দু’মাস তিন দিন ধরে চলল এ বারের আইপিএল। দীর্ঘ লড়াই শেষে জিতল গুজরাত টাইটান্স। তবে শুধু ২৬ মার্চ থেকে ২৯ মে-র মধ্যে নয়, আনন্দবাজার অনলাইন চোখ রাখল তার বাইরে গিয়েও। কোন কোন মুহূর্ত নজর কাড়ল এ বারের আইপিএলে?
আইপিএল শুরু হওয়ার আগেই হঠাৎ চমক। চেন্নাই সুপার কিংস দলের নেতৃত্ব ছেড়ে দিলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। রবীন্দ্র জাডেজাকে দেওয়া হল দায়িত্ব। যদিও প্রথম ম্যাচেই বোঝা গিয়েছিল ধোনির ছায়াতেই রয়েছেন জাডেজা।
এ বারের আইপিএলের আগেই নেতৃত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন বিরাট কোহলী। আইপিএলের শুরুর দিকে নানা ম্যাচে দেখা যাচ্ছিল নিষ্প্রভ বিরাটকে। কখনও বাউন্ডারি লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। দল বিপদে পড়লেও তিনি এগিয়ে এসে ফ্যাফ ডুপ্লেসিকে পরামর্শ দিতে যাননি। যদিও শেষ দিকে অনেক বেশি আগ্রাসী হয়েছেন। ৩০ গজের ভিতরে ফিল্ডিং করেছেন। ব্যাটারকে স্লেজিংও করেছেন।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ১৪ বলে অর্ধশতরান করেন প্যাট কামিন্স। আইপিএলের ইতিহাসে দ্রুততম অর্ধশতরান করেন অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট অধিনায়ক। সেটাই ছিল এ বারের আইপিএলে কামিন্সের প্রথম ম্যাচ। এক ম্যাচেই পাঁচ লাখ টাকা পেয়ে যান ওই ইনিংস খেলে। কলকাতার জন্যেও অন্যতম সেরা মুহূর্ত কামিন্সের ওই বিধ্বংসী ইনিংস।
চেন্নাই দলের নেতৃত্ব ফের তুলে দেওয়া হল মহেন্দ্র সিংহ ধোনির হাতে। একের পর এক ম্যাচ হেরে বিপর্যস্ত সিএসকে-র হাল ফেরাতে ধোনিকেই ফের অধিনায়ক করে দেওয়া হয়। যদিও বিতর্ক শুরু হয় জাডেজাকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে। অনেকেই বলেন এটা জাডেজার জন্য ভাল হল না। শেষ পর্যন্ত যদিও চোটের কারণে আইপিএল থেকেই ছিটকে যান জাডেজা।
এ বারের আইপিএলে গতির ঝড় তুলেছিলেন উমরান মালিক। কাশ্মীরের এই পেসার সব দলকেই বিপর্যস্ত করেছেন তাঁর গতিতে। আইপিএলে হায়দরাবাদের খেলা সব ম্যাচেই সব থেকে জোরে বল করার পুরস্কার পান তিনি। উমরানকে নিয়ে নেট মাধ্যমে বলা হয়, গ্রুপ পর্বে হায়দরাবাদের খেলা ১৪টি ম্যাচ থেকে তিনি ১৪ লক্ষ টাকা পাবেনই। সেটার অন্যথাও হয়নি। যদিও এ বারের আইপিএলে সব থেকে জোরে বলটি করেন লকি ফার্গুসন।
এ বারের আইপিএলে তিন বার প্রথম বলে আউট হলেন বিরাট কোহলী। এই আইপিএলের আগে এই প্রতিযোগিতায় মাত্র তিন বার আউট হয়েছিলেন প্রথম বলে। এ বারের আইপিএলেই সেই কাণ্ড ঘটালেন বিরাট। তাঁর খারাপ ছন্দ আরসিবি-কেও বিপদে ফেলেছে। মার্কো জানসেন, দুস্মন্ত চামিরা এবং জগদীশ সুচিথের প্রথম বলে উইকেট দেন বিরাট।
২০১৮ সাল থেকে কেকেআর দলে খেলেন রিঙ্কু। কিন্তু বেশির ভাগ দিনেই দেখা যেত কোনও ক্রিকেটার চোট পেলে, তাঁর বদলে ফিল্ডিং করছেন তিনি। রিঙ্কু যে ভাল ফিল্ডার, সেটা বার বার দেখা গিয়েছে। বিশেষ করে উঁচুতে ওঠা বল ধরায় রিঙ্কুর ক্ষমতা নজর কাড়ে। এ বারের আইপিএলে দেখা গেল ব্যাটার রিঙ্কুকে। ৭ ম্যাচে করলেন ১৭৪ রান। লখনউয়ের বিরুদ্ধে শেষ ওভারে প্রায় জিতিয়েই দিয়েছিলেন দলকে। এভিন লুইস দুরন্ত ক্যাচ নিয়ে তাঁকে ফিরিয়ে না দিলে কলকাতার নায়ক হয়ে থাকতেন রিঙ্কুই।
দুই দল মিলিত ভাবে ৯ বার আইপিএল জিতেছে। কিন্তু এ বারের আইপিএলে মুম্বই হেরেছে ১০টি ম্যাচ এবং চেন্নাই হেরেছে ৯টি ম্যাচ। প্লে-অফের দৌড় থেকে অনেক আগেই ছিটকে গিয়েছিল দুই দল। রোহিত এবং ধোনির বিষণ্ণ মুখ বার বার দেখা গিয়েছে এ বারের আইপিএলে।
এক আইপিএলে চারটি শতরান। ২০১৬ সালে আইপিএলে চারটি শতরান ছিল বিরাট কোহলীর। এ বারের আইপিএলে একই কাজ করে দেখালেন জস বাটলার। গোটা আইপিএলে বোলারদের ত্রাস হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
আইপিএল জিতে নিল গুজরাত টাইটান্স। গ্রুপ লিগে শীর্ষে থাকা দল প্লে-অফে কোনও ম্যাচ না হেরে জিতে নিল এ বারের আইপিএল।