তাঁরা খেলবেন পরস্পরের বিরুদ্ধে। দিল্লি ক্যাপিটালসের যদি থাকে কুলদীপ যাদব, তবে রাজস্থান রয়্যালসের আছে যুজ়বেন্দ্র চহাল। যিনি আগের ম্যাচে এক ওভারে হ্যাটট্রিক-সহ চার উইকেট নিয়ে রাজস্থানকে জিতিয়েছিলেন কেকেআরের বিরুদ্ধে। সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির তালিকায় ১৩ উইকেট পেয়ে দু’নম্বরে আছেন কুলদীপ। আর ১৭ উইকেট পেয়ে শীর্ষে লেগস্পিনার চহাল। দুই ‘রিস্টস্পিনার’ই ছ’টি করে ম্যাচ খেলেছেন।
কুলদীপ এবং চহালের সামনে চ্যালেঞ্জটা এ বার অবশ্য কঠিন হতে চলেছে। কারণ দু’দলেই রয়েছে বিধ্বংসী সব ব্যাটার। দিল্লির কুলদীপকে আটকাতে হবে রাজস্থান রয়্যালসের বিস্ফোরক ব্যাটিংকে। যেখানে সেরা ছন্দে ব্যাট করছেন জস বাটলার। শেষ দিকে বিধ্বংসী ব্যাটিং পাওয়া যাচ্ছে শিমরন হেটমায়ারের কাছ থেকে। আবার চহালের লড়াই ডেভিড ওয়ার্নার, পৃথ্বী শ, ঋষভ পন্থদের সঙ্গে। সব মিলিয়ে চায়নাম্যান এবং লেগস্পিনারের দ্বৈরথ দিল্লি বনাম রাজস্থান ম্যাচের বাড়তি আকর্ষণ হতে চলেছে।
বুধবার পঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে কুলদীপই ম্যাচের সেরা হয়েছেন। তাঁর বোলিং হিসেব ৪-০-২৪-২। ফিরিয়ে দেন কাগিসো রাবাডা এবং নেথান এলিসকে। ম্যাচের পরে সম্প্রচারকারী চ্যানেলে কুলদীপ নিজের দু’টি উইকেটের জন্যই কৃতিত্ব দিয়েছেন তাঁর অধিনায়ক ঋষভ পন্থকে।
ঋষভই নাকি তাঁকে একটি বিশেষ কৌশল নিতে বারবার বলে যাচ্ছিলেন। কুলদীপ নিজে যা প্রথমে করতে চাননি। শেষপর্যন্ত অবশ্য তিনি অধিনায়কের পরামর্শ শুনে বল করেই এলিসকে বোল্ড করেন। আর রাবাডার বিরুদ্ধে বল করার সময় কুলদীপ জানতেন, দক্ষিণ আফ্রিকার তারকা পা অনেকটা বাড়িয়ে শট খেলবেন না। ‘‘ও এক জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলা পছন্দ করে। সামনের পায়ে বিশেষ আসে না। এ সব ক্ষেত্রে দেখেছি, গুগলিটা খুব কাজে লাগে। রাবাডার বিরুদ্ধেও সেটাই প্রয়োগ করে সফল হয়েছি,’’ বলেছেন কুলদীপ।
এই চায়নাম্যান স্পিনার মনে করেন, ক্রিকেট তাঁর পুনর্জন্মের নেপথ্যে ঋষভের উৎসাহ খুবই কাজে এসেছে। তাঁর ভাল লাগে, বোলারেরা রান দিয়ে ফেললেও অধিনায়ক হতাশ হন না দেখে। ‘‘এই আইপিএলে আমি ভীষণ রকম উৎসাহ পেয়েছি ঋষভের কাছ থেকে। সাফল্য পেতে গেলে কী ভাবে এগোতে হবে, তার একটা পরিষ্কার ধারণা হয়েছে,’’ বলেছেন কুলদীপ।
প্রাক্তন এই ‘নাইট’ যোগ করেছেন, ‘‘এই মুহূর্তে নিজের বোলিং দারুণ উপভোগ করছি। এবং সেটা বহু দিন বাদে। এ বার আমার এত উইকেট পাওয়ার জন্য সব কৃতিত্ব প্রাপ্য ঋষভের। ও সবসময় স্পিনারদের সাহয্য করে। এবং সেটা একেবারে শেষ পর্যন্ত করে যায়। যা যে কোনও বোলারকেই আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। আমি নিজেকে দিয়ে সেটা বুঝেছি।’’ তবে কুলদীপ এটাও জানিয়েছেন, পঞ্জাব ম্যাচে তাঁর নয়, সেরার পুরস্কার পাওয়া উচিত ছিল অক্ষর পটেলের। বাঁ-হাতি স্পিনার অক্ষর মাত্র ১০ রান দিয়ে দু’উইকেট পান। আবার অক্ষরও প্রশংসা করেছেন কুলদীপের। বলেছেন, ‘‘কুলদীপকে প্রথমেই বলে দেওয়া হয়েছিল, প্রত্যেকটা ম্যাচ ও খেলবে। ওর আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছি। আর এখন ও স্বপ্নের সব ডেলিভারি করছে।’’